ফ্লোরে কোনও টেকনিশিয়ান মাস্ক বা ফেসশিল্ড পরে না থাকলে শুটিং করেন না তিনি। 
indrani haldar

‘কলাকুশলীরা মরল না বাঁচল, তাতে কিছু এসে যায় না ফেডারেশনের’, সোজাসাপ্টা ইন্দ্রাণী

‘কে আপন কে পর’ প্রায় সাড়ে ছ’বছর চলেছিল। ওখানে গল্পের গরু গাছে উঠেছে: ইন্দ্রাণী হালদার

Advertisement

 ঈপ্সিতা বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৬
Share:

ইন্দ্রাণী হালদার

প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে গুঞ্জন, চ্যানেল থেকে ‘শ্রীময়ী’ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই গল্পে নতুন ট্র্যাক শুরু হল...
উ: এটা ঠিক যে, গল্পের টানটান উত্তেজনা মাঝখানে কমে গিয়েছিল। দর্শকেরও একঘেয়ে লাগছিল। যে কোনও ধারাবাহিক অনেকদিন ধরে চললে এমনই হয়। আমরাও শুনেছিলাম, দু’-এক মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু তার পরে বুঝলাম, ‘শ্রীময়ী’ চ্যানেলকে কনস্ট্যান্ট ভিউয়ারশিপ দেয়। একই ভাবে ‘কে আপন কে পর’ প্রায় সাড়ে ছ’বছর চলেছিল। ওখানে গল্পের গরু গাছে উঠেছে। তবে ‘শ্রীময়ী’র লেখক লীনা গঙ্গোপাধ্যায় হয়তো অত দিন টানবেন না, আর আমিও করতে পারব না। আরও নতুন কাজ করতে চাই।

Advertisement

প্র: ধারাবাহিকে জুনের ট্র্যাক বন্ধ হতেই দর্শক বিরুদ্ধ মতামত জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনিও বেশ ট্রোলড হয়েছেন...
উ: ব্যক্তিগত ভাবে চ্যানেলকে অনুরোধ করেছি, জুনকে ফিরিয়ে আনতে। আমি ভীষণ ভাবে চাই গল্পে জুন ফিরে আসুক। ‘শ্রীময়ী’তে ওকে খুবই দরকার। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ক’টা লোক কী লিখল, তাতে আমি পাত্তা দিই না। গ্রামেগঞ্জে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে ‘শ্রীময়ী’র যে বিপুল জনপ্রিয়তা দেখেছি, সেই ভালবাসার কাছে সোশ্যাল মিডিয়ার এই কয়েকটি লোকের মতামত কিছুই নয়।

প্র: আপনার সহ-অভিনেতারা অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ইন্ডাস্ট্রি যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেই অভিযোগ...
উ:
রোজ বাড়ি থেকে ভয়ে ভয়ে বেরোই। গত বছর লকডাউনের পরে যে নিয়মের গণ্ডির মধ্যে শুটিং শুরু হয়েছিল, সেই নিয়মগুলো ফিরিয়ে আনা খুবই দরকার। কিন্তু আনবে কে? ২ মে না গেলে কেউ কাউকে চটাবে না। ফেডারেশন নিয়ম বলবৎ না করলে, আমরা কিছুই করতে পারব না। কিন্তু তারা এখন প্রযোজক-চ্যানেলের মন জুগিয়ে চলছে। কলাকুশলীরা মরল না বাঁচল, তাতে কিছু আসে যায় না ওদের। আমি জানিয়ে দিয়েছি, ফ্লোরে টেকনিশিয়ানরা মাস্ক বা ফেসশিল্ড পরে না থাকলে, আমি শুটিং করব না। কিন্তু আমাদের পাশের সেটেই নিয়মের বালাই নেই। মাস্ক না পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিরাপত্তা আমাদের নিজেদের হাতে। শিল্পী-পরিচালক-প্রযোজকরা কড়া না হলে হবে না।

Advertisement

প্র: টানা শুটিংয়ের ফাঁকে নিজের জন্য কতটা সময় পান?
উ: নিজের জন্য অনেকটাই সময় রাখি। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠি আর তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ি। জলখাবার তৈরি করা, ঘর পরিষ্কার, কুকুরকে স্নান করানো... সব নিজে করি। আমি কিন্তু বেশ পিটপিটেও। একজন ড্রাইভার ও পরিচারিকা ছাড়া সাহায্য করার আর কেউ নেই।

প্র: এখন সব চ্যানেলেই নতুন মুখের ভিড়। তাঁরা অভিনয় শিখে আসেন না, তা নিয়ে প্রায়ই সরব হয়েছেন আপনি...
উ:
হ্যাঁ আমি মনে করি, অভিনয়টা শিখে আসা দরকার। শুধুমাত্র গ্ল্যামার, পরিচিতি, টাকাপয়সা দেখেই কোনও ভাবে ধারাবাহিকে ঢুকে না পড়ে, যথাযথ ট্রেনিং নিয়ে এলে আখেরে তাঁদেরই লাভ হবে।

প্র: এ বারের বিধানসভা নির্বাচনের শুরুতে দু’টি প্রধান দল থেকেই রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন। গেলেন না কেন?
উ: আমার ইচ্ছে নেই। রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চাই। আমি অভিনয় করি, সেটাই যথেষ্ট। মানুষের জন্য অনেক কাজ করেছি, আরও করব। তবে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে থেকে সেই কাজ করতে চাই না।

প্র: আপনার ওয়েবে ডেবিউ করার কথাও শোনা যাচ্ছে...
উ: ওয়েব সিরিজ় থেকে প্রায়ই প্রস্তাব পাচ্ছি। বাংলা ছাড়া হিন্দিতেও অনেক ভাল ভাল প্রস্তাব এসেছিল। সময়ের অভাবে সেগুলো করা হয়নি। এ বার ওয়েব সিরিজ়ে ডেবিউ করার ইচ্ছে রয়েছে।

প্র: আরও শোনা গিয়েছে, ‘শ্রীময়ী’ শেষ হলেই শুরু করবেন ‘গোয়েন্দা গিন্নি সিজ়ন টু’। শুধুমাত্র আপনার সম্মতির অপেক্ষায় রয়েছে চ্যানেল...
উ: (হাসতে হাসতে) এ কথা আমিও অনেক দিন ধরেই শুনছি। দেখা যাক... আসলে এখনও এই ইন্ডাস্ট্রিতে না আঁচালে বিশ্বাস নেই। আমার নিজেরও খুব ইচ্ছে ‘গোয়েন্দা গিন্নি সিজ়ন টু’ শুরু হোক। ধারাবাহিকটি আবার শুরু হলে আরও বেশি জনপ্রিয়তা পাবে বলেই বিশ্বাস। উদাহরণ দিয়ে বলি, গত বছর লকডাউনের সময়ে পুনঃপ্রচারিত ধারাবাহিকগুলির মধ্যে ‘গোয়েন্দা গিন্নি’ সবচেয়ে বেশি টিআরপি দিয়েছিল। তাই চ্যানেলেরও ইচ্ছে সিজ়ন টু করার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন