একঘেয়েমির ওয়ার্কআউট করতে করতে বোর হয়ে গিয়েছেন তো? এ বার একটু নতুন করে ভাবুন না। দেখবেন খুব এনজয় করছেন।
পাওয়ার রোপবিদেশে এক ধরনের মোটা দড়ি বানানো হয়। সেই দড়ি আবার ওজনেও ভারী। দড়িটা দৈর্ঘ্যে মোটামুটি ১৬-১৮ সেমি। এর মাঝের অংশ কোনও সরু পিলারের নীচে জড়িয়ে বা লোহার শক্ত কোনও ক্ল্যাম্পে আটকে দু’টো প্রান্ত দু’হাতে ধরতে হবে। এ বার দড়িটা দু’হাতে ধরে বারবার মাটিতে আছাড় মারুন। এক্সারসাইজের ভাষায় যাকে বলে রোপ ফরোয়ার্ড চপিং। চেষ্টা করুন ২০-৩০ সেকেন্ড নাগাড়ে আছাড় মারতে।
সমুদ্রের ঢেউ
এই রোপ দিয়েই আরও দু’টো ড্রিল করে ফেলতে পারেন। হাঁটু অল্প ভেঙে সামনে একটু ঝুঁকে দাঁড়ান। দড়ির দু’প্রান্ত আপনার দু’হাতে ধরা থাকতে হবে। এ বার পর্যায়ক্রমে বাঁ আর ডান হাত দ্রুত ওঠানামা করালে দড়িটা ঢেউ খেলার মতো সামনে এগোবে। এই এক্সারসাইজটাকে বলে অল্টারনেট ওয়েভ। সমুদ্রে পরের পর কেমন ঢেউ আছড়ে পড়ে, কল্পনা করুন সেই দৃশ্যটা। এই ওয়ার্কআউটটাও ২০-৩০ সেকেন্ড করার চেষ্টা করুন। ড্রিলটা রপ্ত হয়ে গেলে দড়িটা দিয়ে ঢেউ খেলাতে খেলাতে পাশাপাশি এক বার বাঁ-দিকে, এক বার ডান দিকে সরবেন।
চ্যালেঞ্জের ব্যালান্স শিট
দড়িটা ওজনে ভারী হওয়ায় তুলে আছাড় মারা বা ঢেউ তোলার কাজ দু’টো একসঙ্গে করে। প্রথমত হাত আর শরীরের সামনের কোর পেশির জোর বাড়ায়। হৃদযন্ত্রের গতিও এতে দারুণ ভাবে বাড়ে। মানে কার্ডিওভাসকুলার উপকারীতাও এই ওয়ার্কআউট থেকে পাওয়া যায়। এটা ৩০ সেকেন্ড করে ২ মিনিট বিশ্রাম নিন। রিপিট করুন ৪-৫ বার। এই দড়ি আপনি পাবেন কোথায়! বিদেশে নিশ্চয়ই কিনতে ছুটবেন না। পাওয়ার রোপ কেনাটাও কিন্তু বেশ খরচসাপেক্ষ। কোনও হার্ডওয়্যারের দোকানে বা বড়বাজারে ১৬-১৮ সেমি পরিধির মোটা দড়ি জোগাড় করুন। এতে খরচ বাঁচবে।
ঝুলে ঝুলে ট্রেনিং
ওয়ার্কআউটের এই সরঞ্জামটা আসলে ফুট দশেকের বেল্টের মতো শক্ত দড়ি। বিদেশ থেকে আনানো বা দেশি টিআরএক্স-এর দু’টো হাতল থাকে। এর মাঝে এমন কায়দা করা যে আপনি দরজার ওপর লক করে ঝুলিয়ে নিজের শরীরের ওজন নিয়ে জোর বাড়ানোর ব্যায়াম করতে পারেন।
টিআরএক্স-এ ঠিক হাতলের উপর একটা লক আছে যেটাতে চাপ দিলে দড়িটা লম্বায় বাড়ানো বা কমানো যায়। আপনি বাড়িতেই থাকুন বা কোনও জায়গায় বেড়াতে যান, সেখানে দরজায় বা গ্রিলের উপরে এটা আটকে নিয়েই ওয়ার্কআউট করতে পারেন।
দুটো হাতল ধরে স্কোয়াট-লাঞ্জ তো আছেই, হাতলে পা ঢুকিয়ে দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পুশ-আপ বা শরীর আনত করে হরাইজন্টাল পুল-আপ বেশ চ্যালেঞ্জিং ওয়ার্কআউট। ৩-৪টে সেট করে ১২-১৪ বার রিপিট করতে হবে।
শরীরের মাঝের অংশেরও শক্তি বাড়ান
প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, ব্রিজের মতো কোর এক্সারসাইজ করতেই পারেন। টানটান পেটের জন্য এই ব্যায়ামগুলোর জুড়ি নেই। ঝুলন্ত অবস্থায় দড়িটা নড়বড় করে। ভারসাম্য রাখতে কষ্ট করতে হয়। ২০-৩০ সেকেন্ড কোর এক্সারসাইজ ধরে রাখুন। রিপিট করুন ৩ বার।
ঝুলেও ফায়দা?
যে কোনও জায়গায় করা যায়। টিআরএক্স ঝুলন্ত থাকে বলে এক্সারসাইজের সময় এদিক ওদিক কাঁপতে থাকে। মানে আপনাকে ব্যালান্, করতে হবে। ভারসাম্য রাখার দক্ষতা তৈরি হয় যাকে বলে ডায়নামিক স্টেবিলিটি। এ ছাড়া আপনার শরীরের ওজন নিয়ে ব্যায়াম। সুতরাং বাচ্চা থেকে ৫০ বছরের লোকেরাও টিআরএক্স নিয়ে ওয়ার্কআউট করতে পারেন।
টিআরএক্স-এর টিকি
টিকি ঠিকই পাবেন। কেনার সাধ্য না থাকলে চাঁদনি মার্কেটে চলে যান। বেল্টের মাপের মোটা দড়ি কিনে নিন ১২-১৪ সেমির মতো। দড়ির দুই প্রান্তে সেলাই করে দুটো হাতল বানান। এ বার গ্রিলে দড়ির মাঝের অংশটা আটকে নিলেই ব্যস্। এক্সারসাইজের কার্যকারীতায় কোনও হেরফের হবে না।
চলো পাল্টাই
• পাওয়ার রোপ নিয়ে ওয়ার্কআউট যেমন চপ বা ওয়েভ সপ্তাহে ৩-৪ দিন করতে পারেন।
ভাল হয় যদি একেকটা দিন চপের সঙ্গে স্কোয়াটও করেন। একটা বৈচিত্র আসবে
• এক্সারসাইজের সময় মেরুদণ্ড টানটান রাখুন। পস্চার নিয়ে চিন্তা করবেন
না কারণ দড়ির ওজন বেশি নয়। তবে কোমরে ব্যথা থাকলে এড়িয়ে চলুন
• ছেলেরা ১৬-১৮ সেমি পরিধির মোটা দড়ি কিনতে পারেন। ওজনে বেশ ভারী হয়।
মেয়েরা ১২-১৪ সেমির কিনলেই যথেষ্ট। এটা তুলনায় হাল্কা
• টিআরএক্স-এ ওয়ার্কআউট একটু কঠিন। তাই গোড়াতে সহজ স্কোয়াট
বা বাইসেপ কার্ল করুন। তার পর পুশ আপ বা প্ল্যাঙ্কে যান