Coconut Water Vs. Sugarcane Juice

ডাব না কি আখ? চাঁদিফাটা রোদে কোন পানীয়ে চুমুক দিলে উপকার মিলবে? জানিয়ে দিলেন পুষ্টিবিদ

প্রকৃতির মাঝেই রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা থেকে গরমের উপযুক্ত পানীয় পাওয়া যেতে পারে। যেমন ডাবের জল বা আখের রস। কিন্তু তৃষ্ণা মেটানোয় দু’টিই সফল হলেও জলের ঘাটতি মেটাতে কোনটি বেশি কাজ করে?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৫ ১৩:০৬
Share:

ডাবের জল, না কি আখের রস, জলের ঘাটতি মেটাতে কোনটি বেশি কাজ করে? ছবি: সংগৃহীত।

গরমে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায় বার বার? ইচ্ছে করে একটু ঠান্ডা পানীয়ে চুমুক দিতে? এমন সময় কোল্ড ড্রিঙ্কই কেবল চোখে পড়ে? এ দিকে প্রকৃতির মাঝেই রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা থেকে গরমের উপযুক্ত পানীয় পাওয়া যেতে পারে। যেমন ডাবের জল বা আখের রস। কিন্তু তৃষ্ণা মেটানোয় দু’টিই সফল হলেও জলের ঘাটতি মেটাতে কোনটি বেশি কাজ করে? কাঠফাটা রোদে রাস্তায় দুই পানীয়ের সন্ধান মিললে কোনটি বেছে নেবেন?

Advertisement

পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘গ্রীষ্মে কোনটি বেশি হাইড্রেটেড রাখবে, তার উপর নির্ভর করবে কোনটি খাওয়া ভাল। আর ডিহাইড্রেশন কমানোর কাজটি দু’ভাবে হয়। জলের ঘাটতি মেটানো এবং ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা।’’

ভ্যাপসা গরমে দীর্ঘ ক্ষণ কাটানোর পর ডাবের জল খেলে ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি মিটতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।

ডাবের জলের উপকারিতা

Advertisement

পটাশিয়াম, সোডিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম দিয়ে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা পূরণ করে ডাবের জল। এই তিন উপাদান ক্রীড়াবিদদের জন্যও বেশ উপকারী। অনেক ক্ষণ শরীরচর্চা করার পর বা ভ্যাপসা গরমে দীর্ঘ ক্ষণ কাটানোর পর ডাবের জল খেলে ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি মিটতে পারে। এতে খুব বেশি চিনি থাকে না। অন্যান্য নন-কার্বোনেটেড পানীয়ের তুলনায় এতে শর্করার মাত্রা সবচেয়ে কম। ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা বাড়ানোর পাশাপাশি গরমে ডাবের জল খেলে মনমেজাজও ভাল থাকে। এতে জলের পরিমাণ ৮০ শতাংশ।

গ্রীষ্মকালীন পানীয়গুলির মধ্যে আখের রস সবচেয়ে সুস্বাদু বলে দাবি অনেকের। ছবি: সংগৃহীত।

আখের রসের উপকারিতা

আখের রস এতই সুস্বাদু যে, অনেকেই শেষ পাতে ডেসার্ট হিসেবে খেতে পছন্দ করেন। চিনির পরিমাণ ডাবের জলের থেকে বেশি। গ্রীষ্মকালীন পানীয়গুলির মধ্যে আখের রস সবচেয়ে সুস্বাদু বলে দাবি অনেকের। শীতলীকরণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে প্রবল তাপপ্রবাহে এক গ্লাস রস খেলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং জল রয়েছে। জলের পরিমাণ ডাবের তুলনায় বেশি। এতে ৯০ শতাংশ জল রয়েছে। প্রস্রাবজনিত সংক্রমণ উপশমে আখের রসের অবদান রয়েছে। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বার করে দেয়। তবে ডাবের চেয়ে পটাশিয়ামের পরিমাণ অনেক কম।

তুলনামূলক আলোচনা

পুষ্টিবিদ বলছেন, ‘‘গ্রীষ্মকালে সতেজ থাকতে, ক্লান্তি দূর করতে দুই পানীয়ই কার্যকরী। তবে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে গেলে ডাবের জল বেশি কার্যকরী। আর জলের পরিমাণ ঠিক রাখতে গেলে আখের রস বেশি উপকারী। আমরা পুষ্টিবিদেরা সাধারণত ডাবের জল খাওয়ার পরামর্শ দিই। তার কারণ এতে প্রাকৃতিক চিনি থাকলেও পরিমাণ কম। ফলে শরীরে ক্যালোরি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। আখের রস খেতে মিষ্টি, চট করে শক্তি এনে দেয় শরীরে, এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে, শীতলীকরণ বৈশিষ্ট্যও আছে, কিন্তু সমস্যা হল, অনেক বেশি পরিমাণে চিনি থাকে এতে। তাই ক্যালোরি বেড়ে যেতে পারে। তা ছাড়া ডাবের জল থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি নেই। কিন্তু আখ থেকে যে ভাবে রস বার করা হয়, তা কখনও কখনও অস্বাস্থ্যকর হতে পারে। সুগার, প্রেশার থাকলেও ডাবের জল বেশি স্বাস্থ্যকর। ঘামের মাধ্যমে ইলেক্ট্রোলাইট বেরিয়ে গেলে ডাবের জল দ্রুত কাজ করে।’’

(এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। কারা ডাবের জল খাবেন, কারা আখের রস, সে বিষয়ে অবশ্যই নিজের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement