Gargee Roychowdhury

Mahananda: হিন্দি-ইংরেজি মেশানো বাংলা শুনে মহাশ্বেতা দেবী খুব হাসতেন, শেখারও চেষ্টা ছিল: গার্গী

‘মহানন্দা’ রূপে মহাশ্বেতা দেবীকে ধারণ করেছেন গার্গী রায়চৌধুরী। মাতৃভাষা দিবসে মুক্তি পেয়েছে ছবির দ্বিতীয় ঝলক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:৫২
Share:

মহাশ্বেতা দেবীর গল্প বললেন গার্গী।

নামে তিনি দেবী সরস্বতী। বাস্তবেও। বাংলা ভাষায় ভীষণ দখল। সারা ক্ষণ লিখছেন, পড়ছেন। শেখাচ্ছেনও। প্রথম বই প্রকাশের পরে বুক ভরে তার গন্ধ নিচ্ছেন। হাত থেকে খবরের কাগজ টেনে নিলে দুই চোখে টলোমলো জল! কঠিন সময়েও আশ্রয় খুঁজেছেন সাহিত্যে। ইনিই মহাশ্বেতা দেবী। বাংলা ভাষা যাঁর লেখনির কাছে ঋণী। ‘রুদালি’, ‘হাজার চুরাশির মা’, ‘মার্ডারারের মা’ সহ অংসখ্য গল্প-উপন্যাস তাঁর কলম থেকেই জন্ম নিয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তিনি ফিরলেন নব কলেবরে। ‘মহানন্দা’ হয়ে। তাঁকে নতুন ভাবে চিনিয়েছেন পরিচালক অরিন্দম শীল। ‘মহানন্দা’ রূপে মহাশ্বেতা দেবীকে ধারণ করেছেন গার্গী রায়চৌধুরী। মাতৃভাষা দিবসে মুক্তি পেয়েছে ছবির দ্বিতীয় ঝলক।

Advertisement

গার্গীও পড়তে ভালবাসেন। লেখালিখি করেন। সেই বৈশিষ্ট্য কি ‘মহানন্দা’ হয়ে উঠতে বেশি সাহায্য করেছে? ‘‘পুরোটা না হলেও কিছুটা তো বটেই’’, আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘অবসরে ঠোঙা পেলেও পড়ি। মহাশ্বেতা দেবীর লেখাও পড়েছি। সেটা পড়ে তাঁর সম্বন্ধে সম্যক ধারণা তৈরি হয়েছিল। তবে বেশি সাহায্য করেছে ওঁর সাক্ষাৎকার। কারণ, প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে একটি মানুষের হালকা অবয়ব বেরিয়ে আসে। আমি তাই সাক্ষাৎকার পড়তে ভালবাসি।’’ বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের মাধ্যমেই তাই অভিনেত্রী চেনার চেষ্টা করেছেন তাঁর অভিনীত চরিত্রকে। এতে নাকি বেশি সুবিধা হয়েছে তাঁর।

যেকোনও মাতৃভাষা সেই ভাষার কাছে মায়ের সমান। মহাশ্বেতা দেবীর মধ্যে সেই মাতৃত্ব কতটা প্রবল? শোনা যায়, একমাত্র ছেলে নবারুণ ভট্টাচার্যের জীবনে তাঁর উপস্থিতি নাকি ভীষণই কম? গার্গীর সাফ জবাব, ‘‘কেন সাহিত্যিক ছেলেকে ছেড়ে এসেছিলেন? না তাঁকে বাধ্য করা হয়েছিল? এ সব কেউ সঠিক ভাবে জানেন না। নতুন করে এই ক্ষতকে খুঁচিয়েও লাভ নেই। তবে ওঁর মধ্যে মাতৃসত্তা প্রবল ছিল। সেটা চরিত্রাভিনেতা হতে হতে উপলব্ধি করেছি।’’ অভিনেত্রীর যুক্তি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশ্বেতা দেবীর অন্তরজুড়ে। কবি কোনও দিন তেমন ভাবে কাউকে আদর্শ বানাতে পারেননি। লেখিকাও তাইই। তার পরেও তিনি ‘রুদালি’র মতো বিষয় ভাবতে পেরেছেন মাতৃসত্তার জোরেই। রাজস্থানের প্রত্যন্ত ভাড়া খাটা কাঁদানিয়াদের জীবন্ত করেছেন অন্তরে জমে থাকা মমতা দিয়ে। ভাষাতেও তার ছাপ। প্রত্যেকটি লেখায় সহজ, সরল, বলিষ্ঠ বাংলা ভাষার প্রয়োগ। যা বুঝতে এই প্রজন্মেরও অসুবিধে হয় না।

Advertisement

আজকের বাংলায় হিন্দি, ইংরেজির দাপট। একটি কথায় ৫টি শব্দ থাকলে তার তিনটিই হয়তো হিন্দি-ইংরেজি। এমন পাঁচমেশালি ভাষা শুনলে মহাশ্বেতা দেবী কী বলতেন? হেসে ফেলেছেন গার্গী। বলেছেন, ‘‘প্রথমে হা হা করে হেসে উঠতেন। তারপরেই বলতেন, ‘‘আমিও একটু শেখার চেষ্টা করি!’’ বাহ্যিক ভাবে যতই কঠিন মনে হোক, অন্তরে কিন্তু ভীষণ বর্ণময়। সব কিছুর প্রতি তাই অদম্য কৌতূহল।’’ বাংলার গর্বকে ঘিরে এটাই পর্দার ‘মহানন্দা’র উপলব্ধি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement