পাস্তা রান্না করা উচিত কতক্ষণ? ছবি: সংগৃহীত।
ইটালির খাবার পাস্তা এখন এ দেশের ঘরের খাবারই হয়ে উঠেছে প্রায়। দুধ, মাখন, চিজ়ে তৈরি পাস্তা শুধু ছোটরাই ভালবাসে বা খাওয়ার বায়না করে তা নয়, রেস্তরাঁতেও এখন রীতিমতো পাস্তার চাহিদা।
তবে প্রশ্ন হল, পাস্তা রান্নার সময় নিয়ে। সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে চর্চা। কারও ধারণা, পাস্তা রান্নার সময়সীমার সঙ্গে এর পুষ্টিগুণেরও সম্পর্ক রয়েছে। পাস্তা না কি দীর্ঘ ক্ষণ রান্না করলে স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল হতে পারে। কিন্তু আদতে কি তাই?
তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নন চেন্নাইয়ের পুষ্টিবিদ মিনু বালাজি। তাঁর বক্তব্য, পাস্তা অনুযায়ী সেটি রান্নার সময়সীমা ধার্য হয়। আবার একই পাস্তা পাহাড়ে গিয়ে রান্না করলে সময় লাগে বেশি। কারণ, পাহাড়ে চট করে জল গরম হয় না, আবহাওয়ার কারণে সেদ্ধ হতেও দেরি হয়।
পাস্তা বেশি ক্ষণ ধরে রান্না করলে এতে থাকা ফাইবার খুব সামান্য কমতে পারে বলছেন পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক। পাস্তা ফোটানোর সময় এতে থাকা ফাইবারের মাত্রায় সামান্য বদল হয়। কিন্তু দীর্ঘ ক্ষণ ধরে ফোটালে কমে ফাইবারের মাত্রা। জল ছাঁকার সময় এতে থাকা দ্রবণযোগ্য ফাইবার বেরিয়ে যায়। তবে পাস্তা ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিয়ে তার পর যদি গরম করে খাওয়া হয়, বেড়ে যায় রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চের মাত্রা। রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ তৈরি হলে এতে যেমন গ্লাইসেমিক্স ইনডেক্সের মাত্রা কমে যায়, তেমনই তা হজমের পক্ষেও সহায়ক হয়ে ওঠে।
মিনু বালাজির কথায়, পাস্তা দীর্ঘ ক্ষণ ধরে রান্নার সঙ্গে পুষ্টির তেমন সম্পর্ক নেই। তবে পাস্তা অনুযায়ী নির্ভর করে সেটি কত ক্ষণ ধরে রান্না করা হবে। যেমন পাস্তা যদি একটু পুরু হয়, সেদ্ধ হতে সময় লাগে বেশি। আবার পাস্তার আকৃতির উপর নির্ভর করে সময়ের বিষয়টি।
তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ময়দার পাস্তা স্বাস্থ্যকর নয়। এতে থাকে কার্বোহাইড্রেট। তাই যদি পাস্তার পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবতে হয় প্রথমেই মাখন, চিজ় দিয়ে তৈরি ঘন সাদা গ্রেভি যুক্ত হোয়াইট পাস্তা নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা যাবে না। কারণ, নিয়মিত ময়দা খেলে ওজন বাড়তে পারে, হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
সেদ্ধর সময়সীমা নিয়ে না ভেবে, কী করে তাতে বাড়তি পুষ্টিগুণ যুক্ত করা যায় পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ মাধবী সাভানি। ময়দার পাস্তার বদলে ডুরুম হুইট পাস্তা খাওয়া যেতে পারে। এটি দেখতে হালকা হলদেটে হয়। এটি গ্লুটেন ফ্রি। ফলে ময়দা খেলে যাঁদের হজম সংক্রান্ত সমস্যা হয়, তা এড়ানো যাবে। সঠিক পদ্ধতিতে পাস্তা রান্না করা জরুরি।
তবে তা সত্ত্বেও পুষ্টিবিদের পরামর্শ, মাসে এক বার পাস্তা খাওয়া যেতে পারে, নিয়মিত এমন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষত ওজন বৃদ্ধির সমস্যা থাকলে বা ডায়াবেটিস থাকলে তো বটেই।