Dash Diet

খাবার বদলে কমানো যাবে মানসিক চাপ? ‘ড্যাশ ডায়েটে’ যেকোনও পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা থাকবে

মানসিক চাপ সবার জীবনেই অল্প বিস্তর রয়েছে। বিষয় হল, কে কী ভাবে সেই চাপ সামাল দিচ্ছেন। টানা মানসিক চাপে থাকলে হাইপারটেনশনের সমস্যা হতে পারে। যা হার্ট, কিডনি এবং মস্তিষ্কের জটিল রোগের কারণ। তবে এক বিশেষ খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে ঠান্ডা মাথায় কাটিয়ে ওঠা যাবে মানসিক চাপ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ১৪:৫১
Share:

ছবি: ফ্রিপিক।

মানসিক চাপ আপনার আছে আর পাশের মানুষটির নেই— এমনটা কিন্তু না। এ যুগে অফিসের ডেডলাইন রাখার, টার্গেট মিট করার চাপ সবার আছে। তার সঙ্গে আছে সেই চাপ সামলাতে না পারার চাপ, সামাজিক, পারিবারিক নানা জটিলতার চাপ, সাংসারিক দায়িত্ব সামলানোর বা না সামলাতে পারার চাপ। জীবনে মানসিক চাপ নেই, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বিষয় হল, সেই চাপ কে কীভাবে সামলাতে পারছেন। কারণ চাপ সামাল দিতে না পারলে তার প্রভাব পড়ে শরীরে। নিঃসৃত হয় স্ট্রেস হরমোন। যা উচ্চ রক্তচাপের কারণ। আর উচ্চরক্তচাপ থেকে হার্ট এবং কিডনি ফেল করার ঝুঁকি থাকে। ক্ষতি হয় মস্তিষ্কেও।

Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু বলছে উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশন এক ধরনের নিঃশব্দ ঘাতক। কারণ এর উপস্থিতি তত ক্ষণ বোঝা যায় না, যত ক্ষণ না শরীরের বড় কোনও ক্ষতি হচ্ছে। তাই এই সমস্ত সমস্যার মূলে যে মানসিক চাপ তাকে সামলাতে শেখা দরকার। আর ঠিক এই জায়গাতেই প্রাসঙ্গিক একটি বিশেষ ধরনের খাদ্যাভ্যাস। যার নাম ‘ড্যাশ ডায়েট’। পুষ্টিবিদেরা বলছেন এই ডায়েট রক্তচাপ কমিয়ে মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। ফলে জটিল পরিস্থিতিতেও মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করা যায়। দূরে রাখা যায় মানসিক চাপ।

ছবি: শাটারস্টক।

‘ড্যাশ ডায়েট’ কী?

Advertisement

‘ড্যাশ’ কথাটির পূ্র্ণ অর্থ ‘ডায়েটারি অ্যাপ্রোচেস টু স্টপ হাইপার টেনশন’। যার বাংলা অনুবাদ হল— খাবারের মাধ্যমে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রক্রিয়া। এই খাদ্যাভ্যাসে দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় বিভিন্ন ধরনের পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর খাবার রেখে বাদ দেওয়া হয় সোডিয়াম, স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং চিনি যুক্ত খাবার। এই খাবার শুধু মেজাজকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই সাহায্য করে না। ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

‘ড্যাশ ডায়েট’-এ কী কী থাকবে?

১। ফলমূল: পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে এমন ফলমূল খেতে হবে। যেমন কলা, তরমুজ, বেদানা, কিশমিশ, পেঁপে, ফুটি, কমলালেবু, পেয়ারা, খেঁজুর, ডাবের জল ইত্যাদি।

২। শাক-সব্জি: একই ভাবে যে সব শাক-সব্জিতে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম বেশি রয়েছে, তা বেশি করে রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। যেমন— টম্যাটো, বিট, কুমড়ো, স্কোয়াশ, আলু, ব্রোকোলি, বিনস, পালং শাক এবং অন্যান্য শাকপাতা, রাঙা আলু ইত্যাদি।

৩। দানা শস্য: ফাইবার আছে এমন দানা শস্য যেমন ওটস, জোয়ার, বাজরা, রাগী, বার্লি, অমরন্থ, কিনোয়া, কালো গম, ভুট্টার দানা ইত্যাদি।

৪। কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার: কম ফ্যাট রয়েছে এমন দুগ্ধজাত খাবার ক্যালসিয়ামের জন্য ভাল। টোনড মিল্ক, দই খাওয়া যেতে পারে।

৫। লিন প্রোটিন: চর্বি ছাড়া মুরগির মাংস, মাছ, ডিম এবং বিভিন্ন বিন জাতীয় শস্য এবং ডাল।

৬। বাদাম এবং বীজ: ড্যাশ ডায়েটে খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যকর ফ্যাটজাতীয় খাবার রাখতে বলা হয়। যা রয়েছে বাদাম এবং বীজ শস্যে।

ছবি: ফ্রিপিক।

কোন খাবার থাকবে না?

১। সোডিয়াম বেশি রয়েছে এমন খাবার: চিপস, ভুজিয়ার মতো প্যাকেটজাত নোনতা খাবার, ফ্রোজ়েন ফুড, ক্যানবন্দি বা প্যাকেটবন্দি স্যুপ, প্রক্রিয়াজাত মাংস যেমন সালামি, সসেজ, বেকন এবং টম্যাটো কেচআপ, চিলি সস, সয় সস এবং বিভিন্ন ধরনের স্যালাড ড্রেসিং এমনকি প্রক্রিয়াজাত চিজ়-এও সোডিয়াম বেশি থাকে।

২। স্যাচুরেটেড ফ্যাট: পাঁঠার মাংস-সহ যেকোনও রেড মিট, মাখন, চিজ়, আইসক্রিম, ক্রিমের মতো ফ্যাট যুক্ত দুগ্ধজাত খাবার, নারকেল তেল বা পাম তেলেও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে বেশি। এ ছাড়া মিল্ক চকোলেট, বেক করা খাবার, প্যাকেটজাত চিজ় পপকর্ন বা চিপসেও স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে।

৩। চিনি দেওয়া পানীয় বা খাবার: ফলের রস, চকোলেট, পেস্ট্রি বা যেকোনও ধরনের মিষ্টিই হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সেই সব খাবার থেকেও দূরে থাকা বাঞ্ছনীয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement