মার্কিন চোখে ভারতীয় গল্পে হাতি সমান ফাঁক

ছবিটি বানিয়েছেন পরিচালক চাক রাসেল। যিনি এর আগে ‘দ্য মাস্ক’, ‘দ্য স্করপিয়ন কিং’-এর মতো ছবি করেছেন হলিউডে।

Advertisement

অন্তরা মজুমদার

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০১:১০
Share:

হাতিদের নিয়ে ছবি তৈরি হলে কিছু দর্শক অন্তত কচিকাঁচাদের সঙ্গে নিয়ে টিকিটটা কেটে ফেলেন। ‘জংলি’ কি সে রকম ছবির শ্রেণিতে নাম লেখাতে পারবে? বোধহয় না। কেন? আলোচনা করে দেখে নেওয়া যাক।

Advertisement

ছবিটি বানিয়েছেন পরিচালক চাক রাসেল। যিনি এর আগে ‘দ্য মাস্ক’, ‘দ্য স্করপিয়ন কিং’-এর মতো ছবি করেছেন হলিউডে। ‘জংলি’র প্রেক্ষাপট অবশ্য ভারত। তাই ছবিতে আছে ‘এগজ়টিক’ পোশাক পরা মহিলা-মাহুত, হাতিদের সাহচর্যে থেকেও যার চুলের সাজ-মুখের মেকআপে নড়চড় নেই। রাস্তার কুকুরকে গুন্ডাদের অত্যাচার থেকে বাঁচাতে নায়ক সটান কালারিপায়াট্টু করে। লোকেশন দেখে স্পষ্ট তাইল্যান্ড বলে বোঝা গেলেও গল্পটাকে ওড়িশাতেই স্থানীকরণ করতে হয়! যদিও ভিস্যুয়াল হিসেবে ব্যাপারটা খারাপ নয়। তবু এক জন মার্কিন ফিল্মমেকার অনভ্যস্ত চোখে ভারতকে পর্দায় বুনতে গিয়ে ঠিক যে ভুলগুলো করতে পারেন, তার সবটাই রয়েছে ‘জংলি’তে।

ছবিটি মূলত দাঁতাল হাতিদের সংরক্ষণ নিয়ে। চোরাশিকারিদের লোভের শিকার হয়ে হাতিদের ক্রমশ কোণঠাসা হতে থাকা, তাদের সংখ্যা ক্রমাগত কমতে থাকা, ফরেস্ট রেঞ্জার অফিসারদের অসহায়তা— সব কিছুই ছবিতে দেখানো হয়েছে। কিন্তু খানিক খাপছাড়া ভাবে। গভীর রাতে প্রবল বৃষ্টিতে চোরাশিকারিরা হাতিদের মেরে, রক্তাক্ত করে, তাদের দাঁত উপড়ে ফেলে। এ রকম একটি দৃশ্য যে কোনও ছবিতেই পরিবেশটাকে থমথমে করে দিতে পারে। কিন্তু চিত্রনাট্য এমন ভাবেই লেখা যে, দৃশ্যগুলো কোনও প্রভাবই বিস্তার করে না দর্শকমনে! তবে হাতিদের সঙ্গে ছবির নায়ক রাজের (বিদ্যুৎ জামওয়াল) বেশ কিছু মিষ্টি সম্পর্কের মুহূর্ত রয়েছে ছবিতে, যেগুলো দেখতে মন্দ লাগে না।

Advertisement

জংলি পরিচালনা: চাক রাসেল অভিনয়: বিদ্যুৎ, অতুল, মকরন্দ, পূজা, আশা ৪/১০

এ সব ধরনের ছবি সাধারণ ভাবে ভালর সঙ্গে মন্দের লড়াই হয়ে দাঁড়ায়। এখানেও তাই। কিন্তু অ্যাকশন হিরো হিসেবে বিদ্যুৎ একাই সব ভিলেনদের সব দৃশ্যে ঘায়েল করে ফেলছেন, এই কষ্ট কল্পনা বড় একঘেয়েও। যদিও বিদ্যুৎ সব স্টান্ট একাই করেছেন এবং বিশ্বাসযোগ্য ভাবেই করেছেন। তবে অতুল কুলকার্নিকে ভিলেনদের মাথা হিসেবে যথেষ্ট ব্যবহার করেনি ছবিটি। আবার এই ভাল-মন্দের লড়াইয়ের ফাঁকে ফাঁকেই মহিলা-মাহুত শঙ্করা (পূজা সবন্ত) এবং সাংবাদিক মীরার (আশা ভট্ট) সঙ্গে নায়কের খুনসুটি, নায়কের কালারিপায়াট্টু গুরুর (মকরন্দ দেশপাণ্ডে) প্রবল মদ্যপান, ক্লাইম্যাক্সে দেবতা গণেশের হঠাৎ অবতারণা— ছবিটাকে অযথা দীর্ঘায়িত করেছে, এবং গল্পের টানটান ব্যাপারটাকেও নষ্ট করেছে।

মনে রাখতে হবে, হলগুলোয় হাতিদের নিয়ে আর একটা ছবিও চলছে। টিম বার্টনের ‘ডাম্বো’। এই ছবিকে যে সেই ছবি ভালই টক্কর দিতে পারবে, সেটা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন