পূর্ণা, রাহুল, অদিতি
অভিনয়ের প্রস্তাব এসেছিল তাঁর কাছে। সেটা করতে গিয়েই পূর্ণা মালাভাথের পুরো গল্পটা জানতে পারেন রাহুল বসু। তখনই ঠিক করে নেন ছবিটা প্রযোজনা করবেন। তারপর শুরু হয় টাকা জোগাড় পর্ব। সেটা করতে গিয়েই ছবির গল্পের সঙ্গে আরও বেশি একাত্ম হয়ে যান রাহুল। অতএব, পরিচালনার হালও তিনি ধরলেন।
আগামী শুক্রবার মুক্তি পাবে ‘পূর্ণা’। ছবির ট্যাগলাইন, ‘মেয়েরা সব কিছু পারে’। বলিউ়ডে যেখানে পরপর মহিলাকেন্দ্রিক সিনেমা হচ্ছে সেখানে ‘পূর্ণা’র মতো ছবি বিশেষ অর্থবহ। রাহুলের মতে, বলিউড বানিয়ে-বানিয়ে যে সব গল্প লেখে তার চেয়ে পূর্ণার সত্যি গল্প অনেক বেশি মন ছুঁয়ে যাবে।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে তেলেঙ্গানার পাকালা গ্রামের পূর্ণা মালাভাথ এভেরেস্ট ছুঁয়েছিল! শুধু রেকর্ডের নিরিখে ঘটনাটা দেখলে ভুল হবে। আদিবাসী গ্রামের, স্বল্প শিক্ষিত মেয়ের পক্ষে এটা অঘটন! পূর্ণা যে জায়গা থেকে উঠে এসেছে সেখানে দিন গুজরান করাটাই এভারেস্টে চ়ড়ার মতো। ‘‘তেলেঙ্গানার ওই গ্রামেই আমরা শ্যুট করেছি। সেটা দেখলে বোঝা যাবে কতটা লড়াই করতে হয়েছে ওকে। মাত্র ১৩ বছরের একটা মেয়ে ওই ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে এভারেস্ট জয় করে ফেলল! পুরো জার্নিটাই তো ভীষণ ইন্সপিরেশনাল,’’ বলছিলেন রাহুল।
পরিচালক চান এই ইন্সপিরেশনটা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। ছবির একাধিক স্ক্রিনিং করেছেন তিনি। বললেন, ‘‘সকলে হল থেকে কাঁদতে-কাঁদতে বেরিয়েছে।’’
ছবিতে পূর্ণার চরিত্রে অদিতি ইনামদার অভিনয় করেছে। পূর্ণাকে দিয়েই তো অভিনয় করানো যেত? ‘‘দু’টো সমস্যা ছিল। পূর্ণা ১৩ বছর বয়সে এভারেস্ট জয় করে। এখন ও আর একটু বড় হয়ে গিয়েছে। প্রথম বার যে এভারেস্টে চড়ছে, তার মধ্যে একটা ইনোসেন্স থাকে। পূর্ণা এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। চরিত্রের জন্য আমার ইনোসেন্ট কাউকে প্রয়োজন ছিল,’’ বললেন রাহুল। ক্লাস টুয়েলভের পরীক্ষা দিয়েছেন পূর্ণা। তাঁর স্বপ্ন আইপিএস
অফিসার হওয়া।
ছবি তৈরিতে কোনও ফাঁক রাখেননি রাহুল। দার্জিলিংয়ে ডিসেম্বর মাসে শ্যুট করেছেন। এভারেস্টের দৃশ্যগুলোর জন্য সিকিমের পাহাড় বেছেছিলেন। বললেন, ‘‘ছবির ভিএফএক্সের খরচে কলকাতায় একটা ভাল ফ্ল্যাট হয়ে যাবে। পাহাড়ে শ্যুট করাটাই তো খরচসাপেক্ষ।’’
মোটে ৩৮ দিনে ছবির শ্যুটিং শেষ করেছেন। হাসতে-হাসতে পরিচালক বললেন, ‘‘আমার তো ওসিডি আছে। তাই পুরো মিলিটারি ইউনিট চালানোর মতো করে শ্যুট করেছি।’’
তেলেঙ্গানা, দিল্লি, কর্ণাটকে ছবির ট্যাক্স মকুব করা হয়েছে। রাহুলের আশা, পশ্চিমবঙ্গ সরকারও যদি সে রকম কিছু করে তা হলে ভাল হয়।