শুটিংয়ের অবসরে দিতিপ্রিয়া এবং নূর।
‘করুণাময়ী রানী রাসমণি’ ধারাবাহিকে শোকের ছায়া। গল্পে বাবু রাজচন্দ্র ‘নেই’ হয়ে যাচ্ছেন। প্রয়াণ হচ্ছে তাঁর। দর্শকেরা ইতিমধ্যেই সে খবর পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু মৃত্যুর পরেও নাকি দেখা যাবে রাজচন্দ্রকে!
রাসমণি-র প্রোগ্রামার অনুপ ভরসা দর্শকদের সেই সুখবরটা দিলেন, ‘‘রাজচন্দ্রর মৃত্যুর পরেও ধারাবাহিকে তাঁকে দেখা যাবে। কী ভাবে যাবে, সেটা এখনই বলছি না, বলা যাবে না। কিন্তু মৃত্যুতেই রাজচন্দ্র শেষ হয়ে যাচ্ছে না। তাই এখনই নূরের বিদায় হয়ে যাচ্ছে, তা বলা যাবে না (মুচকি হাসলেন তিনি)।’’
তবে, ধারাবাহিকে দেখা গেলেও শুটিং শেষ হচ্ছে নূরের। ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে রাজচন্দ্র’র প্রয়াণ-দৃশ্যের শুটে প্রত্যেকেরই মুখ ছিল তাই থমথমে। যেন গল্পে অভিনেতারা অভিনয় করছেন না, অভিনয় করতে হচ্ছে না, সত্যিই সবার মন খারাপ। ক্যামেরার পিছনেও আসন্ন বিচ্ছেদের বেদনা। এ ওকে জড়িয়ে কান্নাকাটি করছে। চলছে স্মৃতিচারণ।
অনেক, অনেক দিন, বছর দু’য়েক একসঙ্গে সংসার করেছেন ইউনিটের সদস্যদের সঙ্গে। রাত-দিন যাঁদের সঙ্গে কাটে নূরের তাঁরা তো তাঁরই সংসারের সদস্য। তিনি কী বলছেন? ‘‘সবার সঙ্গে রোজ দেখা হবে না ভাবতেই খারাপ লাগছে। দিতিপ্রিয়া, গৌরবদা, চন্দ্রনিভদা আমরা তো সব এক জায়গায় বসে হইচই করি। কোথাও গিয়ে একটা পরিবার হয়ে ওঠে তো...আমার ভাল লাগা, মন্দ লাগা এখন সবাই জানে...আমি কী খেতে পছন্দ করি, কী ধরনের ব্যবহার করি...সবার সঙ্গে একটা বন্ডিং তৈরি হয়ে গেছে। আমার সহকর্মী যাঁরা ক্যামেরার পিছনে কাজ করেন তাঁরাও আমাকে এসে এসে তাঁদের খারাপ লাগা জানাচ্ছেন, ফোনে যোগাযোগ রাখবেন বলছেন। সব মিলিয়ে একটা কষ্ট তৈরি হয়েছে সবার মধ্যে...আমারও।’’
এর পর কী প্ল্যান আপনার? তিনি বললেন, ‘‘কিছু দিনের বিরতি নেব। এ রকম একটা জনপ্রিয় চরিত্র করার পরে বিরতি নেওয়া দরকার। নতুন কোনও চরিত্র করলে দর্শক হয়তো গ্রহণ না-ও করতে পারেন। সে কারণেই...’’
আরও পড়ুন, ‘রাজচন্দ্র’ ডানে যেতে বললে ‘রাসমণি’ যান বাঁ দিকে!
দিতিপ্রিয়া খুব মন খারাপ করে বললেন, ‘‘খুবই খারাপ লাগছে...দু’বছর ধরে কাজ করছি একসঙ্গে...খারাপ লাগারই কথা। তা ছাড়া, আমরা সবসময় একে অন্যকে লেগপুল করি...ঝগড়া করি (বিষণ্ণ হেসে)...খুব মিস করব। কিন্তু অবশ্যই আমাদের যোগাযোগ থাকবে...দেখাও হবে নিশ্চয়...আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটা তো ছোট...দেখা হবেই।’’
গৌরব চট্টোপাধ্যায়, যিনি ধারাবাহিকে মথুর অর্থাৎ, রাসমণি-রাজচন্দ্র’র জামাই, তিনি অত্যন্ত বিষণ্ণ। তাঁর কথায়: ‘‘আমরা অভিনেতারা পরস্পরের মধ্যে একটা দূরত্ব রাখি... সেটা একেবারেই নূরের সঙ্গে আমার নেই। অন্যান্যদের সঙ্গেও খুব কাছের সম্পর্ক আমাদের দু’জনেরই। আমরা মন খুলে কথা বলি...খুবই খারাপ লাগছে। কিন্তু কিছু তো করার নেই...গল্প যে রকম সে ভাবেই অভিনেতাদের থাকা না-থাকা নির্ভর করবে।...তবে নিশ্চয়ই দেখা সাক্ষাৎ হবে...নূর যা অসাধারণ রান্না করে! ফাঁকা থাকলে আমাদের রান্না করে খাওয়ায়। এ বার তো ওর রান্না খাওয়ার আরও সুযোগ হবে মনে হচ্ছে...কিছুটা হলেও আগের থেকে ব্যস্ততা কমবে নূরের।’’
(টলিউডের প্রেম, টলিউডের বক্স অফিস, বাংলা সিরিয়ালের মা-বউমার তরজা -বিনোদনের সব খবর আমাদের বিনোদন বিভাগে।)