খেলনা কেনার সময়ে কী কী যাচাই করে নেবেন? ছবি: শাটারস্টক।
খেলতে খেলতে ছোট ছোট চাকতির মতো অংশগুলি কখন মুখে পুরে দেয় কিশোর, তা টেরও পাননি অভিভাবকেরা। পেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা নিয়ে ছেলেটির অবস্থা যখন সঙ্কটজনক, তখন হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আলট্রাসোনোগ্রাফি করে ধরা পড়ে, অন্ত্রে আটকে রয়েছে প্রায় শতাধিক ছোট ছোট চুম্বক। সেগুলি পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে অন্ত্রের কোষ নষ্ট করতে শুরু করেছে। ফলে ছেলেটির শরীরে রক্ত চলাচলই প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। ঘণ্টাখানেকের জটিল অস্ত্রোপচারের পরে ছেলেটির প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হন চিকিৎসকেরা।
ঘটনা নিউ জিল্যান্ডের। ‘নিউ জিল্যান্ড মেডিক্যাল জার্নাল’-এ খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। বছর তেরোর এক কিশোর একটি চিনা ওয়েবসাইট থেকে বেশ কিছু খেলনা কেনে। সব ক’টি খেলনাতেই খুব শক্তিশালী চুম্বক বসানো ছিল। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটি খেলার সময়ে সেই চুম্বকগুলিকে গিলে ফেলে। তার পরেই পেটে যন্ত্রণা, বমি শুরু হয়। সারা শরীরে খিঁচুনি হচ্ছিল ছেলেটির। এক্স-রে ও আলট্রাসোনোগ্রাফি করে দেখা যায়, অন্ত্রের দেওয়ালে ছোট ছোট চুম্বক আটকে রয়েছে। সেগুলির কোনও কোনটি পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে চেনের মতো শৃঙ্খলও তৈরি করেছে। ফলে পেটের ভিতরে রক্তক্ষরণ হতে শুরু করেছিল ছেলেটির। সুস্থ কোষগুলি নষ্ট হচ্ছিল। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও কমতে শুরু করেছিল। খুব দ্রুত অস্ত্রোপচার করে চুম্বকগুলি বার করা হয়। সেই সঙ্গে অন্ত্রের বেশ কিছুটা অংশ বাদও দিতে হয়। ছেলেটির অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
খেলনা কেনার সময়ে কী কী খেয়াল করবেন?
নানা ধরনের ওয়েবসাইট থেকে খুবই সহজে খেলনা অর্ডার করে দেন বাবা-মায়েরা। প্রযুক্তির দৌলতে এখন ছোটরাও অনলাইনে জিনিসপত্র কেনায় বেশ সড়গড়। তাই অভিভাবকদের সব সময়ে খেয়াল রাখতে হবে, শিশু অনলাইনে কী কী জিনিস অর্ডার দিচ্ছে, আদৌ সেগুলি তাদের বয়সোচিত বা নিরাপদ কি না। বড়দেরও খেলনা কেনার সময়ে কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখতেই হবে—
১) খেলনা কী উপাদানে তৈরি, তা দেখতে হবে। প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা শিশুর জন্য ক্ষতিকর। তাতে বিভিন্ন বিপজ্জনক রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা শিশুর শরীরে দীর্ঘস্থায়ী কোনও ক্ষতির কারণ হতে পারে।
২) বৈদ্যুতিক বা ব্যাটারি চালিত খেলনা কেনার আগে সতর্ক হতে হবে। ব্যাটারিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে।
৩) এমন কোনও খেলনা কিনবেন না, যাতে চুম্বক বসানো আছে। কোনও ভাবে তা পেটে গেলে বিপদ ঘটতে পারে। তা ছাড়া খেলনায় যেন কোনও ধারালো অংশ না থাকে, তা-ও দেখে নিতে হবে।
৪) ছোটদের মার্বেল, গুলি বা কাচ দিয়ে তৈরি কোনও খেলনা কিনে দেবেন না। এর থেকেও বিপদ হতে পারে।