অগ্নিগর্ভে: দাউদাউ করে জ্বলছে আরকে স্টুডিও। শনিবার। ছবি: পিটিআই
রুপোলি দরজার উপরে লাল রঙের বিখ্যাত ‘লোগো’। ১৯৪৯ সালের ছবি ‘বরসাত’-এর বিখ্যাত পোস্টারের আদলে আঁকা। এক পুরুষ তার এক হাতে ধরে রয়েছে একটি নারীকে। অন্য হাতে একটি বেহালা। পুরুষের মূর্তির দু’টি পা দু’টি ইংরেজি অক্ষরের উপরে রাখা— ‘আর’, ‘কে’।
মুম্বইয়ের চেম্বুরে শনিবার দুপুরে সেই দরজার ও-পারেই আগুনের লেলিহান শিখা। পাকিয়ে ওঠা কালো ধোঁয়া। দমকলের ইঞ্জিনের সাইরেন, লোকজনের ছোটাছুটি, আতঙ্ক।
রাজ কপূরের ‘আর কে’ স্টুডিও পুড়ছে! অগ্নিকাণ্ডের কারণ অজানা। সন্দেহ, শর্ট সার্কিট। মরণপণ যুদ্ধে দমকল যখন আগুন আয়ত্তে আনল, ৮০০ বর্গফুটের গোটা একতলাটাই তখন প্রায় ভস্মীভূত। স্টুডিওর বর্তমান মালিক ঋষি কপূর একটু পরে টুইট করলেন, ‘কেউ মারা যাননি বা আহত হননি। কিন্তু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বিখ্যাত স্টেজ ওয়ান।’
আরও পড়ুন: কাস্টিং কাউচ নিয়ে মুখ খুললেন কৃতী
বৃহন্মুন্বই পুরসভা জানাচ্ছে, শনিবার বেলা আড়াইটে নাগাদ আগুন লাগে। খবর পেয়েই দমকলবাহিনী ছুটে আসে ৬টি ইঞ্জিন ও ৫টি জলের ট্যাঙ্ক নিয়ে। দমকলের এক অফিসার জানান, স্টুডিওর একতলায় ছিল নাচের একটি রিয়্যালিটি শোয়ের সেট। সম্ভবত সেখানেই প্রথম আগুন লাগে।
একতলা বাদে ‘আর কে’ স্টুডিওর বাকিটা অবশ্য মোটামুটি অক্ষত। তবে বিকেল পর্যন্তও ধিকিধিকি জ্বলছিল আগুন। এক কর্মী বলেন, ‘‘আমরা গত সপ্তাহে এখানে শ্যুটিং করেছিলাম। পরের শ্যুটিং ২৯ বা ৩০ সেপ্টেম্বর হওয়ার কথা রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের সময়ে সেটটি তালাবন্ধ অবস্থায় ছিল। তবে এই দুর্ঘটনার পরেও নির্ধারিত সময়েই শো’টি শুরু হবে।’’
১৯৪৮ সালে রাজ কপূর তৈরি করেছিলেন তাঁর এই স্টুডিও। ‘আর কে’-র ব্যানারে এখানেই তৈরি হয় ‘আগ’, ‘বরসাত’, ‘আওয়ারা’, ‘মেরা নাম জোকার’, ‘ববি’, ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’, ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’-র মতো ছবি। ১৯৮৮ সালে রাজের মৃত্যুর পরে স্টুডিওর মালিকানা পান বড় ছেলে রণধীর। ‘আর কে’-র ব্যানারেই হয়েছিল ঋষির পরিচালিত ছবি ‘আ আব লওট চলে’, ছোট ভাই রাজীবের তৈরি ‘প্রেম গ্রন্থ’।
ফেলুদার সিনেমায় দেখা গিয়েছিল, এই স্টুডিও চত্বরে প্রথম বার পা রেখে ভাবুক হয়ে যাচ্ছেন স্বয়ং লালমোহনবাবু! আজকের আগুনে অনেকেরই বিচলিত হওয়াটা তাই হয়তো অস্বাভাবিক নয়।
‘আর কে’ বলে কথা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy