ফেসবুকের যুগে টেনিদার প্রত্যাবর্তন

শিরোনাম দেখে ঘাবড়ানোর কারণ নেই। ফেসবুকের যুগে টেনিদা ফিরে এলেও হোয়াটসঅ্যাপ, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সে শতহস্ত দূরে! সায়ন্তন ঘোষালের নতুন ছবির সেটে টেনিদার এই বৈশিষ্ট্যটির সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পেরে পরম তৃপ্তির হাসি হাসলেন কাঞ্চন মল্লিক। 

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share:

ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক

শিরোনাম দেখে ঘাবড়ানোর কারণ নেই। ফেসবুকের যুগে টেনিদা ফিরে এলেও হোয়াটসঅ্যাপ, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সে শতহস্ত দূরে! সায়ন্তন ঘোষালের নতুন ছবির সেটে টেনিদার এই বৈশিষ্ট্যটির সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পেরে পরম তৃপ্তির হাসি হাসলেন কাঞ্চন মল্লিক।

Advertisement

ছবির ওয়ার্কিং টাইটেল ‘টেনিদা অ্যান্ড কো‌‌ং’। সায়ন্তন বলছিলেন, ‘‘টেনিদা আমার সবচেয়ে অ্যাম্বিশাস প্রজেক্ট। টাইমলাইন বদলে গেলেও কোনও চরিত্রকে বিকৃত করা হয়নি। নিজে দর্শক হিসেবে যা দেখতে চাইব না, তেমন কিছু দেখানো হবে না।’’

রাজারহাটের কাছে এক রিসর্টে শুটিং চলছিল সে দিন। শুটিংয়ের পঞ্চম দিন। সকলেই বেশ চনমনে। অভিযান ‘ঝাউবাংলো রহস্য’-এর সমাধান। তবে কাঞ্চন বেশ চাপেই। বললেন, ‘‘দেখতেই পাচ্ছেন, এই গরমে সোয়েটার, মাঙ্কি ক্যাপ আর গ্লাভস পরে শুট করছি। দ্বিতীয়ত, এই চরিত্রটার সাহিত্যমূল্য আছে। জড়িয়ে আছে বাঙালির নস্ট্যালজিয়াও। তাই ভিতর থেকে কেউ যেন বার বার বলে দিচ্ছে, কাঞ্চন, সাবধান!’’

Advertisement

‘টেনিদা’ যতই চাপে থাকুন, তিনি সেটে না থাকলে যে সেট ফাঁকা লাগে, তা একবাক্যে স্বীকার করলেন এই ছবির ক্যাবলা, গৌরব চক্রবর্তী। ‘‘টেনিদার চরিত্রে কাঞ্চনদা পারফেক্ট কাস্টিং। আমরা আগেও কাজ করেছি। কাঞ্চনদার সেটে থাকা সকলের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।’’ চরিত্রটার জন্য গৌরবের প্রস্তুতি কেমন? ‘‘ছোটবেলা থেকে টেনিদা, ঘনাদা, ফেলুদা চরিত্রগুলোর সঙ্গে এমন ভাবে বড় হয়েছি, ওটাই প্রস্তুতি। আর আমি পরিচালকের উপরেই পুরো বিশ্বাস রাখছি।’’

সেট তৈরি হতে হতে সকলেরই মেকআপ প্রায় সারা। চলে এল লাঞ্চ—ভাত, ডাল, তরকারি, চিকেন। কাঞ্চনের পাশেই বসেছিলেন ঋদ্ধিমা ঘোষ। তাঁর দিকে তাকিয়ে চোখ টিপেই তিনি বলতে শুরু করলেন, ‘‘গৌরবের তো এখানে পুরো ফ্যামিলি প্যাকেজ রয়েছে। বেণুদা (সব্যসাচী চক্রবর্তী), মিঠুদি, ওঁদের ছেলে, ছেলের বৌ...আউটডোর ভালই হবে মনে হচ্ছে।’’ এই ছবিতে বিজ্ঞানী সাতকড়ি সাঁতরার চরিত্র করছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। তাঁর মেয়ের চরিত্রে ঋদ্ধিমা। তিনি অবশ্য কাঞ্চনের কথা শুনে শুধুই হাসলেন।

ছবিতে পেটরোগা প্যালা ও ঢাকাই বাঙাল হাবুল সেনের চরিত্রে যথাক্রমে সৌমেন্দ্র ভট্টাচার্য ও সৌরভ সাহা। ‘‘পর্দার বাইরেও আমি বাঙাল, চিংড়ি একদম সহ্য হয় না। তাই হাবুলের ভাষা রপ্ত করতে অসুবিধে হয়নি। কাঞ্চনদা বলছেন, জীবনেও হাবুল হয়ে গিয়েছি। আসলে চশমা ছাড়া অন্ধকারে শুটিং করতে গিয়ে আমি একটু ঘেঁটে রয়েছি,’’ অকপট সৌরভ। আর সৌমেন্দ্র বলছেন, ‘‘এই ছবির জন্য আবার টেনিদাসমগ্র পড়ছি। সময় যতই বদলাক, ওই চরিত্রগুলো তো এভারগ্রিন।’’ আউটডোর শুটিংয়ের জন্য মার্চেই দার্জিলিঙের উদ্দেশে পাড়ি দেবে ছবির ইউনিট। শুটিং হবে কালিম্পংয়ের মর্গ্যান হাউসেও।

নেট দুনিয়ায় আত্মমগ্ন প্রজন্মের কাছে টেনিদা ফিরিয়ে আনবে পাড়ার রকের আড্ডা। ক্যাবলা যেমন ছবিতে বলে, ‘‘গাট্টার ফিলিং তো আর হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া যায় না।’’সেটে অবশ্য রক ছিল না। তাই পরিচালকের সঙ্গে চায়ের ভাঁড়েই চিয়ার্স করলেন চারমূর্তি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন