পদ্মাবতী এ বার রাজস্থানের বসুন্ধরার কোপে

এ ছবির বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর। সব চেয়ে আপত্তি উঠেছে রানি পদ্মাবতীর নাচের দৃশ্য ও আলাউদ্দিন খিলজির স্বপ্নে রানির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নিয়ে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জয়পুর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

ছবির একটি দৃশ্যে দীপিকা।

পাহাড়ের মাথায় মনোরম পরিবেশে ঘেরা কুম্ভলগড় দুর্গ। মহারাণা প্রতাপের জন্মস্থান। চিতোরগড়ের পরে এ বার ‘পদ্মাবতী’র বিক্ষোভের আঁচ পড়ল সেই কুম্ভলগড় দুর্গে। স্থানীয় রাজপুত সংগঠনের নেতৃত্বে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ এ দিন ওই দুর্গের প্রবেশদ্বার অবরোধ করেন। বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে চিঠি লিখেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজেও। তাঁর আবেদন, প্রয়োজনীয় পরিবর্তন না করে পদ্মাবতীকে যেন মুক্তি দেওয়া না হয়।

Advertisement

ও দিকে, রাজস্থানের গণ্ডি পেরিয়ে আজ জম্মু থেকে বেঙ্গালুরু, রাঁচী থেকে মুম্বই, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখায় করণী সেনা। সর্বত্রই দাবি— দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত ‘পদ্মাবতী’ ছবিটির মুক্তি অবিলম্বে আটকাতে হবে।

আরও পড়ুন: ‘পদ্মাবতী’ বিতর্কে এ বার অবরুদ্ধ চিতোরগড় দুর্গ!

Advertisement

এ ছবির বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর। সব চেয়ে আপত্তি উঠেছে রানি পদ্মাবতীর নাচের দৃশ্য ও আলাউদ্দিন খিলজির স্বপ্নে রানির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নিয়ে। যদিও ছবিতে দ্বিতীয় দৃশ্যটি নেই বলেই বারবার দাবি করেছেন পরিচালক সঞ্জয়লীলা ভংসালী। তাতে ক্ষোভ আটকায়নি। হয়তো সেই কারণেই তড়িঘড়ি বেশ কিছু টিভি চ্যানেলের জন্য ছবির বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল নির্মাতা-প্রযোজক সংস্থা। তাতে উল্টে ‘সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন’ (সিবিএফসি)-এর তোপের মুখে পড়েছে ছবিটি। সংস্থার প্রধান প্রসূন জোশীর বক্তব্য, যে ছবি এখনও সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পায়নি, তা কী করে এ ভাবে সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়! শুধু তা-ই নয়, অভিযোগ, ওই সব চ্যানেলে ফিল্মের রিভিউ-ও দেখানো হয়ে গিয়েছে। অথচ এক দিন আগেই বোর্ডের শংসাপত্র পাওয়ার জন্য পাঠানো আবেদনপত্রটি ‘যথাযথ ভাবে পূরণ করা হয়নি’ বলে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিল সিবিএফসি। ফিল্মটি ‘ঐতিহাসিক’ নাকি ‘কাল্পনিক’, কোন বিভাগে পড়ছে, সেটাই উল্লেখ করা হয়নি আবেদনপত্রে। অথচ ফিল্মের ‘ইতিহাস’ নিয়েই এত বিতর্ক।

ক্ষোভের আঁচ উস্কে দিয়েছেন ‘পদ্মাবতীও’। দীপিকা বলেছিলেন, ‘‘ছবি-মুক্তি কেউ আটকাতে পারবে না।’’ করণী সেনার সভাপতি লোকেন্দ্রসিংহ কালভি বলেন, ‘‘চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি। আর ঠিক সেই কারণে ১ ডিসেম্বর দেশজুড়ে বন্‌ধ ডেকেছি।’’ লোকেন্দ্র বলেন, ‘‘এ হল জহরব্রতের আগুন, অনেক কিছু পোড়াবে। আটকানোর হলে পদ্মিনীকে আটকান।’’ যদিও প্রশ্ন উঠেছে, এত হইচইয়ে আখেরে বিনামূল্যে ছবির প্রচার হয়ে যাচ্ছে না কি? লোকেন্দ্রর জবাব, ‘‘যদি পাঁচ কোটি টাকার প্রচার হয়ে থাকে, তা হলে ভংসালীদের পাঁচ গুণ ক্ষতি আমরা করে দেব।’’

শাবানা আজমি আজ টুইট করেন, ‘‘ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সহযোগিতা করে বলেই স্মৃতি ইরানি এত সহজে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করতে পারেন। অথচ অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজকদের যখন প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, সরকার মুখ বুজে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন