Kumar Shanu

Super Singer 3: সোনু এবং শানুর মতের অমিল বেশি, কিন্তু তাঁদের হাত ধরেই প্রতিভা খুঁজবে ‘সুপার সিঙ্গার ৩’

‘সুপার সিঙ্গার ৩’-এর বিচারকের আসনে বসতে চলেছেন কুমার শানু, সোনু নিগম। দুই প্রজন্মের সেতুকে বাঁধবেন কৌশিকী চক্রবর্তী

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২১ ২১:৪৯
Share:

সোনু নিগম এবং কুমার শানু

মতের মিলের থেকে অমিলই বেশি। দ্বন্দ্ব রিয়্যালিটি শো-এ গান বনাম পারফরম্যান্স নিয়ে। দ্বিমত রি-মিক্স নিয়েও। এ সব নিয়েই স্টার জলসার ‘সুপার সিঙ্গার ৩’-এর বিচারকের আসনে বসতে চলেছেন কুমার শানু, সোনু নিগম। দুই প্রজন্মের সেতুকে বাঁধবেন এই প্রজন্মের জনপ্রিয় শিল্পী কৌশিকী চক্রবর্তী। তারই প্রচার ভিডিয়োর শ্যুটে কলকাতায় ঝটিতি সফরে এসেছিলেন শানু, সোনু।

Advertisement

নতুন সিজনের নিয়ম অনুযায়ী ১৫ বছর হলেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া যাবে। বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। পাশাপাশি, অংশগ্রহণকারীদের ঘষেমেজে তৈরি করবেন চার গুরু অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুজয় ভৌমিক, দীপান্বিতা চৌধুরী, রাজীব দাস। নতুন ভূমিকায় পাওয়া যাবে শোভন গঙ্গোপাধ্যায়কে। তিনি এই শো-এর যন্ত্রানুষঙ্গের দায়িত্বে রয়েছেন। শো সঞ্চালনায় যিশু সেনগুপ্ত।

নতুন সিজন থেকে আর কী নতুনত্ব পাবেন দর্শক-শ্রোতারা?

Advertisement

শ্যুটের ফাঁকেই দুই তারকা শিল্পী মুখোমুখি আনন্দবাজার অনলাইনের। কুমার শানুর দাবি, ‘‘আমি, আমার পরের প্রজন্ম সোনু আর বর্তমান প্রজন্মের প্রতিনিধি কৌশিকী। এক মঞ্চে তিন প্রজন্মের উপস্থিতি খুব কম রিয়্যালিটি শো-তেই দেখা গিয়েছে। এর থেকে বড় নতুনত্ব আর কিছুই হতে পারে না।’’ এই বিষয়ে সহমত সোনুও। তাঁর দাবি, কুমার শানুর পাশাপাশি তিনি বড় হয়েছেন কৌশিকীর বাবা শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী অজয় চক্রবর্তীর গান শুনে। ফলে, দুই প্রজন্মকে পাশে পেয়ে তিনিও আপ্লুত।

এই মুহূর্তে জোর গুঞ্জন ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ রিয়্যালিটি শো ঘিরে। সত্যিই কি প্রতিযোগীদের মিথ্যে প্রশংসা করতে বাধ্য করা হয় বিচারকদের? এই মঞ্চেও কি সেটাই হবে? দু’জনের দ্বন্দ্ব শুরু এখান থেকেই। কুমার শানুর দাবি, তিনি মিথ্যে প্রশংসা করতে পারেন না। তাই জাতীয় স্তরের গানের রিয়্যালিটি শো-তেও তিনি এমন কাজ করেননি। এখানেও করবেন না। এ দিকে সোনুর দাবি, প্রতিযোগীদের যদি প্রশংসা করাই হয়, ক্ষতি কী? এ প্রসঙ্গে তাঁর সাফ কথা, ‘‘ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আমাদের কাজ প্রতিযোগীদের উৎসাহিত করা। তার জন্য প্রশংসার প্রয়োজন। সেই কাজটি করলে এত সমালোচনা হবে কেন! আমরা তো কারওর ক্ষতি করছি না।’’

