কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য।
তিনি শিলচরের ভূমিপূত্র। পড়াশোনা এবং গানের সূত্রে বসত ছিল কলকাতায়। তবে আজীবন বুকে লালন করেছেন মাটির ঘ্রাণ। তাঁর লেখায়, গানে ফিরে এসেছে পড়শি মনের গল্প। তিনি প্রয়াত গায়ক তথা সঙ্গীত পরিচালক কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য। এ বার প্রকাশ্যে এল কালিকাপ্রসাদের ‘জবানবন্দি’।
১৯৬১ সালের ১৯ মে অসমের শিলচর শহরে মাতৃভাষা সুরক্ষার লড়াই - এ শহিদের মৃত্যুবরণ করেন ১১ জন বাংলা ভাষাভাষী মানুষ। স্বাধীন ভারতে এই ছিল প্রথম ভাষার লড়াই, ভাষার জন্য শহিদের আত্মবলিদান। তারপরেও '৭২ এ একজন, '৮৬তে দুজন এবং '৯৬তে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষার দাবিতে আরও এক তরুণী শহিদ হন। যার জন্য অনেকে ওই ভূমিকে ভাষা শহিদের ভূমি বলেন। আজও মাতৃভাষার জন্য ও অস্তিত্ব রক্ষার জন্য লড়ে যেতে হচ্ছে ওই ভূমির বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের। ওই বাংলারই ভূমিপুত্র কালিকাপ্রসাদের জবানবন্দি আজ খুব প্রাসঙ্গিক।
‘বাংলা আমার ফতেমা বিবি, বাংলা আমার রাধা…’— কালিকার কলম লিখেছিল এই ‘জবানবন্দি’। তাঁর স্ত্রী ঋতচেতা বললেন, ‘‘ভাষা শহিদ দিবসের কথা মনে রেখেই এই কবিতাটা কালিকা লিখেছিল। সঙ্গে পুরনো অ্যালবাম থেকে নেওয়া একটা গান। এই দু’টো নিয়ে একটি ভিডিও গত ১৭মে ইউটিউবে রিলিজ করা হয়েছে। ১৯মে-র আগে এটা দোহারের প্রয়াস।’’
দোহারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাজীব বললেন, ‘‘দোহারের জন্মলগ্ন থেকেই সারা বিশ্বে আমরা আমাদের ভাষা-শহিদের এই পূণ্য ভূমির কথা সারা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কারণ দোহারের দুই জন্মদাতার জন্মভূমিই ছিল বরাক উপত্যকা। কিন্তু আমার মুখের ভাষা বাংলা।তার জন্যেই দলের জন্ম কলকাতাতে হলেও শেকড় কিন্তু বাঁধা ছিল সেই বরাকের মাটিতে। আমরা যাকে বলি বাংলা ভাষার তৃতীয় ভুবন।কারণ, বরাক ভূমি কোনও বঙ্গেরই অন্তর্ভুক্ত নয়। কালিকাদার সেই প্রয়াসকেই আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।"
শিলচরে ১৯-শের প্রস্তুতি। ছবি সৌজন্যে রাজীব।
দোহারের ’১৯-শের ডাক’ অ্যালবামে বাউল শাহ আবদুল করিমের এই গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল। এতদিন অপ্রকাশিত ছিল কালিকার লেখা ‘জবানবন্দি’। এতদিন পরে ‘দোহার’ তা প্রকাশ্যে নিয়ে এল।