লীনা
বছর তিনেক আগে তাঁর ছবি ‘পার্চ়ড’ শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। গ্রামের চার মেয়ের জীবন, জীবিকা, সংসার, নিপীড়নের সেই মনকাড়া গল্প নিয়ে এখনও বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে আমন্ত্রণ পান পরিচালক লীনা যাদব। তাঁর পরের ছবি ‘রাজমা চাওল’। যেখানে অভিনয় করছেন ঋষি কপূর, অময়রা দস্তুর, অনিরুদ্ধ তনওয়ার। লীনা বলছিলেন, ‘‘বিবেক আচার্য গল্পটা লিখেছিলেন। চারপাশে যেখানেই দেখুন, রেস্তরাঁয় বা রাস্তাঘাটে— লোকে সব সময়ে নিজেদের ফোনে কিছু না কিছু করছে! কিন্তু একে অপরের সঙ্গে কথা বলছে না। সেখান থেকেই আইডিয়াটা আরও পাকাপোক্ত হয়।’’
গল্পের মূলে রয়েছে বাবা-ছেলের সম্পর্ক। যেখানে কমিউনিকেশন গ্যাপ খুবই সাধারণ ব্যাপার। লীনা বললেন, ‘‘কিন্তু ‘রাজমা চাওল’-এ ইন্টারেস্টিং বিষয়টা হল, মা মারা যাওয়ার পরে বাবা-ছেলের কমিউনিকেশন আরও কমে যায়। তার জায়গা নেয় সোশ্যাল মিডিয়া। যেখানে বাবাদের জেনারেশন কথা বলায় বিশ্বাসী ছিল, সেখানে ছেলেদের জেনারেশন চ্যাট করায় বিশ্বাসী! তাই বাবাও ছেলের কাছে পৌঁছতে চ্যাট করা শুরু করে। এর চারপাশে একটা লাভস্টোরিও বোনা হয়েছে। তবে এখানে ঠিক-ভুলের বিচার নেই। বরং বোঝানো হয়েছে, সময়টা বদলে গিয়েছে। ফলে আমাদেরও একটা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এটাও মাথায় রাখতে হবে, পুরনো মূল্যবোধ মানেই সেটা খারাপ নয়। ‘সরি’ লিখে টেক্সট করার চেয়ে সামনে দাঁড়িয়ে ‘সরি’ বলার উপযোগিতা অনেক বেশি।’’
ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে নেটফ্লিক্সে। হলে মুক্তি না পাওয়ায় অসুবিধে নেই? লীনার উত্তর, ‘‘নেটফ্লিক্স থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। ওরা গল্পটা শুনে ইন্টারেস্টেড হয়। আমরাও ভেবে দেখি, যেহেতু ছবির কনসেপ্ট এখনকার, তাই এই সময়কার একটা প্ল্যাটফর্মে ছবিটা দেখা গেলে সেটার গুরুত্ব অনেক।’’ ঋষির সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বক্তব্য, ‘‘খোলামেলা কথা বলেন। এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে আছেন বলে ওঁর জ্ঞান প্রচুর। সেটা সম্পাদনার বিষয়ে হতে পারে, মেকিংয়ের ব্যাপারে হতে পারে। আবার নতুন জিনিস দেখলে বাচ্চাদের মতো উৎসাহও পান।’’
‘পার্চ়ড’-এর সাফল্য এখনও তাঁকে অবাক করে। দর্শক যে ছবির বিষয়টার সঙ্গে রিলেট করতে পারবেন, লীনা ভাবেননি। মিটু আন্দোলন নিয়ে বললেন, ‘‘পরিবর্তন এসেছে বলেই এই আন্দোলনটা হল। এখন আমাদের আরও দায়িত্ববান হতে হবে। আমার মতে, মেয়েরা এই ঘটনাগুলোর পরে যে অপরাধবোধে ভোগে, সেটাও এ বার কেটে যাওয়া উচিত।’’