Entertainment News

‘রসগোল্লা’র আড্ডায় চলুন, খোদ নবীন দাসের বাড়িতে

বিষয়টা একটু খোলসা করা যাক। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হেঁশেলে পাভেল যে ‘রসগোল্লা’ তৈরি করছেন, তার খবর আপনাদের আগেই দিয়েছিলাম। দুধ, ছানা, চিনি দিয়ে পাক দেওয়ার কাজ চলছে।

Advertisement

স্বরলিপি ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:০০
Share:

‘রসগোল্লা’র নবীন এবং ক্ষীরোদ।

বসন্তের বিকেল। উত্তর কলকাতার বাগবাজারে বিখ্যাত ‘রসগোল্লা বাড়ি’র উল্টোদিকে গাড়ি থামল। পুরনো দিনের সিঁড়ি পেরিয়ে দোতলায় পৌঁছলাম। সাবেকি বৈঠকখানায় বসার আয়োজন। এ বাড়ির কড়িবরগা, দালান, খোলা ছাদে জড়িয়ে আছে বাংলায় রসগোল্লার আবিষ্কারক নবীনচন্দ্র দাসের স্মৃতি। এ বাড়ি তাঁরই। আর ‘রসগোল্লা বাড়ি’র বৈঠকখানায় জমায়েতের কারণও তিনি।

Advertisement

বিষয়টা একটু খোলসা করা যাক। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হেঁশেলে পাভেল যে ‘রসগোল্লা’ তৈরি করছেন, তার খবর আপনাদের আগেই দিয়েছিলাম। দুধ, ছানা, চিনি দিয়ে পাক দেওয়ার কাজ চলছে। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ডেসার্ট হিসেবে সিনেপ্রেমীদের পাতে পড়তে চলেছে ‘রসগোল্লা’। তার আগে মূল কারিগর অর্থাত্ ছবির নায়ক-নায়িকার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিলেন পরিচালক। আর সেই বৈঠকী আড্ডা হল খোদ নবীনচন্দ্র দাসের বাড়িতেই।

আড্ডার মুখরা ধরলেন নবীনচন্দ্র দাসের উত্তরপুরুষ ধীমান দাস। ‘‘এই বছরই রসগোল্লার ১৫০ বছর। আর এই ছবিটাও হল। রসগোল্লা নিয়ে ফুল ফিচার্ড ফিল্ম এর আগে হয়নি। আমাদের সত্যিই খুব ভাল লাগছে। পাভেল যখন প্রথমে এসেছিল, আমি জানতে চেয়েছিলাম এই ছবি প্রডিউস কে করবে? আমরা তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পারি’’ বললেন ধীমান।

Advertisement

আরও পড়ুন, দেবলীনা কি আপনার গার্লফ্রেন্ড? মুখ খুললেন গৌরব

ব্যাটন, থুড়ি মাইক এ বার পাভেলের হাতে। ‘‘সত্যিই ধীমানবাবু বলেছিলেন, আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু টাকা দেবে কে? আমি বলেছিলাম দেখা যাবে। তার পর শিবুদাকে ওয়ান লাইনার শুনিয়েছিলাম। রসগোল্লা আবিষ্কারের গল্প। নবীনচন্দ্র আর ক্ষীরোদমণি দেবীর গল্প। শিবুদা বলেছিলেন, আই উইল গ্যাম্বেল ইট। তার পর তো একে একে নন্দিতাদি, অতনুদাকে স্ক্রিপ্ট শোনালাম। কাস্ট হল। রসগোল্লার কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ। আমার বিশ্বাস যত দিন বাঙালি থাকবে, তত দিন রসগোল্লাও থাকবে। আর অ্যাক্সিডেন্টালি আমার নামটাও সেখানে জড়িয়ে গেল। এর থেকে বেশি কিছু বললে আমার চোখ দিয়ে রস গড়াতে পারে…।’’

পাভেলের কথার মধ্যেই বৈঠকখানায় এসে দাঁড়াল ধুতি-পাঞ্জাবিতে সজ্জিত এক যুবক। আর তার পিছন পিছন লাজুক ভঙ্গিতে গয়না পরা, ঘোমটা দেওয়া এক অল্পবয়সী বউ। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, নন্দিতা রায় আলাপ করিয়ে দিলেন। এঁরাই এই ছবির নায়ক নায়িকা। উজান এবং অবন্তিকা।

আরও পড়ুন, ঋত্বিকের সঙ্গে ঝামেলা? মুখ খুললেন অরিন্দম

শিবপ্রসাদ শেয়ার করলেন, ‘‘কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে সব সময় সেরা তাস ফেলেন নন্দিতা রায়। আমরা যখন নবীনচন্দ্র কে হবেন, সেই চিন্তা করছি তখন নন্দিতাদিই বলেন, তোমরা উজানের কথা ভাবছ না কেন? আর অনেক অডিশন, অনেক ওয়ার্কশপের পর ক্ষীরোদের ভূমিকায় অবন্তিকাকে বেছে নিয়েছিলাম।’’

উজানের একটা অন্য পরিচয়ও রয়েছে। তিনি পরিচালক তথা অভিনেতা জুটি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেলে। এটাই তাঁর প্রথম ছবি। ‘‘আমি নবীন। সত্যিই নবীব। মানে নিউ কামার’’ এ ভাবেই আলাপের শুরু করলেন উজান। তাঁর কথায়, ‘‘বাঙালি মাত্রই রসগোল্লা ভালবাসেন। স্টার্টার, মেনকোর্সের পর ডেজার্ট খাই আমরা। তেমনই ২০১৮-এর সিনেমার ক্ষেত্রে অনেক স্টার্টার, মেনকোর্সের পর ডেজার্ট হিসেবে রসগোল্লা পাবেন। এনজয় করবেন। আর একটাই কথা, আমাদের আনন্দরস যেন গোল্লায় না যায়।’’ অবন্তিকার কথায়, ‘‘শুটের আগে সব সময় শাড়ি পরে থাকতাম আমি। সে সময়ের ভাষা প্র্যাকটিস করতাম। যাতে শুটিংয়ে অসুবিধে না হয়। আর ক্ষিরোদমণি দেবী যেমন, আমিও অনেকটা সে রকম। তাই অভিনয় করতে আরও ভাল লেগেছে।’’

আরও পড়ুন, সত্যি ঘটনার কথা বলবে ‘ক খ গ ঘ’?

গোটা অনুষ্ঠানের সূত্রধর ছিলেন শিবপ্রসাদ। এ ছবির চালিকাশক্তিও তাঁর হাতে। কারণ শিবপ্রসাদ-নন্দিতার উইন্ডোজ প্রোডাকশনস্-এর কারখানাতেই তৈরি হচ্ছে ‘রসগোল্লা’। তাই শেষ কথাটা বেঁধে দিলেন শিবপ্রসাদ। ‘‘রসগোল্লায় বাংলা সিনেমা এক নতুন জুটিকে পাবেন। ভীষণ মিষ্টি একটা গল্প। আমি বিশ্বাস করি, ২০১৮-র সবচেয়ে অ্যাম্বিশাস ছবি হতে চলেছে এটা’’— বললেন প্রযোজক।

ছবি ও ভিডিও: মৃণালকান্তি হালদার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন