Japanese habits for Heart

জাপানের যাপনে মুগ্ধ চিকিৎসক, হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে ৫টি অভ্যাস রপ্ত করার পরামর্শ

বিশ্বে যখন স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে, তখনই জাপানি প্রথাগুলি জনপ্রিয় হচ্ছে। সম্প্রতি জাপানে বেড়াতে গিয়েছিলেন আমেরিকাবাসী হার্টের চিকিৎসক ডিমিট্রি ইয়ারানভ। তিনি ইনস্টাগ্রামে জাপানের জীবনযাত্রা সম্পর্কে প্রশংসা করে একটি পোস্ট করেন। হার্টের সুরক্ষায় ৫টি প্রথার কথা উল্লেখ করলেন চিকিৎসক।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৫৭
Share:

হার্টের যত্নে জাপানি যাপন। ছবি: সংগৃহীত।

সচেতন ভাবে যাপন করায় বিশ্বাসী জাপানিরা। সময়ের সঙ্গে বয়ে যাওয়া নয়, বরং প্রতি মুহূর্তকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চান তাঁরা। আর তাই এখন সারা বিশ্বে জাপানের জীবন বোধ আলোচিত হচ্ছে। বিশ্বে যখন স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে, তখনই ‘হারা হাচি বু’, ‘কানসো’, ‘মুরি শি নাই দে’-র মতো জাপানি প্রথা জনপ্রিয় হচ্ছে। সম্প্রতি জাপানে বেড়াতে গিয়েছিলেন আমেরিকাবাসী হার্টের চিকিৎসক ডিমিট্রি ইয়ারানভ। তিনি ইনস্টাগ্রামে জাপানের জীবনযাত্রা সম্পর্কে প্রশংসা করে একটি পোস্ট করেন। শুধু তা-ই নয়, চিকিৎসক জানাচ্ছেন, তিনি নিজের রোগীদের এই অভ্যাসগুলি মেনে চলার পরামর্শ দেন। এমন ৫টি অভ্যাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন ডিমিট্রি।

Advertisement

হার্ট ভাল রাখার কৌশল শেখাচ্ছেন চিকিৎসক। ছবি: সংগৃহীত।

জাপান থেকে তা হলে কোন কোন স্বাস্থ্যকর অভ্যাসকে রপ্ত করে এলেন চিকিৎসক?

১. জাপানের বাসিন্দারা সকাল শুরু করেন গ্রিন টি দিয়ে। কড়া কফি বা কড়া চায়ে চুমুক দেওয়া মানেই দিনের শুরুতে অতিরিক্ত ক্যাফিন প্রবেশ করছে শরীরে। কিন্তু গ্রিন টি পান করলে শরীরে বেশি পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের জোগান থাকে। সকালে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রয়োজনীয়।

Advertisement

২. সর্বত্র হাঁটাহাঁটি করে যাতায়াত করেন জাপানিরা। অ্যাপ ক্যাব বা নিজেদের গাড়ির বদলে বেশি করে ট্রেনে চাপা, সাবওয়ে ধরে হাঁটা, সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করা, ফুটপাথে হাঁটা— জাপানিদের যাপনের এই অভ্যাস মুগ্ধ করেছে ডিমিট্রিকে। এতে শরীরে গ্লুকোজ়ের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং হার্টের উপর চাপ পড়ে না বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক।

৩. খাবার খাওয়ার সময়ে পেট ৮০ শতাংশ ভরে গেলেই খাওয়ায় রাশ টানতে হবে। জাপানের এই বিশেষ নিয়মের নাম, ‘হারা হাচি বু’। তা ছাড়া খাবার খাওয়ার গতি কমিয়ে ফেলতে হবে। এতে শরীর থেকে লেপটিন নিঃসরণ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। লেপটিন হল সেই হরমোন, পেট ভরে গেলে যেটি মস্তিষ্কে সঙ্কেত পাঠায়। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখতে, ভুঁড়ি কমাতে, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই পদ্ধতি অবলম্বন করছেন জাপানিরা। পেট ঠেসে খেলে দীর্ঘ মেয়াদে হার্টের ক্ষতি হতে পারে। তা ছাড়া যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে আরও বেশি করে এই নিয়ম পালন করা দরকার। বেশি পরিমাণে খেলে খাওয়ার পর রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সমস্যা কমবে এই পন্থায়। দীর্ঘ মেয়াদে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ফলে স্থূলত্বের ঝুঁকি বাড়বে না। আর স্থূলত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত হার্টের রোগের ঝুঁকিও কমে যাবে।

৪. শ্লথ গতিতে জীবন যাপন করেন জাপানিরা। ধীরে ধীরে খাওয়াদাওয়া করা, যাতায়াত ও চলাচলেও হুড়োহুড়ি নেই। সামগ্রিক ভাবে জীবনে তাড়া নেই তাঁদের। ডিমিট্রি বলছেন, এর ফলে স্ট্রেস হরমোন, অর্থাৎ কর্টিসলের পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে হৃৎস্পন্দনের ছন্দে হেরফের হয় না।

৫. রাতে গরম জলে গা ধোয়ার অভ্যাস উপকারী বলছেন ডিমিট্রি। কারণ এতে উচ্চ রক্তচাপ নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, হার্ট শান্ত হয়, ঘুম ভাল হয়। যদিও তা জাপানের আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত হলেও ভারতের সব ক্ষেত্রে এই নিয়ম পালন করা উচিত নয়। হার্টের রোগী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই এই অভ্যাস রপ্ত করতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement