Sirsha Guha Thakurta

নির্ভেজাল রম-কম ধারার ছবি কেন বেশি বানানো হয় না আজকাল, সেটা আমি জানি না: শীর্ষা 

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি ‘দো অউর দো প্যার’। রুমা গুহঠাকুরতার সম্পর্কে দেওরঝি শীর্ষা গুহঠাকুরতা। বিজ্ঞাপনের জগৎ থেকে ছবি পরিচালনায় কী ভাবে এলেন তিনি, শুনল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১৭
Share:

শীর্ষা গুহঠাকুরতা।

প্রশ্ন: প্রথম ছবি মুক্তি পাওয়ার পর সমালোচকদের শংসাপত্র পেয়ে আপনি খুশি?

Advertisement

শীর্ষা: চার বছরের অপেক্ষার অবসান। বাচ্চা প্রসবেও এত সময় লাগে না। আর যত ক্ষণ ছবি মুক্তি পাচ্ছিল না, আমরা কেউই ছবির মূল্যায়ন করতে পারছিলাম না। প্রথম ছবিতে বিদ্যা বালন, প্রতীক গান্ধী, সন্ধিল রামমূর্তি, ইলিয়ানা ডিক্রুজ়ের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুব ভাল ছিল। তাঁরা কোনও ভাবেই আমাকে বুঝতে দেননি যে আমি নবাগত।

প্রশ্ন: ‘দো অউর দো প্যার’-এর সূত্রপাত কবে হয়েছিল?

Advertisement

শীর্ষা: সবচেয়ে আগে ছবির প্রযোজক ‘এলিপসিস এন্টারটেনমেন্ট’-এর প্রতিনিধিরা ‘দো অউর দো প্যার’-এর একটা প্রাথমিক ধারণা নিয়ে বিদ্যার (বালন) সঙ্গে দেখা করেছিলেন। প্ৰথম সাক্ষাতের সময়ই, বিদ্যা তাঁর সম্মতি দিয়ে দেন। কিন্তু নির্দিষ্ট ভাবে বলে দেন, যেন আমরা পরবর্তী সাক্ষাতে ‘ফাইনাল স্ক্রিপ্ট’ নিয়ে আসি। ছবির প্রযোজকই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ছবি বানানোর প্রস্তাব দেন। এর পর আমি আমার ‘রাইটিং টিম’-এর সঙ্গে বসে একটা পাকাপাকি স্ক্রিপ্ট লিখে ফেলি আর সেটা বিদ্যাকে শোনাই।

‘দো অউর দো প্যার’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: প্রতীক গান্ধীর চরিত্রায়ন নিয়ে মনে কোনও সংশয় ছিল?

শীর্ষা: একদম প্রথম দিন থেকেই প্রতীক, বিদ্যার সঙ্গে কাজ করার জন্য উদ্‌গ্রীব ছিল। এর আগে প্রতীক প্রেম-কৌতুকের ছবি কোনও দিন করেননি। তাই খুব স্বাভাবিক ছিল সেই উৎসাহটা। এর পর আমরা এক দিন বিদ্যার বাড়িতে সবাই দেখা করি। প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, প্রতীক আর বিদ্যাকে একই ফ্রেমে দেখা, কেমন মানাচ্ছে দু’জনকে। সন্ধিল আর ইলিয়ানার চরিত্রায়নের পিছনেও অনেক চিন্তাভাবনা করা হয়েছিল। শুধু ছবির চরিত্রায়নে আমরা দেড় বছর সময় নিয়েছিলাম।

প্রশ্ন: এক জন বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও ছবিতে আমরা তামিল ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের রীতিনীতি-প্রথা বেশি দেখেছি। রাখঢাক না রেখে সত্যি বলুন তো, আপনার মধ্যে কি বাঙালিয়ানার কমতি আছে?

শীর্ষা: আসলে ভাষা বা প্রাদেশিক গুরুত্বের থেকে গল্প বলাটা বেশি জরুরি মনে হয়েছিল। ছবিতে বিদ্যার পারিবারিক খুঁটিনাটি জানানোর অপরিহার্যতা বেশি ছিল। প্রথমে আমরা প্রতীকের চরিত্রটাকে পঞ্জাবি বানাব ভেবেছিলাম। কারণ দক্ষিণী আর পঞ্জাবিদের মধ্যে সামাজিক এবং রুচিগত অমিল অনেক, কিন্তু পঞ্জাবি চরিত্রে প্রতীককে মানাত না।

প্রশ্ন: আপনার জীবনে গুহঠাকুরতা পরিবারের কী অবদান?

শীর্ষা: একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয়েছি, রুমা গুহঠাকুরতা আমার জেঠিমা, ভীষ্ম গুহঠাকুরতা আমার কাকা। বাবা শ্রীরূপ গুহঠাকুরতা বিজ্ঞাপনের ছবি বানান। মা-বাবা এবং পরিবারের সবার থেকে সব সময় অনুপ্রেরণাই পেয়েছি।

প্রশ্ন: প্রথম ছবির পর সবারই কৌতূহল থাকে এর পর কী। এই নিয়ে আপনার কী প্ল্যান?

শীর্ষা: বিজ্ঞাপনের জন্য ছবি আর বড় পর্দার জন্য ছবি বানানোর পদ্ধতি এবং অভিজ্ঞতা দুটোই খুব আলাদা। ৩০ সেকেন্ড-এক মিনিটের বিজ্ঞাপন আর দু’ঘণ্টা ২০ মিনিটের ছবি বানানোর মধ্যে আকাশপাতাল তফাত। আমার কাছে এটা একটা খুব বড় লাফ নেওয়ার মতো ছিল। পরবর্তী ছবি বাছার সময় কোনও তাড়াহুড়ো করব না। চারিত্রিক ভিন্নতা এবং ভেদাভেদ আমার খুব প্রিয় বিষয়। সত্যজিৎ রায়, স্যাম মেন্ডিস, আলেকজান্ডার পেন আমার প্রিয় পরিচালকদের মধ্যে কয়েক জন। হিন্দি ছবিতে এখন বেশির ভাগ সময় আমরা মারপিট নয়তো আত্মজীবনীমূলক বিষয় দেখতে পাই। নির্ভেজাল রম-কম ধারার ছবি কেন বেশি বানানো হয় না, সেটা আমি জানি না।

প্রশ্ন: বাংলা ছবি বানাবেন না?

শীর্ষা: আমার মাতৃভাষা বাংলা আর আর চিন্তাও করি বাংলাতে, অদূর ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই বানাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন