বাদশাহি প্যাকস

আপনার বয়স পঞ্চাশ। চাইছেন টেন প্যাকস। হবে না? কে বলল! শাহরুখ তো শিখিয়েছেন। টিপস দিলেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায়আপনার বয়স পঞ্চাশ। চাইছেন টেন প্যাকস। হবে না? কে বলল! শাহরুখ তো শিখিয়েছেন। টিপস দিলেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায়

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০২
Share:

‘ওম শান্তি ওম’।

Advertisement

২০০৭-এ মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিতে ‘দর্দ-এ-ডিস্কো’ গানের সঙ্গে শাহরুখের সুঠাম এইট প্যাকস-য়ের নাচ মাতিয়েছিল তাঁর তামাম ভক্তদের।

এই অক্টোবরে মুক্তি পেতে চলেছে ফারহা খান পরিচালিত ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবিটি।

Advertisement

কিং খান এ বার টেন প্যাকসে।

অনেকেই বলছেন সুঠাম নির্মেদ শরীরে অসাধারণ টেন প্যাকসে শাহরুখকে দেখতে লাগছে খোদাই করা ‘গ্রিক গড’-এর মতো।

আর আপনারা অনেকেই এই চেহারা পাওয়ার লোভে নিশ্চয়ই মনে মনে কাহিল হয়ে পড়ছেন?

রহস্যটা কী?

প্যাকস ফান্ডা

টেন হোক বা এইট প্যাকস বানাতে সবচেয়ে জোর দিতে হবে এক্সারসাইজে।

ভেঙে নিতে হবে বডি পার্ট এক্সারসাইজগুলোকে। অর্থাৎ একদিন যদি করেন শরীরের ওপরের অংশের এক্সারসাইজ, পরের দিন করতে হবে শরীরের নীচের অংশের এক্সারসাইজ।

বুক আর পিঠের ব্যায়াম করুন সপ্তাহে তিন দিন। সপ্তাহে দু’দিন করুন হাতের ব্যায়াম। আর সপ্তাহে ৪-৫ দিন করুন শরীরের মধ্য অংশের অর্থাৎ কোর পেশির ব্যায়াম। ওজন নিয়ে ব্যায়াম করতে হবে বিশেষ করে। কোর পেশির ব্যায়াম আর ওজন নিয়ে ব্যায়ামই কিন্তু সঠিক প্যাকস বানানোর মূল রেসিপি।

পুল আপস-এ ভি শেপ

প্রথমেই দেখে নিন কোন দিন কতটা ওজন নিয়ে ব্যায়াম করছেন। জিমে গেলে ট্রেনারই পরামর্শ দিয়ে দেবেন। একটা কথা মাথায় রাখবেন। ওয়ার্কআউটের নিয়ম সঠিক মেনে চললেন না, সঠিক ভাবে খাবার খেলেন না, অথচ আশা করছেন আপনাকেও শাহরুখের মতোই দেখাবে এতটা আশা করা কিন্তু একেবারেই ভুল। তাই নিয়মিত ভাবে করে যেতে হবে ওয়ার্কআউটগুলো। চারটে বুকের আর চারটে পিঠের ব্যায়াম করা কিন্তু মাস্ট। বুকের অংশের জন্য করতে পারেন বেঞ্চ প্রেস, পুশ আপ, কেবল চেস্ট প্রেস, ইনক্লাইনড ডাম্বেল প্রেস-এর মতো ওয়ার্ক আউট। আর পিঠের জন্য বেছে নিতে পারেন পুল আপস, প্রোন রো, ডাম্বেল কোর রো বা বারবেল বেন্ট রো-র মতো ওয়ার্কআউটগুলো। খেয়াল রাখবেন পিঠের অংশের এই ওয়ার্কআউটগুলোর মধ্যে পুল আপস একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ। আর পুল আপস ওয়ার্কআউটটা নিয়মিত ভাবে করার চেষ্টা করবেন। এই ওয়ার্কআউট করলে পিঠের অংশে একটা ‘V’ শেপ আসে। আর তাতে করে অ্যাবসটা খুব ভাল ফুটে ওঠে।

একদিন মাঝারি থেকে ভারী ওজন নিয়ে, আর এক দিন বেশি ভারী ওজন নিয়ে করতে হবে এই ব্যায়ামগুলো। আর প্রত্যেক ক্ষেত্রেই ১২-১৪টা রিপিটিশন করতে হবে। প্রতিটা এক্সারসাইজই করবেন ৪ সেট করে।

কোর-অ্যাবস ককটেল

সুঠাম অ্যাবস পেতে যদিও সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ শরীরের মাঝের অংশের ব্যায়াম। মানে কোর পেশির ব্যায়াম। এক-একদিনে ৪-৫টা কোর পেশির ব্যায়াম করতে হবে। তার

মধ্যে গোটা দুয়েক করতে হবে শরীরের ওজন নিয়ে। আর গোটা তিনেক করবেন ওজন ব্যবহার করে।

শরীরের ওজন নিয়ে সুইস বলে করুন প্ল্যাঙ্ক রোল আউট। তার সঙ্গে টি-পুশ আপ। ৩টে সেট করার পর ১২-১৪ বার রিপিট করতে হবে। ওজন ব্যবহার করে করতে পারেন ডাম্বেল উইন্ডমিল, মেডিসিন বল দিয়ে সিটেড চপ বা কেবল উড চপের মতো ওয়ার্কআউটগুলো। ঠিক আগের পদ্ধতিতেই ৩টে সেট করে রিপিট করবেন ১২-১৪ বার।

হাতেনাতে টেন প্যাকস

কোর পেশি এবং বুক-পিঠের ব্যায়ামের পাশাপাশি নিয়মিত ভাবে করতে হবে হাতের এক্সারসাইজ ও। ডাম্বেল নিয়ে শোল্ডার প্রেস, প্রোন বাইসেপ কার্ল, ট্রাইসেপ এক্সটেনশন, ট্রাইসেপ ডিপস বা বেন্ট ওভার ল্যাটারাল রেজ-এর মতো ওয়ার্কআউটগুলো তাই মাস্ট। বুক-পিঠের ব্যায়ামগুলোর মতোই একদিন মাঝারি ভারী ওজন নিয়ে, আবার আর এক দিন বেশ ভারী ওজন নিয়ে অন্তত ৪ সেট করতেই হবে। রিপিট করতে হবে ৬-৮ বার।

স্যালাড থাক নুন বাদ

সুঠাম অ্যাবসের জন্য শুধু এক্সারসাইজ নয়, সঠিক ব্যালান্সড ডায়েটটাও খুব প্রয়োজনীয়। নুন ছাড়া খাবার খেতে হবে। এমনকী রান্নার মধ্যেও যেন নুন না থাকে। ভাল অ্যাবসবহুল চেহারা মানে ‘স্কিনি’, টাইট পেশিবহুল চেহারা। তাই জল যতটা পারা যায় কম খেতে হবে। সে ক্ষেত্রে দিনে ৫০০ মিলি জল যথেষ্ট।

এড়িয়ে চলতে হবে ঘি-মাখন, গরুর দুধ, চিজ, মাটনের মতো খাবার যাতে প্রচুর পরিমাণ স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে।

ট্রান্সফ্যাট আছে এমন খাবার বা ভাজাভুজিও বাদ দিন খাদ্যতালিকা থেকে। অন্তত দু’তিন মাস এই ডায়েটে থাকতেই হবে। পরেও বাদ শরীরে ৭-১০ শতাংশ ফ্যাট থাকলেই যথেষ্ট। কাজেই আপনার খাবার তালিকায় থাক বয়েলড চিকেন বা চিকেন স্যুপ (রোজ প্রায় ৩০০ গ্রাম), ১২-১৪টা ডিমের সাদা অংশ, স্কিমড দুধ, কাজু, আমন্ড, সেদ্ধ ভুট্টা, ওটস বা ডালিয়া। গ্রিন স্যালাড, স্প্রাউট স্যালাডও খেতে হবে যতটা সম্ভব।

প্যাকস আপ

• অনেকের ধারণা অ্যাপস পেতে না কি সিট আপ দিতে হয়। সিট আপের কোনও প্রয়োজন নেই।
ওজন নিয়ে এক্সারসাইজ আর কোর এক্সারসাইজ করলেই যথেষ্ট

• বুক আর পিঠের এক্সারসাইজের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধান থাকতে হবে।
মাসল যথাযথ রেস্ট না পেলে কাঁধে বা পিঠে চোট আসতে পারে

• সুঠাম অ্যাবস-এর জন্য নজর রাখুন পিঠের কোর মাসলের দিকেও

• খাবারে প্রোটিনের ঘাটতি যেন না হয়। নিরামিশাসিরা খেতে পারেন হোয়ে প্রোটিন।
সকালে ২ স্কুপ। আবার সন্ধেবেলা ওয়ার্কআউটের পরে ২ স্কুপ

• খুব বেশি কার্ডিওভাসকুলার ওয়ার্কআউট করবেন না। এতে মাসলের ক্ষয় হয়।
অ্যাবস বানানোর ক্ষেত্রে যা বেশ ক্ষতিকারক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন