Sreelekha Mitra

ও শেষ হয়ে গিয়েছে: শ্রীলেখা ।। উনি মিথ্যা বলে চলেছেন: সৌকর্য

আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে দু’জনেই গতানুগতিক বক্তব্যের বাইরে এসে বাদ-বিবাদের আসল কারণগুলো এক এক করে তুলে ধরলেন।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২০ ১৬:৫৩
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

“সৌকর্যর মতো প্রতিভাবান পরিচালক শেষ হয়ে গেল!” আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে গিয়ে রীতিমতো ক্ষোভে ফেটে পড়লেন শ্রীলেখা। গতকাল থেকেই ‘রেনবো জেলি’ ছবির পারিশ্রমিক আর ক্রেডিট লাইনে তাঁর নাম না থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌকর্যের সঙ্গে তরজায় নেমেছেন অভিনেত্রী, পরিচালক। সৌকর্য চুপ করে থাকেননি। সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন শ্রীলেখাকে। আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে দু’জনেই গতানুগতিক বক্তব্যের বাইরে এসে বাদ-বিবাদের আসল কারণগুলো এক এক করে তুলে ধরলেন।

Advertisement

প্রসঙ্গ পরিচালক আদিত্য বিক্রম

Advertisement

শ্রীলেখা: আদিত্য বিক্রম আমায় প্রথম জানায়, নেটফ্লিক্সে ‘রেনবো জেলি’-তে আমার নাম নেই। আদিত্যদের দুটো ছবিই নেটফ্লিক্সে আছে। মেটাডেটা কেমন করে তৈরি হয়, ক্রেডিট লাইনের লিস্টও যে পরিচালকের মাধ্যমেই যায় সেটা ওঁরা জানেন। বিষয়টা জানে বলেই আদিত্য আমায় জানিয়েছিল ‘রেনবো জেলি’-তে আমার নাম বাদ যাচ্ছে।

সৌকর্য: আদিত্য বিক্রমের প্রসঙ্গ বার বার আসছে। ‘জোনাকি’ ছবির ক্রেডিট লাইনে নায়কেরই তো নাম নেই! কী বলবেন আদিত্য বিক্রম?

প্রসঙ্গ পারিশ্রমিক

শ্রীলেখা: ভেবেছিলাম এক জন নতুন ছেলে, ভাল গল্প লিখছে, কাজ করতে চাইছে, ওর কাজ হোক, তার পর টাকাপয়সার কথা ভাবব। ওমা, ছবি হয়ে গেল, কাজ ভাল হল, তারপর কোনও উচ্চবাচ্চই নেই! এ বার পুজোর আগে টাকার দরকার ছিল। ‘রেনবো জেলি’-র জন্য টাকা চেয়েছিলাম। পার্ট পেমেন্ট চেয়েছিলাম। ও বলল, “কিসের পেমেন্ট শ্রীলেখাদি?” আমি বলেছিলাম, “তোমার সঙ্গে আর কী ব্যবসা আছে আমার, যে ছবি ছাড়া অন্য কিছুর জন্য পেমেন্ট চাইব? যে যায় লঙ্কায় সে-ই হয় রাবণ! তাই তো সৌকর্য?” আরও কয়েক বছর আগে আমি ‘পেন্ডুলাম’ করেছিলাম। বলেছিলাম, ওই পুরনো পারিশ্রমিক নেব। সেই টাকাও পুরো পাইনি।

সৌকর্য: মিথ্যে বলছে! আমি টাকা দিয়েছি। আমি তো সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলাম, ‘তা হলে জিএসটি স্লিপ পোস্ট করি?’ উত্তর আসেনি।আমার প্রশ্নের উত্তর আমি পাচ্ছি না।

রেনবো জেলির সেটে শ্রীলেখা ও সৌকর্য।

প্রসঙ্গ অনীক দত্ত

শ্রীলেখা: অনীকদা তো লিখেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন আমার নাম নেই তার একটা ক্ল্যারিফিকেশন দেওয়া উচিত। আজ দু’বছর বাদে নতুন করে কি আমায় বলতে হবে, ‘রেনবো জেলি’-তে আমার চরিত্র কতখানি গুরুত্বপূর্ণ?

সৌকর্য: অনীক দত্ত ‘মেঘনাদ বধ কাব্য’ ছবিতে বরুণ চন্দ, কমলেশ্বর, সায়নী, শৌরসেনীর নাম দেননি। নেটফ্লিক্সে অ্যালগরিদমের বিষয় উনি খুব ভাল জানেন।

প্রসঙ্গ নেটফ্লিক্স

শ্রীলেখা: আমাকে নেটফ্লিক্সের পক্ষ থেকেই এক জন বলেছে যে পরিচালকের আপত্তি ছিল ক্রেডিট লাইনে আমার নাম দেওয়া নিয়ে। যিনি নিজে মুম্বইয়ের এক জন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর, মুম্বই থেকে সেই রোহন ঘোষ লিখেছে, যে মেটাডেটা, যা সৌকর্য বলছে নেটফ্লিক্সের লোক ঠিক করে দেয়, তা ভুল! মেটাডেটা পরিচালকেরাই দেয়। তা হলে পরিচালক, প্রযোজক ঠিক করে মেটাডেটায় কার নাম যাবে। আর এটা যে সৌকর্যরা ইচ্ছে করেই করেছে সেটা তো বোঝাই যাচ্ছে। আমি ওর কাছে টাকা চেয়েছি বলেই আমার সঙ্গে এটা করল ও। কোন অভিনেতা ছবি হিট হওয়ার পর টাকা নেয়? আমি তো বলেছিলাম! এই যে নেটফ্লিক্সে যে টাকায় ছবি ও বিক্রি করেছে সেই টাকার ভাগ কি ও আমায় দেবে?

সৌকর্য: উনি বলুন না সেই নেটফ্লিক্সের লোকটি কে? তাঁর নাম কী? সেই নাম কিন্তু সামনে আসছে না। কেন?

প্রসঙ্গ শুটের বাড়ি

শ্রীলেখা: আমি শুটের জন্য বিনা পয়সায় বাড়ি খুঁজে দিয়েছিলাম। যখন এই ছবির জন্য প্রযোজক খোঁজা হচ্ছে তখন আমার গাড়ির তেল খরচ করে করে ওকে নিয়ে গিয়েছি। ভাল গল্প। চেয়েছিলাম ছবিটা হোক। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ছবির প্রমোশনে গিয়েছি। ওর বউ তখন কান্নার সুরে বলেছিল, ‘‘শ্রীলেখাদি তুমি না থাকলে কী করে প্রমোশন হবে?’’ এখন শুনি এই ছবির জন্য শুধু ও আর ওর বউ যত পরিশ্রম করেছে! আমি কোভিডে মরে যেতে পারি, কিন্তু তার আগে এটা স্পষ্ট বলতে চাই, সৌকর্য ফুরিয়ে গিয়েছে। ওর মধ্যে সেই ইনোসেন্স আর নেই!

সৌকর্য: কোন প্রযোজকের বাড়ি? নাম জানানো হোক। সামনে আসুক তিনি আমার পরিচিত না শ্রীলেখাদির? আমি তো চাইছি নামগুলো সামনে আসুক! আসছে না কেন?

প্রসঙ্গ মামলা

শ্রীলেখা: আমি চাইলে মামলা করতে পারি।

সৌকর্য: আমি শুধু নয়, এত বার যে নেটফ্লিক্সের প্রসঙ্গ আসছে, চাইলে নেটফ্লিক্সও মানহানির মামলা করতে পারে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন