Rupam Islam-debesh chattopadhyay

নাটকের গানে রূপম ইসলামের সুর! দেবেশের ‘খোক্কস’-এ কেমন বাজনা ব্যবহার করছেন গায়ক?

দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের ‘খোক্কস’ নাটকে থাকছে ছ’-সাতটি গান। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি গানের সুর ভেবে ফেলেছেন রূপম ইসলাম। বাড়ি থেকেই সুর করে পাঠাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৩ ১৩:৩২
Share:

পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধে ‘খোক্কস’ নাটকে সঙ্গীত করতে চলেছেন রূপম। — ফাইল চিত্র।

তিনি বাংলার রকপ্রেমীদের কাছে প্রথম ও শেষ কথা। তিনি রূপম ইসলাম। অনুষ্ঠান মঞ্চে রকসঙ্গীত নিয়ে যেমন দাপিয়ে বেড়ান, গেয়েছেন ‘মা’-এর মতো রাগাশ্রয়ী কোমল গানও। তবে নাটকের মঞ্চেও যে তিনি অধীশ্বর, তা ক’জন জানেন! নাটকের গানে রূপমের সুর খুব বেশি শোনার সুযোগ হয়নি দর্শকের। পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধে ‘খোক্কস’ নাটকে বহু দিন পর সঙ্গীত করতে চলেছেন রূপম।

Advertisement

মহড়া শুরু হয়নি এখনও, তবে গান প্রায় প্রস্তুত। কেমন হচ্ছে নাটকের গান? তাতে কি থাকবে রকের স্বাদ? আনন্দবাজার অনলাইনকে রূপম বললেন, “গানের কথা আমাকে যে দিকে নিয়ে যাচ্ছে, আমি সে দিকেই যাচ্ছি। রক মিউজিক আসতেই পারে, কিন্তু শুধু তাতেই আমি সীমাবদ্ধ থাকব না। দেশজ সুর আমার প্রধান অবলম্বন হবে।” আরও একটু ব্যাখ্যা দিয়ে রূপম জানান, দেশ মানে তাঁর কাছে বিশেষ কিছু শব্দ, বোধ, যা অনেক বেশি শিকড়ের কাছাকাছি। যেমন, গানের কথায় যদি থাকে “ওই রাজা আসছে!” তা হলে যে ধরনের উচ্চগ্রামের সুর বা বাজনা শুনতে দেশের মানুষ অভ্যস্ত, তেমনটাই থাকবে।

আগামী ১৮ এপ্রিল রবীন্দ্রসদনে ‘মুখোমুখি’র নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ হবে ‘খোক্কস’। ছবি: সংগৃহীত।

‘খোক্কস’ নাটকের গান লিখেছেন অভিনেতা তথা সাংবাদিক অনির্বাণ ভট্টাচার্য। থাকছে ছ’-সাতটি গান। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি গানের সুর ভেবে ফেলেছেন রূপম। বাড়ি থেকেই সুর করে পাঠাবেন আপাতত। তার পর যাবেন মহড়ায়। সবাই ঠিক মতো গাইছেন কি না, শুনে নেবেন। এই প্রথম নাটকের গানে সুর দিচ্ছেন, এমনটা কিন্তু নয়। রূপম জানালেন, এ নিয়ে পাঁচ নম্বর নাটকের গানে সুর দিতে চলেছেন তিনি। খুব ছোট থেকেই তাঁর থিয়েটারের সঙ্গে যোগাযোগ। মা ছন্দিতা ইসলামের নাটকের দল ছিল। তিনি পরিচালনার পাশাপাশি গান লিখতেন। আর বাবা নুরুল ইসলাম ছিলেন সুরকার। সব সময়ে ছন্দিতার লেখা গানে তিনিই সুর দিতেন। তবে নাটকের দল হওয়ার পর নাটকের গানে সুর দেওয়ার সুযোগ আদায় করে ছাড়লেন স্কুলপড়ুয়া রূপম। রকতারকার কথায়, “আমার প্রথম কম্পোজিশন নাটকের মঞ্চেই। প্রথম সুর দিই আমার মায়ের লেখা গানে, এবং সেটা নাটকের জন্যেই। মায়ের নাটকের দল ‘ইয়ং থিয়েটার’-এর দু’টি নাটকে সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলাম আমি। বাবার মতো শিল্পী থাকতে অল্প বয়সে আমার সেই সুযোগ পাওয়া খুব সহজ ছিল না।”

Advertisement

তার পর আর একটু বড় হয়েছেন। দশম শ্রেণিতে পড়তে স্কুলের একটি নাটকে সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন রূপম, কিন্তু শোয়ের ঠিক আগে তাঁকে বাতিল করা হয় সেই প্রযোজনা থেকে। মুষড়ে পড়েছিলেন কিশোর রূপম, তবে ভালবাসা হারাননি।

এ সব তো কিশোর বয়সের অপেশাদার উদ্যোগ। ‘রকস্টার’ হয়ে ওঠার পরে আর কোনও নাটকে সঙ্গীত করেছেন কি আগে? একটি নয়, দু’টি! তবে একই দলের। রূপম জানান, ‘অশোকনগর নাট্যমুখ’ দলের জন্য প্রথম পেশাদারি উদ্যোগে সুর করেছেন তিনি। রবিশঙ্কর বলের লেখা ‘নেমেসিস’ গল্পের নাট্যরূপ ছিল সেটি। এর পরে তিনি ব্রাত্য বসুর লেখা নাটক ‘মৃত্যু, ইশ্বর, যৌনতা’য় সুর দেন। ব্রাত্য ছিলেন সে নাটকের তত্ত্বাবধানে। দু’টি প্রযোজনাই অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল।

বর্তমানে দেবেশের নাটকের গানে সুর দেওয়ার আমন্ত্রণও সাদরে গ্রহণ করেছেন রূপম। ‘খোক্কস’ নাটকে উঠে আসবে একটি ‘ফ্যান্টাসি ল্যান্ড’, যা দেশ কাল সময়ের ঊর্ধ্বে। রূপম এ ক্ষেত্রে দেশের চিরকালীন গল্প-উপকথার সুরকেই আশ্রয় করতে চাইছেন।

বাদ্যযন্ত্রের ক্ষেত্রে রূপমের বিশেষ কোনও ভাবনা আছে কি? তিনি বললেন, “মঞ্চে গিটার এবং কাহন ব্যবহার করা হবে বলে শুনেছি। আমি চাই ডুবকি এবং ঢোলের ব্যবহারও হোক, ইন্টারল্যুড ব্যবহারের সুযোগ থাকলে বাঁশি আর বেহালাও থাকুক।”

রূপম জানান, মহড়ায় গেলে আরও স্পষ্ট হবে ধারণা। আগামী ১৮ এপ্রিল রবীন্দ্রসদনে ‘মুখোমুখি’র নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ হবে ‘খোক্কস’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement