Bhai phota 2025

ভাইফোঁটার সকালে এক থালা মিষ্টি খেয়ে গা গোলাচ্ছে? কমবে সহজ কিছু টোটকায়, সুগারও বাড়বে না

খালি পেটে মিষ্টি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। তাই মিষ্টি খান, তবে নিয়ম মেনে। রীতি বজায় রাখলে সকালে যদি মিষ্টি খেতেই হয়, তা হলে তার আগে ও পরে কিছু নিয়ম মানা জরুরি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ১২:২০
Share:

মিষ্টি খাওয়ার আগে ও পরে কী করলে সুগার বাড়বেই না? ছবি: এআই।

রকমারি মিষ্টি ছাড়া ভাইফোঁটা যেন অসম্পূর্ণ। রসগোল্লা-পান্তুয়া থেকে হরেক রকম সন্দেশ, ভাজা মিষ্টি, খাজা— সাজিয়ে ভাইকে পরিবেশন করার রীতি সাবেকি। এখন মিষ্টির থালায় নানা রকম কেক, প্যাটিস সাজিয়ে দেওয়ার চলও হয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতন ভাইদের জন্য এখন চিনি ছাড়া নানা রকম মিষ্টি, গুড় ও ড্রাই ফ্রুটসের মিষ্টিও সাজিয়ে দেওয়া হয়। তবে মিষ্টি খেলেই গা গোলায় অনেকের। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে একগাদা মিষ্টি খেয়ে নিলে তার পরেই গা গোলানো, বমি ভাব হতে পারে। অম্বলের সমস্যাও হতে পারে। খালি পেটে মিষ্টি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। তাই মিষ্টি খান, তবে নিয়ম মেনে। রীতি বজায় রাখলে সকালে যদি মিষ্টি খেতেই হয়, তা হলে তার আগে ও পরে কিছু নিয়ম মানা জরুরি।

Advertisement

মিষ্টি খাওয়ার আগে

দুর্গাপুজো, কালীপুজো উপলক্ষে দেদার খাওয়াদাওয়া হয়েছে। ফলে পুজো মিটতেই ডিহাইড্রেশন, পেটের গোলমাল দেখা দিয়েছে অনেকেরই। সে সব কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান। তাই মিষ্টি খেলেও তার আগে ও পরে কিছু নিয়ম মানুন। তা হলেই আর গা গোলানো ভাব থাকবে না বা রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।

Advertisement

পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, যে দিন প্রচুর খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা থাকবে, সে দিন সকাল থেকেই শরীর ডিটক্স করে রাখতে হবে। আর ডিটক্স পানীয় মানেই খুব দামি কিছু খেতে হবে, তা নয়। সবচেয়ে পরিচিত ডিটক্স পানীয় হল ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থাকলে অথবা আলসার থাকলে, এই পানীয় খাওয়া যাবে না। যাঁদের শরীরে বেশি পটাশিয়াম সহ্য হয় না, তাঁদের জন্যও এই পানীয় বারণ।

মিষ্টি খেয়েও রক্তে শর্করা বাড়বে না, মানতে হবে কিছু নিয়ম। ছবি: এআই।

রাতে ১ চা চামচ জিরে ১ গ্লাস জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই জলটি ছেঁকে পান করতে পারেন, অথবা ৫ মিনিটের জন্য ফুটিয়ে তার পর ছেঁকে ঈষদুষ্ণ অবস্থায় পান করুন।

২ চা চামচ মেথি দানা রাতে ১ গ্লাস জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে এই জলটি পান করুন। এতে সকাল থেকেই শরীর ডিটক্স হতে শুরু করবে।

মিষ্টি খাওয়ার পর

চটজলদি টোটকা

১) সকাল সকাল মিষ্টি খেয়ে গা গোলালে খানিকটা আদাকুচি খেয়ে নিন। এতে শরীরে অস্বস্তি, বমি ভাব কমে যাবে।

২) ছোট্ট কৌটোতে জোয়ান সব সময়ে সঙ্গে রাখুন। বমি পেলেই খানিকটা মুখে ফেলে দিন। দেখবেন, নিমেষে বমি ভাব দূর হয়ে শরীর ঠিক লাগছে। বদহজম হলেও কাজ দেবে জোয়ান।

৩) যদি দুপুরের খাওয়ার আগে বমি ভাব দেখা দেয়, তা হলে আগে কিছুটা শুকনো মুড়ির সঙ্গে শসা খেয়ে নিন। শসা খুব তাড়াতাড়ি গা গোলানো, বমি ভাব দূর করতে পারে। শরীর ঠান্ডাও রাখে।

৪) গা গোলানো কমাতে পারে আমলকি। আমলকি ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নুন মাখিয়ে শুকিয়ে নিন। সঙ্গে রাখলে উপকার পাবেন।

নিয়ম মানুন

রসের মিষ্টি যতটা সম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। থালা সাজানো মিষ্টি থেকে নরম পাকের সন্দেশ থাকলে তা বেছে নিন। রসের মিষ্টি বা ভাজা মিষ্টি খেতে মন চাইলে তা দুপুরের খাওয়ার পর খান। মিষ্টি সব সময়ে দু'টি মিলের মাঝে খেলে ভাল, খালি পেটে নয়। তবে রাতে খাওয়ার পরে মিষ্টি খাবেন না।

সকালে মিষ্টি, দুপুরে পাত পেড়ে ভূরিভোজ তো হল। এর পরে ভুলেও দুধ-চিনি দিয়ে চা বা কফিতে চুমুক দেবেন না। কালো কফিও কম খেলে ভাল। বদলে এমন কিছু পানীয় বানিয়ে নিন, যা অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরিয়ে দেবে খুব তাড়াতাড়ি। রক্তে শর্করা জমতেও দেবে না।

দুপুরে খাওয়ার পরে আইসক্রিম বা রসমালাই না খেয়ে, টক দই খেলে ভাল। দই-শসা দিয়ে রায়তা খেলেও তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যাবে।

মিষ্টি খাওয়ার আগে ও পরে নিয়ম মানুন। ছবি: এআই।

ভূরিভোজের পরে নরম পানীয়ে চুমুক দিতেই বেশি ভাল লাগে। তবে সেই লোভ সংবরণ করাই ভাল। সকালে মিষ্টি, দুপুরে মাছ-মাংস খাওয়ার পরে নরম পানীয় একেবারেই খাবেন না। সে জায়গায় এমন কিছু পানীয়ে চুমুক দিন, যা শরীরে জমা টক্সিন বার করে দেবে। ফলে যতটুকু ক্যালোরি বাড়িয়েছিলেন, তা ঝরে যাবে অনায়াসে।

কোন কোন পানীয় আগামী কয়েক দিন খাবেন—

১) পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, মশলার মধ্যে আদা, দারচিনি, গোটা হলুদ, লবঙ্গ ইত্যাদি ভিজিয়েও ডিটক্স পানীয় তৈরি করা যায়। এই পানীয়ে এত বেশি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। হজমশক্তিও উন্নত করে।

২) ভারী কিছু খাওয়ার পরে পেট ফাঁপা, পেট ফুলে যাওয়ার সমস্যা কমাবে। গ্যাস-অম্বলের ধাত যাঁদের বেশি, তাঁরা এই পানীয় খেতেই পারেন। দু’কাপ জলে এক চামচ জোয়ান ও এক চামচ গোটা জিরে দিয়ে কম আঁচে ফোটান। জল ফুটে গেলে গ্যাস বন্ধ করে কিছু ক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখুন। তার পর ছেঁকে এই জলটা খেতে হবে।

৩) গ্যাস, অম্বল, পেটফাঁপা কিংবা হজম সংক্রান্ত সমস্যা হলে এই পানীয় দারুণ কাজের। ব্লেন্ডারে একমুঠো ধনে এবং পুদিনা পাতা একসঙ্গে দিয়ে ভাল করে বেটে নিন। এ বার ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিয়ে খেয়ে নিন।

৪) এক কাপ পালংশাক, আধ কাপ ধনেপাতা, একটু পার্সলেপাতা, একটা আমলকি ভাল করে ধুয়ে মিক্সিতে পেস্ট করে নিন। তার পর এই মিশ্রণটি ভাল করে ছেঁকে রস বের করে তা একটু নুন এবং পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খান।

৫) এক বোতল জলে একটা গোটা আপেল কেটে টুকরো করে দিয়ে দিন, সঙ্গে ফেলে দিন ২-৩ টি দারচিনির স্টিক। যোগ করুন কয়েকটি পুদিনা পাতা। এ বার এটি অন্তত দেড়-দুই ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। তার পর সেটি পান করুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement