প্রতীকী চিত্র (ইনসেটে: তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী, চিত্রনাট্যকার এবং শব্দবাজির সদস্য প্রীতম দাশগুপ্ত)।
বর্তমানে সারা ভারতের এক সুদৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র বা ‘আইটি সেক্টর’। তথ্যপ্রযুক্তি পরিসরে যাঁরা চাকরি করেন সেখানকার ম্যানেজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগের কর্মী, সবার মধ্যেই বাংলা ভাষার ব্যবহারের একটা বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
প্রথমত, প্রত্যেকটি আইটি অফিসকেই একটি ছোটখাটো দেশ বলতে পারেন- ওই ‘নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান’- এরকম আর কি! যদিও অফিসে পরিধান প্রায় সবারই এক, কিন্তু- ‘নানা ভাষা, নানা মত’- এটাকে অগ্রাহ্য করলে চলবে না।
এই প্রসঙ্গে, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী, চিত্রনাট্যকার এবং শব্দবাজির সদস্য প্রীতম দাশগুপ্ত বলেছেন, “ইংরেজিই ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি পরিসরের প্রধান ভাষা হবে, সেটা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু সহকর্মীদের ক্ষেত্রে, অফিসে বাঙালি সহকর্মী ছাড়াও অবাঙালি সহকর্মী থাকবে, এটাও স্বাভাবিক। আবার বেশ কিছু সহকর্মী ভারতের অন্য শাখাতেও থাকে (একই প্রজেক্ট/ ডিপার্টমেন্টের), তাদের সঙ্গেও কথা বলতে হলে ইংরেজিতে অথবা সাধারণ কথা বলতে হলে হিন্দিতে। এ বার হিন্দিতে কথা নিয়ে অনেকেরই আপত্তি থাকতে পারে। কিন্তু একথা সত্য, ভাষার নিরিখে ইংরেজির তুলনায় হিন্দিই বাংলার বেশি কাছে। সুতরাং, হিন্দি আর বাংলা এক না হলেও, হিন্দিতে বাংলায় যেটা বলতে চাইছি সেটা আরও সাবলীলভাবে প্রকাশ করা যায়, যেটা ইংরেজিতে করা যায় না। আর বাঙালি সহকর্মীদের জন্য মাতৃভাষা তো আছেই। সুতরাং, অফিসে কথা বলা হয় তিনটি স্তরে।”
“এ বার এই ত্রিস্তরীয় কথায় নিজস্ব মাতৃভাষার ওপরে একটা প্রভাব পড়বে, সেটা আলাদা করে বলার দরকার হয় না। ‘ইংরেজি পেটের ভাষা, আর বাংলা প্রাণের ভাষা’ আমরা যতই বলি, শব্দদূষণ যে একটা হচ্ছে সেটা টের পাই। এ বার আইটি পরিসরের বেশ কিছু ইংরেজি ‘টার্ম’ রয়েছে, যার বাংলা তর্জমা অতি দূরূহ। বিশেষত, প্রযুক্তি বিষয়ক শব্দগুলি ইংরেজি দিয়েই চালাতে হয়। তবে ক্লায়েন্ট ও আশেপাশের পরিবেশের প্রভাবে বাংলা ভাষায় সে সব ইংরেজি শব্দও ঢুকছে, যেগুলির বাংলা তুলনামূলকভাবে সহজ। যেমন, গতকালের জায়গায় ‘ইয়েসটার্ডে’, ‘আপনা-আপনি’-র জায়গায় ‘আপনে-আপ’ ইত্যাদি।”
এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার উপায়?
প্রীতমের মতে, “যে জিনিসটা আমি নিজে বুঝতে পেরেছি, তথ্যপ্রযুক্তির মতো দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিসরে, ভাষার ওপর কাজ করার উপায় থাকে না। এ ক্ষেত্রে, মানুষদেরকে ভাষা ব্যবহারে সচেতন হওয়া উচিত বলে মনে করি। কার্যক্ষেত্র ও ব্যক্তিগত পরিসর, দু’টো বিষয়ে ভাষার এই তফাতটা আনা খুব দরকার। তা হলে ভারতের প্রত্যেকটি সংস্কৃতি সুস্থ থাকবে, বেঁচে থাকবে।”
পশ্চিমবঙ্গের ১৫টি জেলার ২৫০টিরও বেশি স্কুলে আনন্দবাজার ডট কম আয়োজিত ‘শব্দ-জব্দ ২০২৫’ শুরু হয়েছে। এই প্রচেষ্টায় আমাদের সহযোগিতা করছে আনন্দবাজার ডট কম আয়োজিত ‘শব্দ-জব্দ ২০২৫’-এর পার্টনাররাও। এই উদ্যোগ সফল করার পেছনে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। ‘প্রেজ়েন্টিং পার্টনার’ ইআইআইএলএম কলকাতা। ‘পাওয়ার্ড বাই পার্টনার’ ট্রেন্ডস এবং সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি। এ ছাড়াও, ‘স্ন্যাকস্ পার্টনার’ কিকু নুডুলস্, ‘ফুড পার্টনার’ মনজিনিস এবং ‘নলেজ পার্টনার’ শব্দবাজি।