পুজোর ছবির রিলিজ নিয়ে দেব বনাম শ্রীকান্ত

জনপ্রিয় নায়ককে রাজনীতিতে টানতে তখন যিনি কলকাঠি নেড়েছিলেন বলে ইন্ডাস্ট্রির খবর, তিনিই দেবের ছবির শোয়ে বাগড়া দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এ বার পুজোয় একগুচ্ছ বাংলা ছবির মধ্যে শাসক-ঘনিষ্ঠ ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর দু’টি ছবি রয়েছে। ওই প্রযোজকেরা বরাবরই নিজেদের ছবি থাকলে প্রভাব খাটিয়ে অন্য ছবিগুলিকে কোণঠাসা করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৪
Share:

দেব এবং শ্রীকান্ত।

গত লোকসভা ভোট থেকেই রাজ্যে শাসক দলের প্রচারে অন্যতম প্রধান মুখ তিনি। টলিউডি তারকা দেবের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে তাঁকে ভোটে দাঁড় করাতেও উদ্যোগী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসক দলের সাংসদ সেই দেবই, পুজোর ছবি রিলিজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

Advertisement

জনপ্রিয় নায়ককে রাজনীতিতে টানতে তখন যিনি কলকাঠি নেড়েছিলেন বলে ইন্ডাস্ট্রির খবর, তিনিই দেবের ছবির শোয়ে বাগড়া দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এ বার পুজোয় একগুচ্ছ বাংলা ছবির মধ্যে শাসক-ঘনিষ্ঠ ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর দু’টি ছবি রয়েছে। ওই প্রযোজকেরা বরাবরই নিজেদের ছবি থাকলে প্রভাব খাটিয়ে অন্য ছবিগুলিকে কোণঠাসা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ইন্ডাস্ট্রির এক নামী পরিচালকের কথায়, ‘‘দেব নিজে প্রযোজক হওয়ায় ভেঙ্কটেশের স্বার্থে ঘা লাগছে। তাঁর ছবির জোরদার প্রচার দেখেই তাঁকে নিশানা করা হচ্ছে।’’ ইন্ডাস্ট্রি সূত্রের খবর, কলকাতার তিনটি সিঙ্গলস্ক্রিন হলেও দেবের ‘ককপিট’-এর মুক্তি হঠাৎ কেঁচে গিয়েছে। একই ঘটনা ব্যারাকপুরের একটি হলেও। অনেক হলেই ভেঙ্কটেশের ‘ভয়ে’ দেবের ছবির শো পেতে সমস্যা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: পুড়ে ছাই আর কে স্টুডিওর একতলা

Advertisement

দেব নিজে অবশ্য কিছু বলছেন না। তাঁকে ফোন ও টেক্সট করে সাড়া মেলেনি। ভেঙ্কটেশ-কর্তা শ্রীকান্ত মোহতাও সাড়া দেননি। তবে শাসক দলের একাংশের মতে, দলের অন্দরে দেবের নম্বর কাটা গিয়েছে বলেই তাঁর ছবির উপরে প্রভাব পড়ছে। মাস দুয়েক আগে টালিগঞ্জের কলাকুশলীদের তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত সংস্থার মাথা স্বরূপ বিশ্বাসের নির্দেশে বিলেতে একটি বাংলা ছবির শ্যুটিং ভণ্ডুল হওয়া নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন দেব। এমন জুলুমবাজি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পক্ষে নেতিবাচক বলেই তিনি আক্ষেপ করেন। টালিগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপের বিরুদ্ধে দেবের এই অবস্থানে, নেত্রী খুশি হননি বলে শোনা যায়। তা ছাড়়া, সাংসদ দেবের এলাকা বন্যাকবলিত ঘাটালেও তাঁর সংক্ষিপ্ত উপস্থিতি নিয়ে কোনও কোনও মহলে সমালোচনা হয়েছিল।

সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘটনাতেও দেবের প্রতি দল ততটা সহানুভূতিশীল নয় বলে আভাস মিলেছে। নবীন-বরণ অনুষ্ঠানে তাঁর নতুন ছবির দুই নায়িকা কোয়েল ও রুক্মিনীকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল দেবের। বিশৃঙ্খলা হতে পারে বলে যুক্তি দেখিয়ে শেষ মুহূর্তে দলের তরফেই দেব ও তাঁর নায়িকাদের অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়।

শাসক দলে দেবের বিরাগভাজন হওয়াটা নেতৃত্ব স্বীকার করছে না। তবে ঠারেঠোরে অনেকেই মানছেন, গোটা টলিউডকে তৃণমূলের ছাতার তলায় রাখতে প্রভাবশালী প্রযোজককে হাতে রাখাটা রাজনৈতিক দায়। দেব প্রযোজক হওয়ার পরে তাঁর সঙ্গে খানিক ঠান্ডা লড়াই চলছে শ্রীকান্তদের। জনৈক পরিচালকের কথায়, ‘‘ছবির শো নিয়ে সাংসদ-নায়ক দেব ও প্রযোজক শ্রীকান্তের টক্করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইটাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রকট হয়ে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন