হেপাটাইটিসের সংক্রমণ কেন বাড়ছে, প্রতিরোধের উপায় কী? ছবি: ফ্রিপিক।
হেপাটাইটিসের সংক্রমণ নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। দিল্লিতে হেপাটাইটিস এ ও ই-এর সংক্রমণ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে খবর। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শুধু দিল্লি নয়, তার আশপাশের এলাকাতেও হেপাটাইটিসের সংক্রমণ বেড়েছে। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অনেকে। দূষিত জল ও খাবার থেকেই সংক্রমণ ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে।
হেপাটাইটিস হল লিভারের রোগ। হেপাটাইটিস-এ, বি, সি, ডি এবং ই— এই পাঁচটি ভাইরাসের কারণে হেপাটাইটিস হয়। হেপাটাইটিস-এ এবং ই সংক্রমিত হয় দূষিত খাদ্য ও পানীয়ের মাধ্যমে। আর হেপাটাইটিস-বি, সি এবং ডি সংক্রমিত হয় রক্তের মাধ্যমে। দিল্লিতে হেপাটাইটিস এ ও ই বেশি ছড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
লিভারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল রক্তের লোহিত রক্তকণিকার আয়ুষ্কাল শেষ হলে তার মধ্যে থাকা হলুদ রঙের বিলিরুবিনকে নিষ্কাশন করে দেওয়া। কিন্তু যদি ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে, তা হলে লিভারের এই স্বাভাবিক কাজটি ব্যাহত হয়। তখন রক্তে বিলিরুবিন জমতে থাকে এবং হেপাটাইটিস ধরা পড়ে।
কী থেকে ছড়াচ্ছে রোগ?
অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, দূষিত জল থেকে সংক্রমণ ঘটছে। হেপাটাইটিস হলে লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হয়। অনেক রোগী বুঝতেই পারেন না, তাঁরা শরীরে ভাইরাল হেপাটাইটিস বহন করছেন। রোগ ছড়িয়ে পড়ার পরে যখন ধরা পড়ে, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। হেপাটাইটিস ই এমনিতে খুব পরিচিত রোগ নয়। এই রোগের জীবাণু শরীরে বাসা বাঁধলেও তাই অনেকে চিনতে পারেন না। সেই কারণে চিকিৎসা শুরু করতেও দেরি হয়ে যায়। খিদে কমে যাওয়া, ত্বক এবং চোখ হলদে হয়ে যাওয়া, বমি ভাব, পেশিতে ব্যথা, তলপেটে যন্ত্রণা, অত্যধিক দুর্বলতা— এর মধ্যে সবগুলিই যে একসঙ্গে দেখা দেয়, তা কিন্তু নয়। দুর্বলতা কিংবা পেশিতে ব্যথার মতো উপসর্গ অনেকেই এড়িয়ে যান।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হেপাটাইটিস থেকে বাঁচতে জল ফুটিয়ে খেতে হবে। বাসি খাবার গরম করে খাওয়ার অভ্যাসও অস্বাস্থ্যকর। রাস্তায় বিক্রি হওয়া কাটা ফল, নরম পানীয় বা লস্যি-শরবত খাওয়া চলবে না। দীর্ঘ ক্ষণ কেটে রাখা ফলও এড়িয়ে চললে ভাল। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতাও বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।