Rappa Roy Shooting Coverage

ক্যামেরার সামনে ‘রাপ্পা রায়’, কমিক থেকে উঠে এসে পর্দার শুটিং শুরু, হবে সিক্যুয়েলও!

রাপ্পা রায় শুধুই তথাকথিত গোয়েন্দা নয়। তাই যে কোনও সামাজিক সমস্যাতেই উপস্থিত থাকবে সে। আরজি কর-কাণ্ড, ফেডারেশনের সমস্যাও দেখানো হবে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:১২
Share:

‘ক্যামেরা চলছে’... এটাই কি দেবাশিস রায় বলছেন সৌম্য মুখোপাধ্যায়কে? নিজস্ব চিত্র।

সকাল ৮টা। দক্ষিণ কলকাতার কেয়াতলা লেনের ঘুম তখনও ঠিক মতো ভাঙেনি। কিন্তু ওই রাস্তার বিশেষ একটি বাড়ি ভোর থেকে সজাগ। ওখানে সকাল সকাল ‘রাপ্পা রায়’-এর আসার কথা। সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় কমিক গল্প ‘রাপ্পা রায় ও ফুলস্টপ ডট কম’-এর পাতা থেকে উঠে আসছেন তিনি। পাশের বাড়ির ছেলেটি’ আদতে সাংবাদিক এবং চিত্রশিল্পী। নেশা সমস্যার সমাধান।

Advertisement

সকাল ৯টা। বাড়ির অন্দরে ব্যস্ততা তুঙ্গে। সৌরভ দাস, দেবাশিস রায় এসেছেন। দেবাশিস মণ্ডল বিশেষ সাজে সজ্জিত। ‘রাপ্পা রায়’কে অভ্যর্থনা জানাতে এত কিছু? স্বচক্ষে দেখতে আনন্দবাজার অনলাইন হাজির সেখানে। উপস্থিত ধীমান বর্মণের সঙ্গে কথা বলতেই আসল খবর প্রকাশ্যে। ধীমান ও প্রান্তিক গায়েনের পরিচালনায় মঙ্গলবার থেকে শুটিং শুরু ছবির। সঙ্গে মহরৎ। সকাল সকাল তাই এত ব্যস্ততা।

ক্যামেরার মুখোমুখি দেবাশিস মণ্ডল ওরফে ‘মোমো’। নিজস্ব ছবি।

ইতিমধ্যে রূপটান নিয়ে কালো পোশাকে হাজির দেবাশিস। চিত্রনাট্য অনুযায়ী মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দেবেন তিনি। এই শট দিয়েই শুটিং শুরু। ক্যামেরার মুখোমুখি হওয়ার আগে আনন্দবাজার অনলাইনকে ফিসফিসিয়ে বললেন, “ছবিতে আমি মোমো। বিবাহিত, কন্যাসন্তানের বাবা। আপাতত এর বেশি কিছু বলতে পারব না।” ফ্রায়েড না স্টিম মোমো? প্রশ্ন শুনেই চওড়া হাসি। দাবি, জানতে হবে ছবি দেখতে হবে।

Advertisement

বাকি অভিনেতারা ইতিউতি ছড়িয়ে। শট চলছে। ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ১০টা ছুঁতেই ‘রাপ্পা’ ওরফে সৌম্য মুখোপাধ্যায় এলেন। রোদচশমায় চোখ ঢাকা। কালো টি-শার্টের উপরে হলুদ উইন্ডচিটার। অপ্রস্তুত হাসি হেসে দাবি, “সোমবার পোস্টার শুট ছিল। সঙ্গে অ্যাকশন দৃশ্যের জন্য বাড়তি প্রস্তুতি। রাত পর্যন্ত জেগেছি। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম...”।

ক্ল্যাপস্টিক হাতে সৌম্য মুখোপাধ্যায়, সৌরভ দাস, ধীমান বর্মন, দেবাশিস মণ্ডল, দেবাশিস রায়। নিজস্ব ছবি।

‘প্রেম ট্রেম’-এর পর ‘চিনি’ ছড়িয়ে, ‘পারিয়া’তে গুন্ডামি। এ বার কি গোয়েন্দাগিরি? নিজেকে প্রচুর ভাঙতে হচ্ছে? সৌম্যের জবাব, “রাপ্পা পাশের বাড়ির ছেলে। তথাকথিত গোয়েন্দা নয়। বাড়ি থেকে সমাজ— যে কোনও ক্ষেত্রেই সে হাজির।” সুযোগের কমিক গল্প পড়েছেন। অ্যাকশনের জন্য শরীরচর্চা করছেন। খুঁটিয়ে চিত্রনাট্যও পড়া হয়েছে। ক্যামেরার মুখোমুখি হওয়াই বাকি। সাম্প্রতিক জ্বলন্ত ইস্যু মানে আরজি কর-কাণ্ড, টলিউডের ফেডারেশন সমস্যা। সে সব পর্দায় দেখানো হবে? নিমেষে ‘রাপ্পা রায়’-এর খোলস ছেড়ে অভিনেতা স্বমহিমায়। হেসে ফেলে বললেন, “এই প্রশ্নের কী উত্তর দেব? আমাকেও তো করেকম্মে খেতে হবে!”

প্রত্যেক গোয়েন্দার এক জন করে সহকারী থাকে। এখানে ‘টোনি’ ওরফে দেবাশিস রায় সেই ভূমিকায়। অভিনেতা জানালেন, রাপ্পার মা নেই। ওর যাবতীয় অনুভূতির একমাত্র সাক্ষী টোনি। যাকে বলে ‘ক্রাইম পার্টনার’। আড্ডার মাঝেই উপস্থিত ছবির অন্যতম পরিচালক এবং প্রযোজক ধীমান, সহকারী প্রযোজক অমিত মুখোপাধ্যায়। উভয়েই জানালেন, কোনও পরিচিত গোয়েন্দাকে ফের পর্দায় হাজির করার ইচ্ছে ছিল না তাঁদের। বরং এমন কাউকে খুঁজছিলেন, যে একই সঙ্গে ‘পাশের বাড়ির ছেলে’, আবার এই প্রজন্মের প্রতিনিধি। সেই জন্যই ‘রাপ্পা রায়’কে বেছে নিয়েছেন। যদিও কমিক গল্পকে ছবির আকার দেওয়া যথেষ্ট পরিশ্রমের। সেই পরিশ্রম করার পরে তাঁরা এতটাই খুশি যে সিকুয়েলের ভাবনাও চূড়ান্ত। প্রথম পর্বের শুটিং মিটলেই আগামী বছর দ্বিতীয় পর্বে হাত রাখবেন।

‘রাপ্পা রায় ও ফুলস্টপ ডট কম’-এর মহরৎ। নিজস্ব ছবি।

ছবিমুক্তি, ব্যবসায়িক সাফল্য— এ সবের আগেই দ্বিতীয় পর্বের ঘোষণা। সৌম্য কি খুশি? লজ্জা আর তৃপ্তি ‘গোয়েন্দা’র হাসিতে, চোখেমুখে ঠিকরে পড়ছে। সেই রেশ নিয়েই তিনি রূপটান নিতে দৌড়লেন। চুলে স্পাইক করত হবে! এই প্রজন্মের ‘টিনটিন’ নাকি? কমিক গল্পের জনপ্রিয় চরিত্রটিও কিন্তু সাংবাদিক এবং ছবি আঁকিয়ে ছিলেন। সৌম্যের দাবি, এত কিছু ভাবছেন না তিনি। চরিত্রেই ডুবে আছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement