সঞ্জুবাবার সঙ্গে আগরায়

জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রথমবার সিনেমায় স়ঞ্জয় দত্ত। সে ছবিতে অভিনয় করছেন ঋদ্ধি সেন। বললেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা প্রথম যে দিন উমঙ্গকুমারের সঙ্গে ফেসটাইমে কথা হয়, একদম টের পাইনি এমন একটা ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছি। স়ঞ্জয় দত্তর কামব্যাক ছবিতে অভিনয় করব আমি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০০:২৭
Share:

‘ভূমি’ ছবির সেটে উমঙ্গকুমারের সঙ্গে সঞ্জয় দত্ত।

প্রথম যে দিন উমঙ্গকুমারের সঙ্গে ফেসটাইমে কথা হয়, একদম টের পাইনি এমন একটা ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছি। স়ঞ্জয় দত্তর কামব্যাক ছবিতে অভিনয় করব আমি। ‘ভূমি’ পুরোপুরি হার্ডকোর কমার্শিয়াল এক রিভে়ঞ্জ ড্রামা। ছবিতে সঞ্জুবাবা আগরায় এক জুতোর দোকানের মালিক। অদিতি রাও হায়দরি ওঁর মেয়ে। আমি ওঁদের পাশের বাড়ির ছেলে। নাম জিতু। সঞ্জয় আর অদিতি জিতুকে বাড়ির ছেলের মতোই দেখেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত শ্যুটিংয়ের পুরোটাই আগরায়। মাঝে শুধু তিন দিনের ব্রেক। তারপর আবার শ্যুট হবে মুম্বইয়ে, ইনডোর সেটে।

Advertisement

ছোটবেলা থেকে সিনেমা-থিয়েটারের পরিবেশে বড় হয়েছি। স্টারদের আনাগোনা দেখেছি বাড়িতে। তাই প্রথমে ঘাবড়ে যায়নি। সেটে পৌঁছে বুঝলাম ‘স্টারডম’ কাকে বলে! রাত দু’টো পর্যন্ত শ্যুটিং চললেও গোটা আগরা হাজির হবে সেটে, যদি সঞ্জুবাবার সেদিন দৃশ্য থাকে। এমনই জনপ্রিয়তা ওঁর। কিন্তু কথা বললে বোঝার উপায় নেই। ভ্যানিটি ভ্যান থেকে নামার সময় সকলের সঙ্গে কথা বলবেন। স্পটবয়
থেকে প্রযোজক পর্যন্ত, সবাই ওঁর কাছে এক।

একদিন আমার সঙ্গেও তেমনটাই করলেন। প্রথম দিকের একটা সিন। আমি, সঞ্জয় দত্ত আর অদিতি রয়েছি। লম্বা টেক। সঞ্জুবাবা নিজের শট দেওয়ার পর ক্যামেরা এক্সিট করে বেরিয়ে যাবেন। আমার আর অদিতির তার পরেও কিছুটা দৃশ্য আছে। অভিনয়ের সময় তো অত খেয়াল থাকে না। ‘কাট’ হওয়ার পর দেখলাম হঠাৎ একজন জড়িয়ে ধরলেন। তিনি আর কেউ নন সঞ্জয় দত্ত। বললেন, ‘‘বড়িয়া শট দিয়া তুনে।’’ আমি তো অবাক! বুঝতেই পারছি না, কী বলব। এখানেই শেষ নয়। কিছু পরে আর একটা শট। সেই শট ‘কাট’ হওয়ার পর দেখলাম ক্যামেরার পিছন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছেন সঞ্জুবাবা। ভ্যানিটি ভ্যানে না গিয়ে বসে-বসে আমাদের অভিনয় দেখছিলেন। এই না হলে মুন্নাভাই! আমি আর থাকতে না পেরে সঙ্গে-সঙ্গে ফোন করে বাবা-মাকে জানালাম ঘটনাটা।

Advertisement

ঋদ্ধি

সেট জমিয়ে রাখতেও ওঁর জুড়ি মেলা ভার। সব সময় অভিনেতাদের উৎসাহ দেন। মজার-মজার কথা বলেন। তবে রাজকীয় ব্যাপারও আছে ওঁর মধ্যে। এমনিতে পরিচালক উমঙ্গকুমার ভীষণ কড়া। সেটে কেউ সিগারেট খেতে পারবে না। মদ তো ছেড়েই দিন। সঞ্জুবাবা সে সবে পাত্তা দেন না। অবশ্য কবেই বা রুলবুক ফলো করেছেন উনি! উমঙ্গও কিছু বলতে পারতেন না ওঁর উপর।

আর একটা ঘটনায় বুঝেছিলাম, সঞ্জয় দত্তর ক্ষমতা। মিডিয়ায় ‘ভূমি’ ছবির সেটে ঝামেলা নিয়ে অনেক লেখালিখি হয়েছে। আমি কিন্তু সে দিন সেটে উপস্থিত ছিলাম। রাত একটা-দেড়টা হবে। আগরার হাড়কাঁপানো ঠান্ডা। সাত-আট ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের থেকে বেশি না। প্রতিদিনের মতো সেটের বাইরে হামলে পড়েছে স্থানীয় লোকজন। সঙ্গে যোগ দিয়েছে স্থানীয় মিডিয়া। ওরা হয়তো ভেবেছিল সঞ্জয় দত্তর সাক্ষাৎকার পাওয়া যাবে। এ দিকে সে দিনের মতো কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় হোটেলে ফিরে গিয়েছেন উনি। স্থানীয় সাংবাদিকরা সেটা জানতেন না। সেই ক্ষোভ থেকেই হাতাহাতি হয় বাউন্সারদের সঙ্গে। পুলিশের গাড়িতে হোটেলে নিয়ে আসা হয় আমাদের।

পরের দিন সঞ্জুবাবার কাছ থেকে শিখলাম, ম্যান ম্যানেজমেন্ট কাকে বলে। সবার কাছে গিয়ে কথা বললেন। সবাইকে বোঝালেন। ব্যস, সবার রাগ গলে জল। ‘জাদু কী ঝপ্পি’ আসলে শুধু মুন্নাভাই নয়, সঞ্জুবাবারও হাতিয়ার।

অনুলিখন: অরিজিৎ চক্রবর্তী

ছবি সৌজন্য: লেজেন্ড স্টুডিয়োস

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন