ভ্যালেনটাইন্স ডে এল। চলেও গেল। এই দিনটায় মনের কথা প্রকাশ করে আনন্দ পান অনেকেই।
রোম্যান্সের এই সূত্র ধরেই আসি অফিস রোম্যান্সের কথায়।
অফিস তো কাজের জায়গা। সেখানে প্রেম হয় কেন? আসল কথা অফিসে অনেকটা সময় কাটায় সকলে। নারী-পুরুষের আলাপ থেকে ঘনিষ্ঠতা হয়ে যায়। কখনও অফিস ট্যুর, কখনও বা একসঙ্গে বসে সুখ-দুঃখের কথা বলা —এই সব থেকেই জন্ম নিতে পারে অফিস রোম্যান্স।
অফিসের রোম্যান্সের মধ্যে সব চেয়ে বেশি যেটা দেখা যায়, তা হল বস আর অধস্তন কর্মীর প্রেম। অথবা সহকর্মীদের মধ্যে প্রেম। অনেক সময় বিবাহিত সহকর্মীদের মধ্যেও মন দেওয়া নেওয়া হয়ে থাকে। এবং অবশ্যই এই সব সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত কোনও পরিণতি পায় না। প্রেমিক- প্রেমিকা ফিরে যায় নিজের ঘরে। অগত্যা।
বড় বড় সংস্থাতে দেখা যায় বসেরা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধস্তনের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হন। সেই সম্পর্ক মাঝে মাঝে পৌঁছায় যৌন হয়রানির দিকে। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে যেতে পারে তরুণ তেজপালের কথা। অধস্তনকে যৌন হয়রানি করার জন্য তার নাম খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল।
সমস্যাটা এখানে যে বসের নাগাল থেকে অধস্তন মহিলারা বেরিয়ে আসতে ভয় পান। পাছে বসের কোপ পড়ে তাদের ওপর।
কিন্তু এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে ইচ্ছা করলেই বেরিয়ে আসা যায়। তার জন্য অফিসের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বা এইচ আর বিভাগে অভিযোগ জানানো যেতে পারে। তবে যার বিরুদ্ধে নালিশ করছেন তার প্রতি কোনও রকম দুর্বলতা থাকা চলবে না।
তবে অফিসের প্রেম অনেক সময় বিয়ের দিকেও গড়িয়ে যায়। সেই ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা আছে। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই তখন একই অফিসের সমস্যা একসঙ্গে বাড়ি নিয়ে আসবেন। দ্বিতীয়ত স্বামী-স্ত্রী যদি সহকর্মী হন, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব থাকতে পারে। যেটা পরিবারের পক্ষে মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। তার পর বাচ্চা হলে একই অফিস থেকে কে ছুটি নেবেন মা না বাবা তাই নিয়েই গোলমাল বাঁধতে পারে। এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী দু’জনে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে একই অফিসে কাজ করে ঘর সংসার চালাতে হবে।
অফিস রোম্যান্সের আর এক দিকে রয়েছে ভঙ্গুর সম্পর্ক। অফিসের ভেতর প্রেম ভেঙে গেলে কাজের পরিবেশ নষ্ট হতে পারে। প্রেম ভেঙে গেলে প্রমোশনের সময় বস বিগড়ে যেতে পারেন। এই রকম ক্ষেত্রে প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে প্রেম ভেঙে যাওয়ার পর খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত। প্রাক্তন প্রেম নিয়ে অফিসের পরিবেশে ঝামেলা শুরু হলে প্রেমিক-প্রেমিকারা ডিপার্টমেন্ট বদল করতে পারেন। কিংবা শাখাও বদল করতে পারেন।
সুন্দরী সেক্রেটারি বসের প্রস্তাব মেনে নিলে সাবধান। খবরদার সেই সেক্রেটারিকে ইমেল বা এসএমএস পাঠাবেন না। এই চিঠি বা এস এম এস আপনার বিরুদ্ধে যেতে পারে। ইমেল বা এসএমএস থেকে যেতে পারে আপনাদের সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে। এই সব মেল বা এসএমএস নিয়ে বাড়িতে স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে গোলমাল শুরু হতে পারে।
কোনও ব্যক্তি যদি একতরফা ভাবে প্রস্তাব দেন, কিংবা যৌন হয়রানি করেন তা হলে অপরপক্ষ উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে নালিশ জানাতে পারেন। জানাতে পারেন এইচ আরকেও।
যদি দু’জনের সম্মতিতে সম্পর্ক হয় এবং সেটা যদি বাকি অফিসের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় তা হলে ঠিকই আছে। কিন্তু যদি বিয়ে করার কথা ভাবেন তা হলে একটা সমস্যা হতে পারে। সন্তান হওয়ার সময় একই অফিস থেকে কে ছুটি নেবেন তা ঠিক করে নিন।
ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক আর একটা সমস্যা। এর ফলে কাজের ক্ষতি হতে পারে। কোনও জুনিয়র যদি সম্পর্ক ভাঙে তা হলে তার প্রোমোশন নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে দু’জনেই পরিণত মনে সিদ্ধান্ত নেবেন, যাতে কাজের কোনও ক্ষতি না হয়।