তাঁর আকস্মিক চলে যাওয়ায় শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। গত তিন দিন ধরে টিভি খুললেই দেখা যাচ্ছে তাঁর ছবির অংশ, নাচ। এফএম চ্যানেলগুলিতে অনবরত তাঁরই ছবির গান। খবরের কাগজের প্রথম পাতা ভরা তাঁর ছবিতে। বিদেশের পাঁচতারা হোটেলের বাথটবে কেন, কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে এই তিন দিনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে কম কাটাছেঁড়া হয়নি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ বলিউড তারকাদের একাংশ। শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম, বিশেষত টিভি চ্যানেলগুলির খবর পরিবেশন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন, হেমা মালিনীরা। এঁদের বক্তব্য, শ্রীর মৃত্যু নিয়ে অহেতুক রসালো গল্প ছড়িয়ে অভিনেত্রীর প্রতিভাকেই খাটো করে চলেছে সংবাদমাধ্যম। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নবদীপ সিংহ সুরিও ভারতীয় সংবাদমধ্যমকে সংযত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
শনিবার রাতে দুবাইয়ে মারা যান আশির দশক কাঁপানো বলিউডের এই হার্টথ্রব। হোটেলের বাথটব থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল শ্রীদেবীকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয় তাঁকে। প্রথমে বলা হয়, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শ্রীদেবীর। কিন্তু অভিনেত্রীর দেহ ময়না-তদন্ত করে জানা যায়, জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। রক্তে মিলেছে অ্যালকোহলও। অভিনেত্রীর দেহ ছাড়া নিয়েও তৈরি হয় নানা আইনি জটিলতা। এর পরেই বিভিন্ন টিভি চ্যানেল অভিনেত্রীর মৃত্যু রহস্য নিয়ে খাড়া করতে থাকে নানা তত্ত্ব। পরিবেশিত হয় নানা রসালো খবর। এমনকী তাঁর মৃত্যুতে স্বামী বনি কপূরের হাত আছে কি না, তা নিয়েও শুরু হয় জল্পনা। তবে ‘মম’-এ শ্রীদেবীর সহ অভিনেতা পাক তারকা আদনান সিদ্দিকি আজ সংবাদমাধ্যমকে জানান, শনিবার রাতে খবরটা পেয়ে যখন তিনি দুবাইয়ের হোটেলে পৌঁছন, দেখেন শিশুর মতো কাঁদছেন বনি।
অমিতাভ বচ্চন থেকে হেমা মালিনী, ফারহান আখতার থেকে বিদ্যা বালন। অনেকেই টুইটারে এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে একহাত নিয়েছেন। প্রয়াত অভিনেত্রীর ছবি পোস্ট করে বিদ্যা লিখেছেন, ‘‘ওরা আপনাকে শান্তিতে থাকতে দিক।’’ অমিতাভের টুইট, ‘‘ভালবাসায় ফেরত আসুন। ওটাই একমাত্র চিরকালীন।’’ হেমা মালিনীও লিখেছেন, ‘‘ওর কী ভাবে মৃত্যু হল, সেটা ব্যাখ্যা করার সময় এটা নয়। এখন ওকে শ্রদ্ধা জানানোর সময়। ও সেটাই দাবি করে।’’ সোনু সুদ, জাভেদ জাফরি, বীর দাসের মতো অভিনেতারাও সরাসরি চ্যানেলগুলির সমালোচনা করেছেন। বীর লিখেছেন, ‘‘আরআইপি নিউজ চ্যানেল।’’ তবে শুধু বলিউডই নয়। সর্বভারতীয় বৈদ্যুতিন চ্যানেলের বেশ কিছু তাবড় সাংবাদিকও এমন ‘অসংবেদনশীল’ খবর পরিবেশনের জন্য ক্ষুব্ধ।
আরও পড়ুন: 'খাঁচায় বন্দি এক পাখি শ্রীদেবী'
সংবাদমাধ্যমকে সংযত থাকতে বলে রাষ্ট্রদূত নবদীপ সুরির টুইট, ‘‘শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু রসালো জল্পনা দিয়ে সত্যিই কাউকে সাহায্য করবে না।’’