সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর মাধবী মুখোপাধ্যায় মানেই ‘চারুলতা’, ‘কাপুরুষ ও মহাপুরুষ’, ‘গণদেবতা’। তাঁদের বয়স বাদ সেধেছে। এই জুটিকে এখন বারবার রুপোলি পরদায় দেখা যায় না। একসঙ্গে শেষ অভিনয় ২০১০ সালে। সাত বছর পর আবার দু’জন শ্যুটিং ফ্লোরে। তবে বারুইপুরে ‘কুসুমিতার গপ্পো’ ছবির সেটে বোঝার উপায় নেই একজনের বয়স ৮২। অন্যজনের ৭৫। তাঁরা যে তখন টাইমমেশিনের যাত্রী। ঠাট্টা করছেন। ইয়ার্কি মারছেন। চার ঘণ্টার বেশি কাজ না করা সৌমিত্র সেটে থেকে যাচ্ছেন ছ’ঘণ্টারও বেশি।
এ ছবিতেও তিনি ‘কোনি’র ক্ষিদ্দার মতো অ্যাংগ্রি ‘ইয়ং’ ম্যান। ‘ইয়ং’ই বটে। ক্রীড়া সাংবাদিক রত্নাকর সেন। বাইরের খাবার খান না দু’জনের কেউই। তাই লাঞ্চে বাড়ির খাবার। কিন্তু তেলবিহীন সেদ্ধ খাবার নয়, কোনও দিন খাচ্ছেন ট্যাংরা মাছের ঝোল। তো পরের দিন কব্জি ডুবিয়ে দই-কই। হেসে উড়িয়ে দিচ্ছেন পরিচালক হৃষীকেশ মণ্ডলের ইয়ার্কি, ‘‘কী জেঠু, আবার প্রেমে পড়লে নাকি!’’ ইউনিটের আবদারে হাত-ধরাধরি করে নাচছেনও দু’জনে। ব্যাকগ্রাউন্ডে ‘আরও দূরে চলো যাই...’। তবে পেশাদারিত্ব যে সবার আগে সেটাও দেখিয়ে দিয়েছেন সৌমিত্র। নাতি রণদীপের বাইক দুর্ঘটনার পরের দিন শ্যুটিং। সবাই ভাবছে, অসম্ভব। মাধবী মুখোপাধ্যায়ও বলছেন, ‘‘ক’দিন নিশ্চয়ই পাবে না ওকে।’’ কিন্তু সকলকে ভুল প্রমাণিত করে, নায়ক হাজির সেটে। ‘‘পরিচালক-প্রযোজকদের টাকা নষ্ট করতে
পারব না,’’ জবাব দিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।