হাম সাথ সাথ হ্যায়
প্রাক্তন কি শুধুই বন্ধু হতে পারে? জবাবে ‘হ্যাঁ’-এর চেয়ে ‘না’ বলার লোক হয়তো বেশি। সেলেব্রিটিরাও যে এ ক্ষেত্রে খুব একটা আলাদা ভাবেন, এত কালের বলিউড অন্তত তা বলে না। ক্যামেরার নজরদারিতে বন্দি তারকারা। তাই পেশার খাতিরেও প্রাক্তনের সঙ্গে স্বাভাবিক থাকা সেলেবদের পক্ষে সহজ নয়।
সাম্প্রতিক দু’টি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যে ভাবে রণবীর সিংহ ও রণবীর কপূর পরস্পরকে বারবার জড়িয়ে ধরছিলেন, তাতে গুলিয়ে যাচ্ছে সম্পর্কের সমীকরণ। যদিও এটা প্রথম বার নয়। ‘তমাশা’র প্রচারে দুই রণবীরের সহজ হওয়া নজর কেড়েছিল। তফাত, দীপিকা এখন মিসেস ভাবনানী। তখন রণবীর সিংহের প্রেমিকামাত্র!
দুই রণবীর, দীপিকা পাড়ুকোন-আলিয়া ভট্টের পারস্পরিক বন্ধুত্ব, একে অপরের সঙ্গে সহজ হওয়া বলিউডে নিঃসন্দেহে নতুন ট্রেন্ড তৈরি করেছে। প্রাক্তনের সঙ্গে ছবি করা এবং প্রচারেও সম্পর্কের স্বাভাবিকতা বজায় রাখা... রণবীর কপূর ও দীপিকা পাড়ুকোন করে দেখিয়েছেন। তবে তাঁদের পার্টনাররা যে ভাবে দু’হাত বাড়িয়ে সেই প্রাক্তনদের আপন করে নিয়েছেন, তাতে এটা বলা যায়, প্রাক্তনকে সামলানোর ক্ষেত্রে আগের প্রজন্মের চেয়ে অনেক বেশি পরিণত জেন ওয়াই বলিউড তারকারা।
খুনসুটির মুহূর্ত
শোনা যায়, এখনও ইন্ডাস্ট্রির কোনও বিয়েতে গেলে অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন প্রবেশ করেন এক গেট দিয়ে। সলমন খান অন্য গেট দিয়ে। মুখোমুখি হয়ে গেলেও সলমন জড়িয়ে ধরছেন অভিষেককে, এটা ভাবা সোনার পাথরবাটির শামিল!
সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরে যে যাঁর সাংসারিক জীবনে থিতু হয়েছেন। তবু একসঙ্গে পর্দায় আসতে মাধুরী দীক্ষিত ও সঞ্জয় দত্তের সময় লেগেছে ২১ বছর! সম্পর্ক ভাঙার পরে শাহিদ কপূর ও করিনা কপূর খানও একে অন্যের সঙ্গে স্বাভাবিক হতে সময় নিয়েছেন। এখনও অবধি সেফ-শাহিদ বা করিনা-মীরাকে একসঙ্গে ক্যামেরার সামনে দেখা যায়নি।
এই দৃষ্টান্তগুলির পাশে দুই রণবীরের বা দীপিকা-আলিয়ার বন্ধুত্ব সত্যিই চোখে পড়ার মতো। এর নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন কর্ণ জোহর। গত বছরে তাঁর হাউস পার্টিতে যে ভাবে কপূর নন্দন এক হাতে দীপিকা ও অন্য হাতে রণবীরকে জড়িয়ে পোজ় দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট, কেন তিনি ইন্ডাস্ট্রির ‘রকস্টার’! ‘কফি উইথ কর্ণ’-এর একটা সিজ়নে দুই রণবীর ও অন্য সিজ়নে দীপিকা-আলিয়ার একসঙ্গে আসাও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। টিআরপির যুক্তি মানলেও, শোয়ে দীপিকা ও রণবীর কপূর তাঁদের পুরনো সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছিলেন।
রণবীর সিংহ ও আলিয়া ভট্টের বন্ধুত্বও বুঝিয়ে দেয়, পার্টনারদের এক্সকে নিয়ে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন না। সম্পর্কের এই নতুন রসায়নকে কাজে লাগাচ্ছেন বিজ্ঞাপন নির্মাতারা। রণবীর কপূর-দীপিকা, রণবীর সিংহ-দীপিকা, রণবীর সিংহ-আলিয়া... একই সময়ে তিনটি জুটি সমান জনপ্রিয়।
কথায় বলে, সম্পর্ক একমুখী। বন্ধুত্ব দিয়ে প্রেমের শুরু। তবে প্রেম ভেঙে গেলে স্কোয়্যার ওয়ানে ফিরে যাওয়া মুশকিল। কিন্তু পারস্পরিক সম্পর্কের বদলে যাওয়া রংকে মান্যতা দিয়ে যে ভাবে দীপিকা-রণবীর ও রণবীর-আলিয়া নিজের নিজের জীবনে এগিয়েছেন, তা শিক্ষণীয়। চার জনের সম্পর্কের ককটেল নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যতই তামাশা হোক, তাঁদের জীবনে একটাই সত্যি: লভ আজ কাল...