Sridevi's death

ঘুম থেকে উঠেই প্রথম কথা, ‘মা কোথায়?’

শ্রীদেবীর জীবনে যতটা ভূমিকা ছিল মায়ের, জাহ্নবীর জীবনেও ততটাই ছিলেন শ্রীদেবীইন্ডাস্ট্রির সবাই বোধহয় জানেন, জাহ্নবী তাঁর মায়ের উপর কতটা নির্ভরশীল এবং বাধ্য। ঠিক যেমনটা ছিলেন তাঁর মা শ্রীদেবীও। মায়ের ভূমিকা শ্রীদেবীর জীবনে যতটা, তাঁর ‘জানু’র ক্ষেত্রেও তাই।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৩
Share:

জাহ্নবী ও শ্রীদেবী

কাল থেকে মেয়েটা দু’ চোখের পাতা এক করতে পারেনি। এতটা অসহায় বোধহয় নিজেকে কখনও লাগেনি। শেষ মুহূর্তে মায়ের কাছেও ছিল না সে। মুম্বইয়ে সে তখন ব্যস্ত ‘ধড়ক’-এর শুটিংয়ে...

Advertisement

ইন্ডাস্ট্রির সবাই বোধহয় জানেন, জাহ্নবী তাঁর মায়ের উপর কতটা নির্ভরশীল এবং বাধ্য। ঠিক যেমনটা ছিলেন তাঁর মা শ্রীদেবীও। মায়ের ভূমিকা শ্রীদেবীর জীবনে যতটা, তাঁর ‘জানু’র ক্ষেত্রেও তাই।

ছোট থেকেই শ্রীও ছিলেন লাজুক এবং মায়ের বাধ্য সন্তান। এক সাক্ষাৎকারে নিজেই বলেছিলেন, কোনও অনুষ্ঠানে যেতে হলে জামাকাপড় থেকে শুরু করে জুয়েলারি, জুতো... সব কিছু ঠিক করে দিতেন তাঁর মা রাজেশ্বরী। তিনিও অন্ধের মতো মাকে অনুসরণ করতেন। একই ভাবে জাহ্নবীরও মায়ের প্রতি ভীষণ আস্থা। শ্রীদেবী বলেছিলেন, ‘সময় বদলেছে, এখনকার ছেলেমেয়েরা অনেক নতুন কিছু সাজেস্ট করে। আমার ভালও লাগে সেটা ফলো করতে।’

Advertisement

বরং শ্রীর কথায় তাঁর ছোট মেয়ে খুশি অনেক বেশি আত্মনির্ভরশীল। কিন্তু তাঁর বড় মেয়ে জাহ্নবী কতটা তাঁর উপর নির্ভরশীল, বোঝাতে গিয়ে নিজের জীবনের একটা ঘটনা বলেছিলেন, ‘আমাদের কম্পাউন্ডে মা আমাকে বসিয়ে রেখে প্রতিবেশীর সঙ্গে গল্প করছিল।

আরও পড়ুন: স্মৃতির কোলাজে নায়িকা শ্রীদেবী

হঠাৎ কোনও একটা কাজের কথা মনে পড়ায়, আমাকে ওখানে বসতে বলে, মা রান্নাঘরে যায়। তার পর আমার কথা ভুলে যায়। দু’ঘণ্টা পর মনে পড়লে আমাকে নিতে আসে এবং ওখানে একই অবস্থায় পায়। মা আমাকে বলে, তুমি আমাকে ডাকোনি কেন? আমি বলি, তুমি আমাকে বসে থাকতে বলেছিলে।’ সে জন্যই বোধহয় শ্রীদেবী ছবির সেটে মায়ের বসে থাকা, আউটডোরে যাওয়া, মেয়ের হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সে সময় খুব স্বাভাবিক ছিল। মায়ের নিয়ন্ত্রণের কারণে নাকি কেরিয়ারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল না শ্রীর।

মা রাজেশ্বরীর সঙ্গে শ্রীদেবী

জাহ্নবীর কেরিয়ারের রুটম্যাপ শ্রীদেবীরই বলে দেওয়া। কর্ণ জোহরের প্রোডাকশনে ডেবিউ, স্ক্রিপ্ট রিডিং... সব কিছুতেই মেয়ের পাশে থেকেছেন শ্রীদেবী। শোনা যায়, মেয়ের ডেবিউ ক্রমশ পিছোচ্ছে বলে শ্রী রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন কর্ণের উপর। তার পরই নাকি তড়িঘড়ি ছবির ঘোষণা করেন কর্ণ। যদিও দুই মেয়েই শ্রীর খুব কাছের। কিন্তু জানু ঘুম থেকে উঠেই প্রথম কথা, ‘মা কোথায়?’ আর খুশির প্রশ্ন, ‘কোকো (পালিত কুকুর) কোথায়?’ ঘটনাটা শ্রীদেবীই বলেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে। জাহ্নবী মায়ের উপর এতটাই নির্ভরশীল যে, বহু দিন মা তাঁকে খাইয়ে দেওয়া তো বটেই, ঘুমও পাড়িয়ে দিয়েছে...

সেই হাতটাই আজ আর নেই। যে হাত ধরে কাঁটা বিছানো এই ইন্ডাস্ট্রিতে পথ চলবেন ভেবেছিলেন জাহ্নবী। শ্রীদেবী বলেছিলেন, তাঁর জীবনে দুঃখ একটাই, মাকে নিউ ইয়র্কে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। জাহ্নবীরও বোধহয় এই দুঃখ সারা জীবন তাড়া করে বেড়াবে, যাঁকে দেখে বড় পরদায় নিজেকে দেখার স্বপ্ন শুরু, সে-ই দেখে যেতে পারল না মেয়ের প্রথম ছবির মুক্তি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন