টাকে নতুন চুল গজাবে, কাজ করছে চেনা ওষুধই। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
একমাথা ঘন চুল ঝরে গিয়ে টাক পড়তে থাকলে, মনে দুঃখ তো হবেই। টাক ঢাকতে কখনও পরচুলা, আবার কখনও টুপি দিয়ে আড়াল করার চেষ্টা চলতেই থাকে। চুল কমতে কমতে এক এক জায়গা কেশশূন্য হয়ে যাওয়াও কাঙ্ক্ষিত নয়। মাথাজোড়া টাক নিয়ে তাই দুঃখ অনেক ছেলেরই। টাকে চুল গজানোর কী কী টোটকা আছে, সে নিয়ে ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি চলেই। ‘হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট’ বা চুল প্রতিস্থাপনের নানা থেরাপিও ইদানীংকালে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক তারকাই করাচ্ছেন। তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। তা হলে উপায়? টাকে চুল গজাতে পারে এমন ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে। খুব তাড়াতাড়ি ওষুধটি বাজারে আসতে পারে বলে দাবিও করা হয়েছে।
নিজের চুলের ঘনত্ব নিয়ে সন্তুষ্ট এমন মানুষ খুব কমই আছেন। প্রতি দিন স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট জীবনচক্র শেষ করে কিছু পুরনো চুল পড়ে যায় আর নতুন চুল গজায়। যদি বয়সের আগেই এবং তেমন কোনও শারীরিক ব্যাধি ছাড়াই চুল পড়তে শুরু করে, তখন বিষয়টি চিন্তার হয়ে দাঁড়ায়। অস্বাভাবিক চুল পড়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় অ্যালোপেসিয়া বলে, যা এখন কমবয়সিদেরও মাথাব্যথার কারণ। সাধারণত দেখা গিয়েছে অ্যান্ড্রোজেন, ডাইহাইড্রোটেস্টোস্টেরন হরমোনের তারতম্যে চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে। প্রথমে চুল উঠে কপালের দু’ধার প্রশস্ত হয়ে যায়। তার পরে মাথার উপরের দিকের চুল উঠে টাক পড়তে থাকে। একে বলে অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া। একে ঠেকানোর জন্য পুরনো কিছু ওষুধ আছে বটে, তবে তার থেকেও কার্যকরী হতে পারে নতুন ওষুধ। আয়ারল্যান্ডের এক ওষুধ নির্মাতা সংস্থা কসমো ফার্মাসিউটিক্যালস জানিয়েছে, ব্রণ সারানোর ওষুধ ‘ক্ল্যাসকোটেরন’ চুল পড়ার সমস্যা বা অ্যালোপেসিয়া সারাতে বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে। এই ওষুধটির ক্লিনিকাল ট্রায়ালও সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা।
প্রায় ১৫০০ জন পুরুষের উপর পরীক্ষাটি করা হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ওষুধটির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ের ট্রায়ালে খুব ভাল ফল দেখা গিয়েছে। ওষুধটি যেমন ত্বকের সমস্যার সমধান করতে পারছে, তেমনই টাক পড়ার সমস্যাও কমাতে পারছে। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ওষুধটি চুল পড়ার সমস্য কমায়, মাথার ত্বকের সংক্রমণও রোধ করে। ওষুধটিকে যদি ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ) অনুমোদন দেয়, তা হলে টাক পড়ার সমস্যা ঠেকাতেও সেটির প্রয়োগ শুরু হবে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা।