Kidney Disease

কিডনির রোগ ধরা পড়বে পাঁচ পরীক্ষায়, অসুখ হওয়ার আগেই করিয়ে রাখা প্রয়োজন, খরচ কত?

নিয়মিত সময়ান্তরে হার্টের পরীক্ষা, সুগার টেস্ট করালেও কিডনির কোনও রকম টেস্ট সাধারণত করান না অনেকেই। অন্তত যত দিন না সমস্যা শুরু হচ্ছে। অথচ কিডনির অসুখই এখন বেড়ে গিয়ে ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে। তাই বিপদ থেকে বাঁচতে কী কী পরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি, তা জেনে নিন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:১৪
Share:

কিডনির রোগ থেকে বাঁচতে কী কী টেস্ট করাবেন, খরচ কত? ফাইল চিত্র।

কিডনির রোগ নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। কিডনির ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন কমবয়সিরাই। কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা প্রায় ঘরে ঘরে। তার উপরে কিডনিতে সংক্রমণ, পলিসিস্টিক কিডনির অসুখেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সমীক্ষা জানাচ্ছে, ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল অবধি কালপর্বে দেখা গিয়েছে, দেশে কিডনির রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১১.১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৬.৩৮ শতাংশ হয়েছে। আক্রান্তদের তালিকায় শিশুরাও রয়েছে। কিডনির স্বাস্থ্য ভাল আছে কি না, তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই বেশির ভাগেরই। রক্তের নানা পরীক্ষা, হার্টের পরীক্ষা এমনকি ইদানীং ক্যানসার স্ক্রিনিং টেস্ট করালেও কিডনি সম্পর্কিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা কমই করানো হয়। কিডনির জটিল অসুখে যদি না পড়তে হয়, তা হলে আগে থেকে অন্তত পাঁচটি পরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি।

Advertisement

কিডনির কোন কোন পরীক্ষা করাবেন?

সিরাম ক্রিয়েটিনিন টেস্ট

Advertisement

এই পরীক্ষায় রক্ত বা প্রস্রাবের নমুনা নিয়ে তাতে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। ক্রিয়েটিনিন হল একটি বর্জ্য পদার্থ, যা কিডনি ছেঁকে প্রস্রাবের সঙ্গে বার করে দেয়। এই বর্জ্যের পরিমাণ যদি বেশি হয়, তা হলে বুঝতে হবে, কিডনির অবস্থা ভাল নেই। রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনির কার্যকারিতা কমতে থাকে। এক জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক পরিমাণ ০.৭ থেকে ১.৩ মিলিগ্রাম এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ০.৬ থেকে ১.১ মিলিগ্রাম। এর বেশি মানেই তা কিডনির ক্রনিক রোগের লক্ষণ। এই পরীক্ষার খরচ ২০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।

সিস্ট্যানিন সি

সিস্ট্যানিন সি হল হল একটি প্রোটিন, যা দেহকোষ থেকে তৈরি হয়। এর স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে গড়ে ০.৬ থেকে ১.১ মিলিগ্রাম হয়। তবে বয়স অনুযায়ী পুরুষ ও মহিলার ক্ষেত্রে এই পরিমাপটি কিছুটা আলাদা আসে। যদি এই প্রোটিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেড়ে যায়, তা হলে বুঝতে হবে, তা কিডনি ফেলিয়োরের লক্ষণ। অনেকেই পেশি তৈরি করতে নানা রকম প্রোটিন পাউডার ক্রিয়েটিনিন সাপ্লিমেন্ট নেন অথবা স্টেরয়েড খান, সে ক্ষেত্রে এর মাপটি ওঠানামা করে। অত্যধিক সাপ্লিমেন্ট নিলেও কিডনির ক্ষতি হতে পারে। সাধারণত ল্যাবরেটরি ভেদে খরচ ১৩০০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে।

ইউরিন ডিপস্টিক টেস্ট

ডিপস্টিক ইউরিন টেস্ট হল প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষা করার একটি সহজ পদ্ধতি, যেখানে একটি বিশেষ রাসায়নিকে মাখানো স্ট্রিপ প্রস্রাবের নমুনায় রেখে দেওয়া হয়। স্ট্রিপের রং বদলায় ও তা প্রস্রাবে উপস্থিত বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা নির্দেশ করে। রঙের পরিবর্তন যত তীব্র হবে, প্রস্রাবে সেই সব পদার্থের পরিমাণ তত বেশি হতে পারে। যদি স্ট্রিপের রং বদল দেখে বোঝা যায় প্রস্রাবের নমুনায় রক্ত রয়েছে, তা হলে কিডনি সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে, অ্যালবুমিন প্রোটিন বেশি হলে কিডনির ক্রনিক রোগের লক্ষণ, বিলিরুবিন থাকলে তা লিভারের রোগের লক্ষণ, কিটোন থাকলে ডায়াবিটিস ও কিডনির রোগের লক্ষণ। রুটিন পরীক্ষায় ২০০ থেকে ৪০০ টাকার মতো খরচ পড়ে।

ব্লাড ইউরিয়া নাইট্রোজেন

এটিও রক্তের একটি পরীক্ষা। রক্তে ইউরিয়া নাইট্রোজেনের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। ইউরিয়া নাইট্রোজেন হল প্রোটিনের বিপাকের ফলে তৈরি হওয়া একটি বর্জ্য পদার্থ। সুস্থ কিডনি এটি রক্ত থেকে অপসারণ করে এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বার করে দেয়। এর মাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তা হলে কিডনির রোগের লক্ষণ ইঙ্গিত করে। এই পরীক্ষাতেও ২০০ তেকে ৪০০ টাকার মতোই খরচ পড়ে।

কিডনি আল্ট্রাসনোগ্রাফি

পরীক্ষাটিকে রেনাল আলট্রাসাউন্ড বলা হয়। শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে কিডনির অবস্থা কেমন, তা দেখা হয়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির আকার, আকৃতি এবং অবস্থান দেখা যায়। পরীক্ষাটি করলে বোঝা যায় কিডনিতে পাথর, সিস্ট বা টিউমার আছে কি না। খরচ ল্যাবরেটরি ভেদে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা অবধি হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement