review

Special OPS: কে কে-র হিম্মতেই উতরোয় সিরিজ়

সিরিজ়ের একেবারে শেষে কর্ণ ট্যাকারের ক্যামিয়ো রয়েছে। তাঁর ফারুক চরিত্রটি প্রথম সিজ়নের ইউএসপি ছিল।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৪১
Share:

Advertisement

িক আগের সিজ়নের মতোই আবহ। টেবিলের দু’দিকে দু’পক্ষ। এক দিকে অডিট টিমের ব্যানার্জি আর চড্ডা। অন্য দিকে আব্বাস শেখ। গত সিজ়নে উল্টো দিকে বসেছিল র অফিসার হিম্মত সিংহ (কে কে মেনন)। তার সঙ্গে চলতে থাকা সওয়াল-জবাবের মধ্য দিয়েই এগিয়েছিল ‘স্পেশ্যাল অপস’-এর কাহিনি। ‘স্পেশ্যাল অপস ওয়ান পয়েন্ট ফাইভ’-এর কথক আব্বাস (বিনয় পাঠক)। তার কাছ থেকেই অডিট-কর্তারা জানতে চায় ‘হিম্মতের, হিম্মত হয়ে ওঠার কাহিনি।’ কারণ তারা হিসেবনিকেশ করে এজেন্টের রিটায়ারমেন্ট প্যাকেজ স্থির করবে।

স্পেশ্যাল অপস ১.৫
(ওয়েব সিরিজ়)
পরিচালনা: নীরজ পাণ্ডে
অভিনয়: কে কে, বিনয়, আদিল, আফতাব
৬/১০

Advertisement

ডিজ়নি প্লাস হটস্টারের সিরিজ় ‘স্পেশ্যাল অপস ওয়ান পয়েন্ট ফাইভ’ নামটাই আগ্রহ তৈরি করে। কিন্তু সিরিজ় দেখতে গিয়ে নামের ব্যাখ্যা স্পষ্ট হয় না। একে প্রিকুয়েল বলে? না কি চার এপিসোডের মিনি সিজ়ন? খোলসা করেননি সিরিজ়ের ক্রিয়েটর নীরজ পাণ্ডে।

প্রথম সিজ়নের মতো গতিই এখানে কাহিনি ধরে রেখেছে। হিম্মতের ব্যাকস্টোরি আগ্রহ তৈরি করে। সেই কাহিনি বলতে বলতেই এসপিয়নাজ ড্রামার বিভিন্ন দিক— সেক্সপিয়নাজ, হানি ট্র্যাপ, স্প্যারো এজেন্ট... ছুঁয়ে গিয়েছেন নির্মাতারা। অডিট-কর্তাদের সামনে আব্বাস যে কাহিনিগুলো তুলে ধরে, তার অনেকটাই হিম্মতের ব্যক্তিগত পরিসরে ঘটা। সে সব তথ্য আব্বাসের জানার কথা নয়। তবে সিরিজ় উপভোগ করতে চাইলে, এমন ফাঁকফোকর টপকে যেতে হবে।

এ বারের কাহিনিতে হিম্মতকে চ্যালেঞ্জ জানায় আর এক র এজেন্ট মনজিৎ। বিপথগামী ক্ষুরধার এই এজেন্টের সঙ্গে হিম্মতের টক্কর উপভোগ্য। তবে শুরু থেকে সঙ্কলাপ চৌধুরী নামক যে চরিত্রটিকে নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করা হল, তার নিষ্পত্তির অংশটা একেবারে জোলো। সিরিজ়ের দৈর্ঘ্য পুরো তিন ঘণ্টারও নয়। তাই এখানে কাহিনিতে ঘটনার ঘনঘটা কম। সে দিক থেকে প্রথম সিজ়ন এগিয়ে থাকবে।

তবে কে কে মেনন এমন একজন অভিনেতা, যিনি অনেক সমীকরণ উল্টে দিতে পারেন। তিনি একাই গোটা সিরিজ় ধরে রেখেছেন। তার সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করেছে নীরজের মুচমুচে চিত্রনাট্য। কাহিনির গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে লন্ডন থেকে ইউক্রেন ছুটে বেড়ায় ক্যামেরা। আগের সিরিজ়ে হিম্মতের অঙ্গুলিহেলনে তার এজেন্টরা দেশে-বিদেশে কাজ হাসিল করত। এখানে হিম্মতকেই স্পটে যেতে হয়। এজেন্টের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও একটা টুইস্ট রয়েছে।

কিন্তু একটা বিষয় সব প্রয়াসকে খানিক খাটো করে দিয়েছে। কে কে-র কমবয়সি লুক। পরচুলো আর সিজিআই দিয়ে জোর করে বয়স কমানোর চেষ্টা ভীষণ চোখে লেগেছে। একজন অভিনেতার স্বাভাবিক অভিব্যক্তি নষ্ট হয়ে যায়, যদি তাঁর মুখে এত কারিকুরি করা হয়। কিন্তু ওই যে তিনি কে কে মেনন, যিনি অনেক হিসেবনিকেশ উল্টে দিতে পারেন। সিরিজ়ের খামতিগুলোর দায় নীরজ পাণ্ডে এবং সহ-পরিচালক শিবম নায়ারের উপরে বর্তায়।

এই সিরিজ়ে আরও কয়েক জন আলাদা করে নজর কেড়ে নিয়েছেন। বিনয় পাঠক অনবদ্য। তাঁর কাহিনি বলার গুণেই সিরিজ়টি চিত্তাকর্ষক হয়ে ওঠে। মনজিতের চরিত্রে আদিল খানও ভাল। অডিট অফিসারের ভূমিকায় কালীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-পরমিত শেঠি সিরিজ়ে হালকা মেজাজ নিয়ে আসেন। অনেক দিন পরে আফতাব শিবদাসানিকে পর্দায় দেখে ভাল লাগে।

সিরিজ়ের একেবারে শেষে কর্ণ ট্যাকারের ক্যামিয়ো রয়েছে। তাঁর ফারুক চরিত্রটি প্রথম সিজ়নের ইউএসপি ছিল। ফারুক-হিম্মতের কথোপকথনেই আগামী সিজ়নের পূর্বাভাস রয়েছে। এখন সেটারই অপেক্ষা।

ভারতীয় কনটেন্টে এই জ়ঁরে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ এখনও পর্যন্ত সেরা। সেই সিরিজ়কে টপকাতে হলে ‘স্পেশ্যাল অপস’-এর নির্মাতাদের আরও কাঠখড় পোড়াতে হবে বইকি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন