যাত্রা-পথ পেরিয়ে নাটকের ‘মুখোমুখি’ শতাব্দী

তিনি রাঁধেন, চুলও বাঁধেন। সক্রিয় রাজনীতির পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয়-পরিচালনা দু’টোই করেন। যাত্রা করেন নিয়মিত। কবিতা লেখেন। ছবিও আঁকেন। এ সব সামলে এ বার নাটকের মঞ্চেও পা রাখছেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। নাটকের নাম ‘মুখোমুখি বসিবার’। নাট্যকার খোদ রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ‘আভাষ’ দলের নাটকটি পরিচালনা করছেন শেখর সমাদ্দার।

Advertisement

সংযুক্তা বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:১৬
Share:

তিনি রাঁধেন, চুলও বাঁধেন।

Advertisement

সক্রিয় রাজনীতির পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয়-পরিচালনা দু’টোই করেন। যাত্রা করেন নিয়মিত। কবিতা লেখেন। ছবিও আঁকেন। এ সব সামলে এ বার নাটকের মঞ্চেও পা রাখছেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। নাটকের নাম ‘মুখোমুখি বসিবার’। নাট্যকার খোদ রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ‘আভাষ’ দলের নাটকটি পরিচালনা করছেন শেখর সমাদ্দার।

এত কিছু সামলে হঠাৎ নাটক করার ইচ্ছে হল কেন?

Advertisement

হাসতে হাসতে শতাব্দী বললেন, ‘‘সাংসদ শতাব্দী রায় মাস আটেক আগে ব্রাত্য বসুর কাছে গিয়েছিল বীরভূমের পর্যটনের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করতে। কাজের শেষে এল সংস্কৃতির কথা। ব্রাত্যকে বললাম আমিও নাটক করতে চাই। আমার জন্য একটা নাটক লেখো না কেন! ব্রাত্য বলেছিল লিখবে। তবে নতুন নাটক হল না। পুরনো নাটক ‘মুখোমুখি বসিবারে’ই অভিনয় করছি আমি। খুব সুন্দর গল্প। ব্রাত্য নাটকটা পড়েও শুনিয়েছে। দারুণ লেগেছে।’’

যাত্রা-সিনেমায় চুটিয়ে অভিনয় করলেও থিয়েটারে পা পড়েনি শতাব্দীর। খুব বেশি নাটক দেখেনওনি। সে দিক থেকে এ বারই নাটকে হাতেখড়ি হচ্ছে শতাব্দীর। এক জন মহিলার সামাজিক অবস্থান, বিবাহ-বিচ্ছেদ, বয়সে ছোট এক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক— এ সব টানাপড়েনকেই তুলে ধরবে ‘মুখোমুখি বসিবার’। মঞ্চে শতাব্দীর সহ-অভিনেতা অর্ণ মুখোপাধ্যায়।

এখন প্রশ্ন, নাটকের মহড়ার জন্য কী করে সময় বের করবেন অভিনেত্রী?

শতাব্দীর জবাব, ‘‘নভেম্বরের শেষে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। তার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ঠিকই রিহার্সালের সময় বের করা যাবে। ইনফ্যাক্ট, সময় বের করতেই হবে। কারণ, জানুয়ারির মাঝামাঝি নাটকটা মঞ্চস্থ হবে। এ বছর আমি যাত্রা করছি না। ফলে কিছুটা ফাঁকা সময় হাতে রয়েছে।’’

বাণিজ্যিক ছবি আর যাত্রাপালার দুনিয়া থেকে নাটকের এই দুনিয়াটা যে আলাদা, তা বুঝে এই মঞ্চ-দুনিয়ার নতুন নামকরণ করেছেন শতাব্দী। বলছেন, এটা ‘অ্যাকাডেমির নাটকের জগৎ’। এই ‘অ্যাকাডেমির নাটকের জগতে’ কেন ঢুকতে চাইছেন? শতাব্দীর কথায়, ‘‘এত দিন কমার্শিয়াল ছবির জগতে কাজ করেছি। সেখানে বিনোদন হয় এক রকম ভাবে। যাত্রায় যেমন নাচলে-গাইলে- পোশাক বদলালে লোকে আনন্দ পায়, সেটাও এত দিন উপভোগ করেছি। অ্যাকাডেমির নাটকের দুনিয়াটা ঠিক কেমন, এ বার সেটা দেখতে চাই। এখানে যে ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয় সেটা আমার খুব ভাল লাগে। সে জন্যই নিজেকে এর সঙ্গে জড়াতে চাইছি।’’

এর আগে ‘মুখোমুখি বসিবার’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছে ‘স্বপ্নসন্ধানী’র প্রযোজনায়। পরিচালনা করেছিলেন কৌশিক সেন। ব্রাত্য বসুর পরিচালনায় নাটকটি নিয়ে ছবিও হয়েছে। শতাব্দীর মঞ্চ-চরিত্রটি বড়পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন দেবশ্রী রায়। ব্রাত্য বসু বলছেন, ‘‘চরিত্রটা খুব দৃঢ়। শতাব্দীর জন্য ভাবতে গিয়ে মুখোমুখি বসিবার গল্পটাই সঠিক নির্বাচন বলে মনে হল। পরিচালক শেখর সমাদ্দার মাসখানেক আগে এই নাটক পরিচালনার প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন। ঠিক তখনই ‘তিস্তা’ চরিত্রটার জন্য শতাব্দীর কথা মনে হয়। শতাব্দীকে স্ক্রিপ্ট শোনানো হয়। ও খুবই উৎসাহ দেখিয়েছে। নাটকটা আঠাশ বছর বয়সে লিখেছিলাম। ১৯৯৮ সালে। এই ২০১৫-তেও নাটকটা প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি।’’

শতাব্দীর সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত পরিচালক শেখর সমাদ্দারও। কিন্তু এত কম সময়ে কী ভাবে শতাব্দীকে নাটকের জন্য তৈরি করবেন? পরিচালকের জবাব, ‘‘নাটকের প্রতি শতাব্দীর বেশ কৌতূহল আছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, উনি ঠিকই সময় বের করে নেবেন।’’

তবে সাংসদ যে এ বার নাটকে অভিনয় করতে চলেছেন সে কথা কি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন? শতাব্দী বললেন, ‘‘না, এখনও দিদিকে কিছু জানানো হয়নি। নাটক মঞ্চস্থ হলে ওঁকে আমন্ত্রণ জানাব। আমার বিশ্বাস উনি নিশ্চয়ই দেখতে আসবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন