Tonic

Tonic: কম সংখ্যক হল, কম দামের টিকিটেও গুছিয়ে ব্যবসা ‘টনিক’-এর, জোর টক্কর রণবীরের ‘৮৩’কে

২৪ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে অভিজিৎ সেনের ‘টনিক’। লকডাউনের পর পরিবার কেন্দ্রিক বাংলা ছবি দেখতে ফের হলমুখী দর্শক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:২৫
Share:

‘টনিক’ টক্কর দিচ্ছে ‘৮৩’কে

বাংলা ছবির দুনিয়ায় নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে ‘টনিক’— আনন্দবাজার অনলাইনে এ কথা আগেই হলফ করে লিখেছিলেন পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী। ছবি মুক্তির প্রায় এক সপ্তাহের মাথায় একই কথা বলছে বক্স অফিসের হিসেব। ব্যবসার নিরিখে কবীর খানের ‘৮৩’-এর থেকে খুব পিছিয়ে নেই দেব এবং পরান বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনীত ‘টনিক’। বলাই যায়, রণবীর সিংহ, দীপিকা পাড়ুকোনের মতো হেভিওয়েট তারকাদের নিয়ে তৈরি ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের আখ্যানকে এক প্রকার চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল হাল্কা চালের ‘টনিক’। তবে কি এ বার দক্ষিণী ছবির সঙ্গেই টলিউডও টক্কর দেবে বলিউডকে?

Advertisement

গত ২৪ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে অভিজিৎ সেন পরিচালিত ‘টনিক’। লকডাউনের পর পরিবার কেন্দ্রিক বাংলা ছবি দেখতে ফের হলমুখী দর্শক। টিকিট কাটার অ্যাপ ‘বুক মাই শো’ বলছে, আপাতত ‘টনিক’-এর বেশ কয়েকটি শো হাউজফুল। সুতরাং অতনু রায়চৌধুরী এবং দেব প্রযোজিত ছবিটির ভাঁড়ার যে বেশ টইটুম্বুর, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না!

বাণিজ্য বিশ্লেষক পঙ্কজ লাডিয়ার কথায়, “টনিক এখনও পর্যন্ত অতিমারি কালের সবচেয়ে সফল বাংলা ছবি। বক্স অফিসে ‘৮৩’-র থেকে বেশি অর্থ এই ছবি সংগ্রহ করতে পারেনি ঠিকই। কিন্তু দর্শক এই ছবি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। এক-একটি প্রেক্ষাগৃহে ৭৫-৮০% শতাংশ দর্শকাসন ভরে যাচ্ছে। ‘৮৩’-র ক্ষেত্রে কিন্তু তা দেখা যাচ্ছে না। এ বছর এখনও পর্যন্ত যত বাংলা ছবি মুক্তি পেয়েছে, সেগুলির মধ্যে ‘টনিক’ সফলতম।”

Advertisement

‘টনিক’-এর জন্য ভিড় উপচে পড়ছে, এ দিকে লক্ষ্মীলাভের নিরিখে বাজিমাত করছে ‘৮৩’। দু’য়ে দু’য়ে ঠিক চার করা যাচ্ছে না তো? পঙ্কজের ব্যাখ্যা, “হিন্দি ছবি ‘৮৩’ বেশি সংখ্যক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এই ছবির টিকিটের দামও অনেক বেশি। আবার শোয়ের সংখ্যাও ‘টনিক’-এর তুলনায় বেশি। বাংলা ছবির টিকিটের দাম এত বাড়িয়ে দিলে হয়তো মানুষ ছবিটি দেখতে আসবেন না। তাই ‘৮৩’ ব্যবসার দিকে ‘টনিক’-এর থেকে খানিক এগিয়ে।” কিন্তু কম সংখ্যক প্রেক্ষাগৃহে, কমদামি টিকিটেও যে বাজিমাত করা যায়, তা হাতেনাতে প্রমাণ দিচ্ছে 'টনিক'।

‘টনিক’ ছবির জন্য প্রেক্ষাগৃহ পেতে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে প্রযোজক দেবকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা-প্রযোজক জানান, ‘বুড়োদের নিয়ে তৈরি ছবি’ বক্স অফিসে মার খাবে বলে ধরে নিয়েছিলেন অনেকেই। সেই ‘টনিক’ই আপাতত সব হিসেব ওলটপালট করে ২০২১-এর সব চেয়ে সফল বাংলা ছবি। নতুন প্রাণ এনে দিয়েছে টলিউডেও।

ছবির এমন সাফল্যে খুশি দেব। তিনি মনে করেন, ছবির গল্প ভাল হলে সব বাধাবিপত্তি পেরিয়েই তা সাফল্যের মুখ দেখবে। সহমত ছবির পরিচালক অভিজিৎ সেনও। তাঁর কথায়, “ছবির বিষয় শেষ কথা বলবে। গল্প ভাল হলে দর্শক তা দেখতে নিশ্চয়ই প্রেক্ষাগৃহে আসবেন। ‘টনিক’-এর অনেক শো আপাতত হাউজফুল। এই ছবিটা আমরা খুব ভালবেসে তৈরি করেছি। প্রত্যাশাও ছিল অনেক। এখন ‘টনিক’-কে এই বছরের সফলতম বাংলা ছবি বলা হচ্ছে। পরিচালক হিসেবে এর চেয়ে বেশি আনন্দের আর কী হতে পারে!”

ছবির অন্যতম অভিনেতা পরান বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, বহু দিন পরে মনের মতো ছবির হদিশ পেয়েছেন দর্শক। তাঁদের উৎসাহেই একাধিক অসুবিধার সম্মুখীন হয়েও হিন্দি ছবিকে জোর ‘টক্কর’ দিতে পারছে টনিক। বর্ষীয়ান অভিনেতা বলেন, “দীর্ঘ দিন পর উপোসী দর্শক মনের মতো কিছু একটা পেয়েছেন। ছবি দেখে তাঁরা আনন্দ পেয়েছেন। পেয়েছেন বিনোদন এবং নান্দনিক অনুভূতি। ইন্ডাস্ট্রির পক্ষেও তা শুভ। ‘টনিক’-এর একজন সদস্য হিসেবে তাই আমার খুবই আনন্দ হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন