‘এক যে ছিল রাজা’র গল্প বললেন রাজনন্দিনী।
অথচ, ছেলেদের অনেক গার্লফ্রেন্ড থাকা যেন গর্বের বিষয়। ‘এক যে ছিল রাজা’র গল্প করতে বসে বললেন রাজনন্দিনী। বেরিয়ে এল আফশোস, ‘সৃজিত অভিনয় করার সময় আমায় বকল না কেন?’
‘এক যে ছিল রাজা’,জীবনের প্রথম ছবিতেই পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে জড়িয়ে আপনার সঙ্গে নানা কথা!
প্রথমে একটা কথা বলি, ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম শুটের দিন আমাকে অপর্ণা সেনের মুখোমুখি অভিনয় করতে হয়েছিল। আমার অবস্থাটা নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন। ‘উড়নচণ্ডী’পরে শুট হয়। যদিও রিলিজ হয় আগে। আর সৃজিতের সঙ্গে এই সম্পর্কের গল্পটা কিন্তু লোকমুখে ছড়াল! আর সৃজিতকে দেখুন, ও সেদিনও মজা করে বলল, এতদিন ওর সঙ্গে পঁচিশ থেকে পঁয়ত্রিশ বছরের মেয়েদের নিয়ে কথা বলা হত। এখন উনিশ...।ওর ভালই লাগছে।
প্রেম নেই তাহলে?
ধুর। এখন তো কারওর সঙ্গেই প্রেম নেই। আমি কিন্তু চাই। আমার সব কিছু নিয়ে থাকবে এমন কেউ থাকুক।
যিশু সেনগুপ্তর বউ হবেন শুনে আপনি নাকি আনন্দে বাড়ি মাথায় করেছিলেন?
করব না? জাস্ট ভাবুন একবার। যিশু সেনগুপ্ত ছাড়াও আরও একজন আছে এই ছবিতে, আমার ব্যাড লাক সে আমার দাদার চরিত্র করছে। আসলে আগেকার দিনের সময় নিয়ে ছবি তো, তাই আমার একটাই বর হল। নয়তো অনির্বাণ ভট্টাচার্যের সঙ্গেও কিছু হতে পারত! তাই না? বেশ দুটো বর হত!আপনার নিশ্চয়ই খুব অদ্ভুত লাগছে আমি এ ভাবে কথা বলছি! আমি রেখেঢেকে কথা বলতে পারি না।যা মনে আসে বলে দিই। এক্সাইটমেন্ট চেপে রাখব কেন?
আরও পড়ুন, ‘সচিনের এক অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল’, ফেসবুকে লিখেই ট্রোলড শ্রী রেড্ডি
বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে আপনি বলেছেন, সৃজিত আপনাকে অন্য সকলের মতো ফ্লোরে একদম বকেনি!
হ্যাঁ। বকেনি ভেবে খুব আনন্দে ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, এ বাবা! আমায় কেন বকল না? তার মানে কি আমায় গাইড করল না? উফফ! এটা নিয়ে এখন টেনশন হচ্ছে!
আগের বিজয়া সম্মিলনীতে আলাপ। আর এ বারের পুজোয় ছবি...
ঠিক তাই। বুম্বা আঙ্কেলের বিজয়া সম্মিলনীতে সৃজিতের সঙ্গে বুম্বা আঙ্কেল আমায় আলাপ করিয়ে দেয়। ফোন নাম্বার শেয়ার করি আমরা।ওই দিন থিম ছিল ইন্ডিয়ান। আর মা আমায় সেটা বলেনি। সবাই শাড়ি পরে সেজে আর আমি ছেঁড়া জিন্স, শর্ট টপ। ওই পোশাকেই সৃজিত আমায় চন্দ্রাবতী ভেবেছিল!একেই বলে পরিচালকের চোখ।
‘এক যে ছিল রাজা’র দৃশ্যে যিশু এবং রাজনন্দিনী।
সৃজিতকে কী বলে ডাকেন?
সৃজিত। আপনি। তুমি। তুই বললে ও মেরে ফেলবে আমায়।
পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, তার ওপর এসভিএফ-এর মতো প্রোডাকশন হাউজ আর প্রথম দিন সামনে অপর্ণা সেন!
আমার শুটের আগের দিন জ্বর এসে গিয়েছিল। সৃজিতকে বললাম, আমার জ্বর। ও তোয়াক্কাই করল না। পরের দিন সামনে অপর্ণা সেন। হা করে তাকিয়ে আছি। সৃজিত বলল, প্রণাম কর। আমি বোকার মতো বললাম, আগে একটু দেখে নিই। কোনও অ্যাক্টিং স্কুল থেকে আমি অভিনয় শিখিনি। কিন্তু ‘এক যে ছিল রাজা’-য় সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন আর অঞ্জন দত্তর সঙ্গে কাজ করে যা শিখেছি তা কোনও অভিনয়ের স্কুলের চেয়ে কম নয়। জানেন, একের পর এক শট দিতে দিতে অপর্ণা সেন আমায় বলছেন,‘আচ্ছা দেখ তো, এ ভাবে করলে ঠিক হচ্ছে নাকি অন্যভাবে করব? তোর কী মত?’জাস্ট ভাবুন! তখন মনে হচ্ছে সব ছেড়ে পালাই। মাটিতে মিশে যাই।
‘উড়নচণ্ডী’আর ‘এক যে ছিল রাজা’।এর পর?
জানি না। অভিষেকদাও ‘উড়নচণ্ডী’-তে অনেক বড় ব্রেক দিয়েছে। এরকম দুটো ছবি করে একটু ভেবেচিন্তে কাজ করতে হবে।তবে বছরে চারটে ছবি করতে হবে, সবাইকে বলতে হবে আমি অভিনয় করতে চাই— এ সব প্ল্যান নেই।
আরও পড়ুন, ‘কাঁটা লাগা’র সেই শেফালি এখন কী করছেন জানেন?
সদ্য ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছেন। কাস্টিং কাউচ, বডি শেমিং নিয়ে কী বলবেন?
দেখুন, বডি শেমিংকে একেবারেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। আমার শর্ট হাইটের জন্য কত লোকে আমায় কত কী বলেছে। আমি নিজেই আমার হাইট নিয়ে এত মজা করেছি, পরে দেখেছি সেটা নিয়ে আর কেউ কথা বলেনি। আমি তো সবাইকে বলব লভ ইয়র বডি।
আর কাস্টিং কাউচ? ‘এক যে ছিল রাজা’-য়...
থামুন থামুন, এটা শুনতে হলে আমায় আত্মহত্যা করতে হবে! এত বাজে কথা সহ্য হবে না।তবে কাস্টিং কাউচ নিয়ে কেউ যদি নিজের জায়গা করেন সেটা তাঁর বিষয়। আমার কিছু বলার থাকতে পারে না।
আগে তো সারাক্ষণ ইংরেজি ছবি দেখতেন। এখন?
আমি ও ভাবেই বড় হয়েছি। ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’,‘কল মি বাই নেম’ আমার খুব পছন্দের লম্বা লিস্ট। তবে ‘বাইশে শ্রাবণ’, ‘নির্বাক’, ‘সিনেমাওয়ালা’,‘খাদ’ খুব ভাল লেগেছে। আর অবশ্যই ‘বেলাশেষে’। আমার মা অভিনয় করেছে বলে নয়। এই ছবিটা বার বার দেখি।
(কোন সিনেমা বক্স অফিস মাত করল, কোন ছবি মুখ থুবড়ে পড়ল - বক্স অফিসের সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)