লোভে পড়ে মিষ্টি, ভাজাভুজি খেয়ে ফেলেছেন? এ বার কী করবেন? ছবি: সংগৃহীত।
ওজন বশে রাখতে নিয়ম মানতে হবে। ঘড়ি ধরে শরীরচর্চা না করলেই নয়। কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে থাকতে থাকতে কখনও কি বেনিয়ম হবে না?
খাদ্যতালিকার পুষ্টিকর খাবার প্রতি দিন খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে পছন্দের পেস্ট্রি কিংবা গরম শিঙাড়ায় কামড় তো দিয়ে ফেললেন। কিন্তু অপরাধবোধ সামলাবেন কী ভাবে?
মিষ্টি, তেলেভাজা বা পছন্দের খাবার খেয়ে ফেলার পর ফিটনেস সচেতন বহু মানুষই এমন অপরাধবোধে ভোগেন। দিনরাত ওই এক টুকরো খাবার নিয়ে ক্যালোরির হিসেবনিকেশের চিন্তা মাথায় ঘুরতে থাকে। এ ক্ষেত্রে কী করবেন, বলছেন ইংল্যান্ডের ফিটনেস প্রশিক্ষক এমা ডরোথি। সমাজমাধ্যমে মাঝেমধ্যে সুস্বাস্থ্যের নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন তিনি। সেই এমাই বলছেন, তাঁর নিজের কথা এবং একই সঙ্গে উল্টোপাল্টা খেয়ে ফেলার অপরাধবোধ কমানোর উপায়।
এমার কথায়, স্বাস্থ্যসচেতনতা নিয়ে ভাবতে ভাবতে তিনি চিনিকে কার্যত শত্রু ভেবে নিয়েছিলেন। কখনও কেক, আইসক্রিম, চকোলেট খেয়ে ফেললে মাথায় শুধু ক্যালোরি নিয়ে চিন্তাই ঘুরত। তবে কাজ করতে করতে বুঝেছেন, সমস্যা খাওয়ার থেকে বেশি রয়েছে মনে। বি টাউনে তারকাদের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকরও বলছেন সে কথাই। করিনা কপূর থেকে শিল্পা শেট্টি— অনেকেই রুজুতার পরামর্শ মেনে চলেন। তিনি একবার বলেছিলেন, ডায়েট নিয়ে সারা দিন ভাবনাচিন্তা করতে হলে সেটাই ভুল। পেটে খিদে, চোখে ঘুম নেই, অথচ খেতে ভাল লাগছে না, তেমন খাবার খেয়ে যেতে হচ্ছে। সেটা কখনও শরীরের উপযোগী ডায়েট হতে পারে না, বলছেন রুজুতা।
পেস্ট্রি-ভাজাভুজি খেয়ে ফেললে কী করবেন?
১. বেশি ক্যালোরি শরীরে গেলে বাড়তি ঘাম ঝরিয়ে তা খরচ করতে হবে, এটাই সহজ নিয়ম। তবে ডরোথির বক্তব্য, পছন্দের খাবার খেয়ে ফেলেছেন বলে জিমে বেশি সময় দিলে, খাওয়া এবং শরীরচর্চা — দুই ক্ষেত্রেই বিষয়টি শাস্তিযোগ্য হয়ে উঠবে। বদলে ভাবতে পারেন, পছন্দের খাবার আরও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কী ভাবে খাওয়া যাবে, তার পরিমাপ কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
২. পছন্দের খাবার খেয়েছেন বলে অযথা তা নিয়ে ভাবাভাবির দরকার নেই। আফসোসেও কোনও লাভ নেই। বরং ভাবা যেতে পারে, খাওয়া যখন হয়ে গিয়েছে তখন কী ভাবে সেই ক্যালোরি খরচ করা যায়। তার জন্য ২ ঘণ্টা বাড়তি শরীরচর্চা করতে হবে তা মোটেই নয়, বরং আবার স্বাভাবিক ছন্দে মন দেওয়ার কথাই বলছেন ডরোথি।
৩. মনের সুখে বিরিয়ানি, চাঁপ খেয়ে ফেলেছেন। সেই খাওয়াটা উপভোগ করাই ভাল। তবে কেন বার বার ভাজাভুজি বা বাইরের খাবার খেতে ইচ্ছে করছে সেটা তলিয়ে ভাবতে পারেন। শুধু সুস্বাদু খাবারের দর্শন এবং গন্ধেই হচ্ছে না কি নেপথ্যে উদ্বেগ, একাকিত্ব না বা অন্য কোনও বিষয় রয়েছে সেটাও বোঝা দরকার। কারণ জানলে নিজে থেকেই হাবিজাবি খাবার খাওয়ার প্রবণতা এড়ানো যাবে।