coronavirus

করোনার ফাঁদে গৃহবন্দি টলিপাড়ার ‘লাভ-বার্ডস’, কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন তাঁরা?

শুটিং ফ্লোর ছেড়ে হঠাৎই শান্তিনিকেতন যাওয়ার প্ল্যান করছেন অভিনেত্রী মানালি দে। রাজকে আরও কাছ থেকে পেতে চাইছেন শুভশ্রী। এই প্রথম বার জন্মদিনে আদৌ কেক কাটতে পারবেন কী না ভাবছেন ঐন্দ্রিলা, গৌরবকে আদর করে খাওয়াতে রান্না শিখছেন দেবলীনা—করোনা আতঙ্কে ঘরবন্দি ‘লাভ বার্ডস’দের অন্দরের প্রেমকাহিনি শুনল আনন্দবাজার ডিজিটাল। শুটিং ফ্লোর ছেড়ে হঠাৎই শান্তিনিকেতন যাওয়ার প্ল্যান করছেন অভিনেত্রী মানালি দে। রাজকে আরও কাছ থেকে পেতে চাইছেন শুভশ্রী। এই প্রথম বার জন্মদিনে আদৌ কেক কাটতে পারবেন কী না ভাবছেন ঐন্দ্রিলা, গৌরবকে আদর করে খাওয়াতে রান্না শিখছেন দেবলীনা—করোনা আতঙ্কে ঘরবন্দি ‘লাভ বার্ডস’দের অন্দরের প্রেমকাহিনি শুনল আনন্দবাজার ডিজিটাল।

Advertisement

বিহঙ্গী বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ১৮:১৫
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

রাজ-শুভশ্রী

Advertisement

কাল থেকে মোটামুটি দু’জনেই বাড়িতে সময় কাটাবেন। “আমাদের মতো ‘সেল্ফ এমপ্লয়েড’দের জন্য এই ছুটি কাম্য নয়। তেরো দিন রোজগার থাকবে না আমাদের। কী আর করব? তবে শুভশ্রী আজ থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আমার সব কাজের বন্ধুদের লিখছে, ‘তোমরা বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ কর।’ ও চায় কাজের বন্ধুদের দেখাদেখি আমিও আর বাড়ি থেকে বেরোব না। এমনিতেই ঘরে থাকতে ভালবাসে শুভ। এখন তো আমাকেও পাবে, একেবারে সোনায় সোহাগা”, বললেন রাজ। মোদ্দা কথা, দু’জনেই গল্পের বই পড়ে , আগামী ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে আলোচনা করে, কাছাকাছি থেকে দিন কাটাবেন।

Advertisement

ঐন্দ্রিলা-অঙ্কুশ

ওঁদের কথা ছিল ইয়োরোপ যাওয়ার। কিন্তু সে প্ল্যান ক্যানসেল হয়েছে আগেই। দু’জনেই কার্যত গৃহবন্দি। ঐন্দ্রিলার জন্মদিন আগামী ৩১মার্চ। বললেন, “এই প্রথম বার হয়তো বাড়িতেই একটা কেক না কেটেই জন্মদিন পালন করতে হবে আমায়। আমি আর অঙ্কুশ প্রথম যে দিন সিদ্ধান্ত নিলাম ইয়োরোপ যাচ্ছি না, কেঁদে ফেলেছিলাম। এত শখ ছিল। সব ভেস্তে গেল।” নিজেই বললেন, “এমনিতে ছুটি-ছাটা থাকলে আমরা দু’জন লংড্রাইভ যাই, সিনেমা দেখি—সে সবেরও উপায় নেই।” আপাতত বাড়িতেই থাকছেন তিনি। এই যেমন দু’দিন আগে অঙ্কুশ এসেছিলেন বাড়ি। ‘কোথাও যাওয়ার নেই, কিচ্ছু করার নেই’। কী করবেন? দু’জনে মিলে নেটফ্লিক্সে সিনেমা দেখেছেন। বাড়িতেই থাকছেন অঙ্কুশ । যদিও এরই মধ্যে তিন-চারটে ছবির চিত্রনাট্যও পড়ে ফেলেছেন তিনি। জন্মদিনে কী করবেন এখনও জানেন না ঐন্দ্রিলা। তবে আশেপাশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে একটা গ্র্যান্ড ট্যুর যে করবেনই করবেন—সে কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ঐন্দ্রিলা।”

মানালি-অভিমন্যু

একইসঙ্গে এত দিনের ছুটি শেষ কবে পেয়েছেন, বা আদৌ পেয়েছেন কী না, তা মনে করতে পারেন না টেলিপাড়ার পরিচিত মুখ এবং এই মুহূর্তে ‘নকশি কাঁথা’ ধারাবাহিকের কেন্দ্রীয় চরিত্র মানালি দে। কী করবেন তিনি? বললেন, “সত্যি বলতে ঠিক করিনি। আমাদের শান্তিনিকেতনে নিজেদের একটা বাড়ি রয়েছে। খুব কাছের বন্ধুরা মিলে সেখানে যেতে পারি হয়তো। কী জানি, দেখি”। আর অভিমন্যু? ব্যস্ততা মাখা জীবনে তিনিও কি অবসর যাপন করছেন? না। একেবারেই নয়। শুট বন্ধ ঠিকই। কিন্তু পরিচালনা নিয়ে রীতিমতো পড়াশুনা করছেন তিনি। শান্তিনিকেতন যদি যাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে হয়তো তিনিও দোসর হতে পারেন। তবে এখনও পর্যন্ত সব কিছুই আলোচনা পর্যায়ে।একদম বাড়িতে বসে যাওয়াটা যে বেশ চাপের সে কথা মেনেই নিয়েছেন মানালি। কিন্তু উপায় কী? ক’দিন তো মানতেই হবে সতর্কতা।

তৃণা-নীল

‘কলের বউ’, ‘খোকাবাবু’ প্রভৃতি ধারাবাহিকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা তৃণাও আপাতত বাড়িতেই। বয়ফ্রেন্ড ‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের নীল গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত শুটিং করেছেন।তবে আজ থেকে তাঁরও ছুটি। কী করছেন ওঁরা? তৃণা বললেন, “অনেক দিন ধরেই বাবা-মায়ের অভিযোগ যে মেয়ে কিছুতেই সময় দিচ্ছে না। ভালই হবে এ’ কদিন বাবা-মাকে এতটাই সময় দেব যে, বাবা-মা’ও বাধ্য হয়ে বলবে ‘যা, এ বার তুই শুটিংয়ে যা’। একই সঙ্গে টেকনিশিয়ান, জুনিয়র আর্টিস্ট যাঁদের ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ তাঁদের জন্যও যে চিন্তায় আছেন তৃণা, সে কথাও জানালেন। বাড়িতে বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার প্ল্যান রয়েছে তৃণার। থাকবেন নীলও। সিনেমা দেখতে ইচ্ছা হলেও তাঁর উপায় নেই। জানিয়ে দিলেন, বাবা-মা একদমই সম্মতি জানাবে না। তাহলে? “এমন একটা সময় যে দু’জনে মিলে কোনও ছুটি কাটানোর প্ল্যান করব, সেটাও তো হবে না। তিন-চার দিনের ছুটি ইজ ফাইন। কিন্তু একসঙ্গে এত দিনের ছুটি কী যে করব, জানি না। একঘেয়েমি চলে আসাটা স্বাভাবিক। কিন্তু পরিস্থিতি যেটা করাচ্ছে সেটাই তো করতে হবে।”

দেবলীনা-গৌরব

সেলিব্রিটি জুটি দেবলীনা কুমার এবং গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের হাতেও এখন বেশ খানিকটা সময় রয়েছে। দেবলীনা বললেন, “এ রকম ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে ছুটি কাঙ্ক্ষিত নয় একেবারেই। রান্না করতে পারি না আমি, তাই ছুটি যখন পেয়েছি তখন গৌরবে জন্য আরও ভাল ভাল রান্না করতে শিখব। খুব খারাপ ছবি আঁকি আমি। এই সুযোগে একটু আঁকাও শিখে নেব।” যদিও দেবলীনা যে রান্না করতে পারেননা সে কথা মানতে নারাজ গৌরব। বললেন, “ও তো বেশ ভালই রাঁধে। ওঁর হাতের গাজরের হালুয়া, পায়েস খেয়েছি—খুবই ভাল। তবে রান্না শিখবে যখন বলেছে ভালই হল। আরও নতুন কিছু খেতে পারব।” তবে চারিপাশের পরিস্থিতি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন ওঁরা দু’জনেই। সব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাক, এটাই চাইছেন তাঁরা।

দোলন-দীপঙ্কর

এমনিতেই ফুসফুসে জল জমার সমস্যা রয়েছে দীপঙ্কর দে-র। তাই স্ত্রী দোলন তাঁকে এ সময়ে কড়া নজরদারিতে রেখেছেন। বাইরের কাউকে ঘরে ঢুকতে দিচ্ছেন না। বললেন, “আমি তো খবরের কাগজও স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে দিচ্ছি।” কী করবেন এই ছুটিতে সত্যি জানেন না দোলন। “পুজোর সময় চার দিন মতো ছুটি পাই। কিন্তু এই এত দিনের ছুটি তো আগে পাইনি সে ভাবে। নিজেও বুঝছি না কী করব। বাড়িতে কাজের ক্ষেত্রে যে দিদি সাহায্য করেন তিনিও ছুটিতে। তাই বাড়ি পরিষ্কার করা থেকে রান্নাবান্না সব কিছু আমাকেই করতে হচ্ছে আপাতত। যখন বাড়ি পরিষ্কার করা শেষ হয়ে যাবে তখন ভাবব এর পর কী করা যায়”, হাসলেন দোলন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন