আচমকা হৃদ্রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাবে একটি ওষুধ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বুকে চিনচিনে ব্যথা। তার পরেই দরদর করে ঘাম। শরীর জুড়ে অস্বস্তি। দমবন্ধ হয়ে যেতে যেতে আচমকা হার্ট অ্যাটাক। এমন পরিস্থিতিতে রোগীকে বাঁচানোর সময়টুকুও পাওয়া যায় না অনেক সময়েই। হার্ট অ্যাটাক বা ব্রেন স্ট্রোক এমন ভাবেই হানা দেয় আচমকা ও লহমায় সব কিছু তছনছ করে চলে যায়। গভীর ঘুমের মধ্যেও নিঃশব্দে হানা দিতে পারে হার্ট অ্যাটাক। কাজেই এমন ঘাতক অসুখকে কব্জা করতে কী ধরনের প্রতিরোধক ওষুধ কাজে দেবে, তা নিয়ে গবেষণা চলছে দীর্ঘ সময় ধরেই। সম্প্রতি আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এমনই এক ওষুধকে অনুমোদন দিয়েছে। ওষুধটি আগে থেকে খেলে আচমকা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমবে বলেই দাবি করা হয়েছে।
ওষুধটির নাম রিবেলসাস। নতুন ওষুধ নয়। উচ্চ রক্তচাপ ও টাইপ ২ ডায়াবিটিসের চিকিৎসায় ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। তবে ওষুধটির ফর্মুলায় সামান্য বদল এনে সেটিকে হৃদ্রোগের চিকিৎসাতেও কাজে লাগানো যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ওষুধটি হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে রোগীকে খাওয়ানো যেতে পারে।
রিবেলসাস একধরনের সেমাগ্লুটাইড জাতীয় ওষুধ। অর্থাৎ, জিএলপি-১ রিসেপ্টর, যা শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কাও কমাবে। ওষুধটি মেদও ঝরাতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে।
চিকিৎসকেরা বলেন ৯৯ শতাংশ হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ চারটি— অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে অধিক শর্করা এবং ধূমপান। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে থেরোসক্লেরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে। এ ক্ষেত্রে ধমনীর দেওয়ালের মধ্যে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমতে থাকে, যাকে বলে ‘প্লাক’। এর ফলে ধমনী সঙ্কীর্ণ হয়ে রক্তপ্রবাহকে বাধা দিতে পারে। এই ব্লকেজ থেকেই স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে। আবার হার্টের ধমনীতে নিঃশব্দে রক্ত জমাট বাঁধছে কি না, তা বোঝে কার সাধ্য! বুকে ব্যথা নেই, রাতে শুয়ে ঘামও হয় না, অন্যান্য যা ভীতিকর লক্ষণের কথা বলা হয়, তা-ও নেই। এর পরেও ধরা পড়তে পারে হৃদ্রোগ। কারণটা হল রক্ত জমাট বেঁধে হৃৎস্পন্দন পুরোপুরি বিগড়ে যাওয়া। এই সব সমস্যার সমাধান করতে পারে এফডিএ অনুমোদিত ওষুধটি। দাবি করা হয়েছে, নির্দিষ্ট ডোজ়ে খাওয়ালে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রিত হবে, খারাপ কোলেস্টেরল কমবে, বিপাকক্রিয়ায় গোলমাল হবে না এবং অতিরিক্ত মেদ জমার কারণেও বিপদ হবে না। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে ওষুধটি খাওয়া ঠিক হবে না।