দ্বিমত আরও জোরালো রিয়্যালিটি শো-এর বর্তমান পরিবেশ নিয়ে কথা উঠতেই। ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ বিজেতা অভিজিৎ সাবন্ত খোদ অভিযোগ জানিয়েছেন, শো-এর মঞ্চে প্রতিযোগীর দক্ষতার চেয়ে প্রাধান্য পায় পারিপার্শ্বিক পরিবেশ। তাঁর পারিবারিক অবস্থান। কুমার শানু এক বাক্যে সমর্থন করেছেন এই বক্তব্য। উদাহরণ হিসেবে তাঁর দাবি, ‘‘এমনটাও দেখা যাচ্ছে, মঞ্চে ফুচকা বিক্রির মতো দৃশ্যে অংশগ্রহণের পর শিল্পী গান গাইছেন। এতে গায়ক বা গায়িকার মনোযোগের প্রচণ্ড ব্যাঘাত ঘটে।’’ শিল্পীর কথায়, স্টার জলসার মঞ্চে এ সব কিছুই ঘটবে না। প্রতিযোগীরা মন দিয়ে গান গাওয়ার সুযোগ পাবেন। সোনু নিগম যথারীতি শানুর বিপরীত মেরুর বাসিন্দা। তাঁর বক্তব্য, সমান্তরাল ছবির পাশাপাশি বিনোদনমূলক ছবিও তৈরি হয়। দর্শকরা নিজেদের পছন্দ অনুসারে ভাগ হয়ে যান। কিছু দর্শক দুই ধরনের মনোরঞ্জন দেখতে ভালবাসেন। রিয়্যালিটির শো-এর মঞ্চও তেমনই। বিনোদন এবং সংস্কৃতি হাত ধরাধরি করে সহাবস্থান করে। বাকিটা দর্শকের পছন্দ।

এখনও প্রতিযোগিতার মঞ্চে স্বর্ণ যুগ বা নয়ের দশকের গানের রমরমা। রি-মিক্স তৈরি হলেও প্রতিযোগীরা কিন্তু সেই গান এই মঞ্চে গান না। এ প্রসঙ্গে আশা ভোঁসলের কথাই কি সত্যি? এই প্রজন্মের কাছে শোনানোর মতো গান নেই? এ বিষয়ে কুমার শানুর দাবি, রি-মিক্স তাঁর ভাল লাগে। তাঁর বহু গান নতুন করে তৈরি হচ্ছে। জনপ্রিয়ও হচ্ছে সেই গান। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে এ গুলো মেনে নিতেই হবে। পাশাপাশি স্বীকার করে নেন, এই প্রজন্ম সব ধরনের গান গাইলেও নয়ের দশক, স্বর্ণযুগ এখনও আচ্ছন্ন করে রেখেছে দর্শক-শ্রোতাদের। তাই মঞ্চে এই গানের এত দাপট। সোনু জানালেন, ‘‘রি-মিক্সের দিন শেষ। শ্রোতারা যেমন শুনতে চাইছেন না। মিউজিক সংস্থারাও আর বানাতে চাইছেন না। মানুষ ভাল গান শুনতে আগ্রহী। সেই জায়গা থেকেই অরিজিনালসের এত রমরমা। আমার ঝুলিতেও তাই এই ধরনের গানের সংখ্যা বেশি।’’

দ্বিমত থাকলেও দুই শিল্পী কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে এক মত। কী সেগুলো? ‘সুপার সিঙ্গার ৩’-এর এক মাত্র লক্ষ, সারস্বত সাধনা। প্রকৃত গুণীদের খুঁজে বের করা। সেটাই ঘটবে প্রতিযোগিতার মঞ্চে। সেই জায়গা থেকেই শানু এবং সোনুর স্বপ্ন, বাংলার মাটি থেকেই উঠে আসবে এমন বহু প্রতিভা যাঁরা আগামী দিনে কুমার শানু বা সোনু নিগমের প্রতিনিধিত্ব করবেন। তার জন্য দুই তারকার পরামর্শ, মন দিয়ে সব ধরনের গান শুনতে হবে অংশগ্রহণকারীদের। গাইতেও হবে সব ধরনের গান। শেখায় যেন ফাঁকি না থাকে। দুই তারকার দাবি, পরিশ্রম আর ধৈর্য এক আধারে মিশলে প্রকৃত গুণীকে কেউ রুখতে পারবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন