Silajit Majumder

Silajit Majumder: হরনাথদা আমাকে নায়ক করবেন বলেছিলেন, কিন্তু বুম্বাদা বেশি মিষ্টি দেখতে হয়ে গেল: শিলাজিৎ

ছেলের একার রোজগারে সংসার চলছে, তাও কাজের জন্য হাত পাতব না, বললেন শিলাজিৎ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২১ ১৩:৩৩
Share:

হরনাথ চক্রবর্তী, শিলাজিৎ মজুমদার এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়

শিলাজিৎ-পুত্র ধী-র জীবন নিয়ে কম চর্চা হয়নি। ধী-র হেফাজত-বাসের দিনগুলিতে খবরের শিরোনামে ছিল শিলাজিতের পরিবার। আজ সেই তরুণ চাকরি করে তাঁর বাবা-মাকে খাওয়াচ্ছেন। সুরকার ও গীতিকার শিলাজিৎ মজুমদার তাঁর বর্তমান পরিস্থিতির কথা এবং টলিউডের প্রতি ক্ষোভ-অভিমান প্রকাশ করলেন আনন্দবাজার অনলাইনে।

Advertisement

‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের আগামী ছবি শিরোনাম এবং ২০০০ সালে মুক্তি পাওয়া শিলাজিতের গানের অ্যালবামের নাম মিলে যাওয়ায় এর আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘তার জন্য আমার কোনও কৃতিত্ব চাই না। কিন্তু সৃজিত ছবির নাম পাশ করানোর আগে এক বার আমার সঙ্গে কথা বলে নিতে পারতেন।’’

গীতিকার, সুরকার, অভিনেতা শিলাজিৎ

কিন্তু তাঁর অভিমান, শুধু সৃজিতের উপর নয়। তাঁর কথায়, ‘‘বিখ্যাতদের থেকে দূরেই থাকি আমি।’’ এই অভিমানের পিছনে দীর্ঘ ইতিহাসের কিছু ঝলক জানল আনন্দবাজার অনলাইন। তাঁর আফসোস, টলিউডে তাঁর পুরনো বন্ধুবান্ধবের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। অধুনা বিখ্যাত মানুষদের তিনি সাহায্য করেছেন এক সময়। শিলাজিৎ বললেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের ইন্ডাস্ট্রিতে কমপক্ষে ৩০-৪০ জন ছেলেমেয়ে আছে, যাঁরা আমার দ্বারা কোনও না কোনও ভাবে উপকৃত।’’

Advertisement

পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘সঙ্গী’ ছবিতে শিলাজিতকে দিয়ে অভিনয় করিয়েছিলেন। শিলাজিতের অভিমান, ‘‘যখন দরকার পড়েছিল, ডেকেছিলেন। ছবিটা হিট হওয়া সত্ত্বেও তার পর থেকে মূল ধারার ছবিতে কোনও সুযোগ পাইনি। হরনাথ চক্রবর্তীরও আমাকে আর মনে পড়েনি। তখন বলেছিলেন, ‘শিলাজিৎ তোকে আমি পরের ছবিতে মুখ্য নায়ক করব। তুই আমার এই ছবিটা করে দে।’ কিন্তু ছবি শেষ। কাজ মিটেছে। ও সব মুখ্য নায়কের গল্পও শেষ। আর তার পর তো বুম্বাদা (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) বেশি মিষ্টি দেখতে হয়ে গেল।’’

ছেলের সঙ্গে সুরকার

এ ছাড়া আর এক প্রথম সারির পরিচালকের কথা জানালেন গীতিকার। নাম উল্লেখ না করে তিনি বললেন, ‘‘আমার গানের খুব ভক্ত ছিল। অন্তত সে আমায় সে রকমই জানিয়েছিল। আমার পিছন পিছন ঘুরত। আমার কোনও অনুষ্ঠান বাদ দিত না। খুব ভাল ছড়া লিখত সে। আর প্লাস্টিকের ব্যবসা করত। এখন সে বড় পরিচালক। কিন্তু আমার গানের ভক্ত হয়েও তার ছবিতে আমার গান ব্যবহার করে না। ১৫টা ছবি করে ফেলল সে। আমাকে সুর দেওয়ার জন্য ডাকল না।’’ শিলাজিৎ জানালেন, সেই পরিচালককে ব্যবসা ছেড়ে চলচ্চিত্র জগতে আসার পরামর্শও তিনিই দিয়েছিলেন। বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে আলাপও করিয়ে দিয়েছিলেন।

সৃজিতের প্রতি তাঁর অভিমান প্রকাশ করার সময়ে তিনি জানিয়েছিলেন, যেই সংস্থা ‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’ প্রযোজনা করেছিল, তাদের কাছ থেকে প্রাপ্য টাকা পাননি শিলাজিৎ। শিলাজিতের কথায়, ‘‘ওরা আমার গান ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করছে। কিন্তু আমার বকেয়া টাকা আমি পাইনি তাদের কাছ থেকে। পেলে আজ আমি লকডাউনের মধ্যে শিল্পী হিসেবে বাঁচতে পারতাম। আমি চিঠিও পাঠিয়েছিলাম তাদের। কোনও উত্তর আসেনি।’’ কিন্তু সেই সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে রাজি নন সুরকার। তাঁর মতে, অত বড় সংস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করলে তিনি হেরে যাবেন। তাঁর কথায়, ‘‘যে দিন আবার মাস চালাতে কষ্ট হবে, সে দিন আবার চিঠি পাঠাতে পারি।’’ তবে এই মুহূর্তে একটু হলেও স্থিতিশীল অবস্থা তাঁদের। ছেলের টাকায় মোটামুটি ভাবে সংসার চলছে বলে জানালেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন