‘‘...চল অ্যায়সা রং জমা দে হম
কে বনে সভি মতওয়ালে...’’
পার্টি মেজাজের এই গানের তালে পা মেলাচ্ছেন বহু তারকা। চোখ স্থির তবু প্রিয়ঙ্কা চোপড়ায়। ছোট্ট কালো ককটেল ড্রেসে চোখ ধাঁধানো গ্ল্যামার।
আলোচনার বিষয় বলিউডের সাম্প্রতিক হিট ‘দিল ধড়কনে দো’ ছবিটি নয়। নায়িকা প্রিয়ঙ্কা চোপড়াও নন। এ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ওই ছোট্ট কালো পোশাকটি। দুনিয়া জুড়ে যার পরিচয় লিট্ল ব্ল্যাক ড্রেস নামে। আদরের ডাকনাম ‘এলবিডি’।
শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা যে কোনও সময়ে পার্টির প্রাণ বলে চিহ্নিত। লাস্যময়ীর সবচেয়ে কাছের বন্ধু। পা যদি হয় সেক্সি, তবে তো কথাই নেই। পদযুগলের দিকে নজর টানার সবচেয়ে রোমাঞ্চকর সঙ্গী।
‘আজ কী পরব?’ বা ‘ওই পার্টিতে কী মানায়?’— যে কোনও প্রশ্নের চিরন্তন উত্তর এই পোশাক। বিখ্যাত ফরাসি ফ্যাশন ডিজাইনার কোকো শ্যানেলের হাত ধরে ১৯২৬ সালে বিখ্যাত হয়ে ওঠা এই ফ্যাশন স্টেটমেন্ট ফিরে তাকায়নি কখনও। বয়স সেঞ্চুরি-র খুবই কাছাকাছি, এখনও নট আউট। চাকচিক্যের দিক থেকে এক্কেবারে সাধারণ। লাবণ্য, লাস্য ফুটিয়ে তুলতে কিন্তু সবার আগে। এলবিডি-র এটাই মহিমা। সেই গুণেই যুগ যুগ ধরে মন কেড়ে আসছে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সুন্দরীদের। মেরিলিন মনরো থেকে অড্রে হেপবার্ন হয়ে নানা ধাপ পেরিয়ে এ সময়ের বলিউড— সব ক্ষেত্রেই একই কদর। জন্মলগ্ন থেকেই স্টাইলের শেষ কথা এই এলবিডি।
সাইজ, স্টাইল, সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে হিট এই পোশাক। যে কোনও মানুষের কাছেই সহজলভ্য। যে কোনও দামে, যে কোনও সাইজে পাওয়া যায় এই ড্রেস। ট্রেন্ডের পিছু নিতে ব্যস্ত এ সময়েও এলবিডি-র ধারণাটা বদলায়নি। সব সময়েই এই ছোট্ট কালো সুন্দরী স্বভাবের দিক থেকে এক্কেবারে ছিমছাম। তাই এখনও এই এলবিডি-ই ফ্যাশন দুনিয়ায় সব চেয়ে ‘চিক’।
লাল ঠোঁটে কালো সাজ
চেহারায় ছিমছাম হওয়ায় এলবিডি-কে সাজিয়ে তোলা যায় নিজের মনের মতো। ডিজাইনারেরা বলে থাকেন, নিজের শখের অ্যাক্সেসরিজ দেখিয়ে বেড়াতে চাইলে এক কথায় বেছে নেওয়া উচিত এই ছোট্ট কালো পোশাক। সঙ্গে হলুদ বুট হোক বা স্টিলেটোস, চলতে পারে যে কোনও ধরনের জুতো। হাঁটু ছাড়িয়ে নেমে যাওয়া স্লিং ব্যাগ অথবা প্রচণ্ড জমকালো ক্লাচ পার্স — মানানসই সবই। ভিক্টোরিয়ান ড্যাঙ্গলার্স থেকে ছোট্ট স্টাড, সবই সুন্দর এই ড্রেসের সঙ্গে।
ভিনটেজ লুক আনতে গেলে এলবিডি-র সঙ্গে সবচেয়ে সহজ সমীকরণ টকটকে লাল ঠোঁটের। হাল্কা টাচেই বাজিমাত। সাজ আরও গ্ল্যামারাস করতে লিট্ল ব্ল্যাক ড্রেসের আনুষঙ্গিক হতে পারে ক্রিসটাল বা হিরের গয়না। টিপস্ ডিজাইনার অভিষেক দত্তের।
ব্ল্যাক ম্যাজিক
• ‘ব্রেকফাস্ট অ্যাট টিফানিস’ ছবিতে অড্রে হেপবার্নকে দেখেই জনপ্রিয় হয়েছিল এলবিডি-র সঙ্গে মুক্তোর সাজ।
• লিট্ল ব্ল্যাক ড্রেসের লাস্য নিয়ে নানা দেশে তৈরি হয়েছে জনপ্রিয় গান।
• শোনা যায়, তাঁর মাপে এলবিডি ককটেল ড্রেস না পাওয়া যাওয়ায়
লন্ডনের কনভেন্ট গার্ডেন থিয়েটার থেকে চাকরি গিয়েছিল এক ক্লাসিক্যাল গায়িকার।
পোশাক কেমন
হাঁটুর থেকে কিছুটা উপরে। এমনই ঝুলটা হওয়ার কথা। তবে যুগে যুগে বদল এসেছে এলবিডি-র হেমলাইনে। পরিবেশের প্রেক্ষিতে বদলেছে ফ্যাশন। তবে বাঙালি চেহারা এবং অ্যাটিটিউডের সঙ্গে হাঁটুর অল্প নীচ পর্যন্ত ঝুলটাই সবচেয়ে মানানসই বলে মনে করেন ডিজাইনার অভিষেক দত্ত। এখনও প্রতি মরসুমেই ছোটখাটো পরিবর্তন আসে লিট্ল ব্ল্যাক ড্রেসের হেমলাইন, স্ট্র্যাপ, কাপড়ের ধরন, কারুকাজে। সবচেয়ে ছিমছাম হাঁটু-ঝুল এলবিডি-ই ফ্যাশন দুনিয়ায় চিরন্তন।