কেবল আম নয়, খোসাও এক ধরনের খাদ্যবস্তু। ছবি: সংগৃহীত।
গোটা গ্রীষ্ম জুড়ে আমের কদর। কিন্তু খোসার স্থান ময়লা ফেলার বালতিতে। এ দিকে অনেকে জানেনই না, কেবল আম নয়, খোসাও এক ধরনের খাদ্যবস্তু। যদিও কেউ কেউ আমের খোসা ব্যবহার করে ত্বকচর্চা করেন, কিন্তু আমের খোসা পেটে পুরে নেওয়ার ব্যাপারে ধোঁয়াশায় বেশির ভাগ মানুষই। প্রশ্ন জাগে, তা খাওয়া আদৌ কি নিরাপদ?
বিষাক্ত তো নয়ই, উল্টে আমের খোসা উপকারী। এতে রয়েছে ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ছাড়াও ম্যাঙ্গিফেরিন, কোয়ারসেটিন, ক্যারোটিনয়েডের মতো বায়ো-অ্যাক্টিভ যৌগ।
আমের খোসার স্বাস্থ্য উপকারিতা—
১. আমের খোসায় রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার। তাই হজমের ক্ষমতা বাড়িয়ে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পারে।
২. অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ বলে প্রদাহনাশক এবং ত্বকে ও স্বাস্থ্যে চট করে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না।
৩. আমের খোসায় থাকা ক্যারোটিনয়েড এবং ভিটামিন ই ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনতে পারে।
৪. আমের খোসার নির্যাস নাকি রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করতে পারে।
বিষাক্ত তো নয়ই, উল্টে আমের খোসা উপকারী। ছবি: সংগৃহীত।
কিন্তু খোসায় কামড় বসানোর আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার—
গঠন এবং স্বাদ: আমের খোসা মোটা এবং সামান্য তেতো হয়। কোন ধরনের আম, তার উপর নির্ভর করে, খোসা আঠালো হবে কি না। স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, কিন্তু অনেকেই খোসা চিবিয়ে খেতে রাজি নন।
অ্যালার্জি: আমের খোসার মধ্যে থাকা যৌগগুলি অনেক সময়ে অ্যালার্জির সৃষ্টি তৈরি করতে পারে। আমটির খোসা ছাড়ানোর সময় যদি দেখেন, আপনার চুলকানি হচ্ছে হাতে, তা হলে সেই আমের খোসা না খাওয়াই ভাল।
কীটনাশকের উপস্থিতি: বাজারজাত করার জন্য চাষ করা আমগুলির ত্বকে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ থাকতে পারে। যদি আপনি খোসা খেতে চান, তা হলে ভাল করে ধুয়ে নেবেন
তবে কীটনাশক ধুয়ে ফেলে খোসা খাওয়া যায়। ধাপে ধাপে তা সম্ভব—
নুন-হলুদ: এক বাটি জলে ১ চা চামচ নুন ও অর্ধেক চা চামচ হলুদ দিয়ে আমগুলি ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন এবং ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।
বেকিং সোডা: এক বাটি জলে ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য আম ভিজিয়ে রাখুন, তারপর কল খুলে জলের নীচে রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ভিনিগার: ভিনিগার এবং জলের ১:৩ দ্রবণে ১৫-২০ মিনিট ধরে ভিজিয়ে রেখে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।
রোদে আমের খোসা শুকিয়ে নিয়ে পাউডার বানানো যায়। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে খাবেন আমের খোসা?
১. আমের খোসার চাটনি
উপকরণ
২টি পাকা আমের খোসা
১টি কাঁচালঙ্কা
১ টেবিল চামচ নারকেল কোরা
এক চিমটে আদাবাটা
স্বাদ মতো লেবুর রস
পরিমাণ মতো নুন
প্রণালী
সমস্ত জিনিস মিক্সার গ্রাইন্ডারে ঢেলে ভাল করে বেটে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে আমের খোসার চাটনি। চাইলে গোটা সর্ষে এবং কারিপাতার ফোড়ন দিতে পারেন উপরে।
২. আমের খোসার পাউডার
রোদে আমের খোসা শুকিয়ে নিতে হবে যত ক্ষণ না কড়কড়ে হয়ে যাচ্ছে। এ বার মিক্সিতে ভাল করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। তার পর স্মুদি বা মশলার মধ্যে মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে টক টক স্বাদ আনার জন্য।
৩. আমের খোসার ভিনিগার
আমের খোসা মজিয়ে নিয়ে ভিনিগার বানানো যেতে পারে।
(এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। আমের মতোই আমের খোসা খেতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।)