চর্মরোগ ছড়াচ্ছে শিশু ও কমবয়সিদের মধ্যে, কী ভাবে সাবধান হবেন? ছবি: ফ্রিপিক
হাত-পায়ে ঘা, ছত্রাকের সংক্রমণ বা মুখের আলসারের বাড়বাড়ন্ত দেশের নানা জায়গায়। বেশি ভুগছে শিশু ও কমবয়সিরাই। দাদ, অ্যাথলেট’স ফুট, স্ক্যাবিসের মতো চর্মরোগ ছড়াচ্ছে। বৃষ্টি ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় রোগ আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা। কী থেকে ঘটছে সংক্রমণ?
দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায় ‘হ্যান্ড-ফুট-মাউথ ডিজ়িজ়’ (এইচএফএমডি) সাঙ্ঘাতিক ভাবে ছড়িয়েছে। সেই সঙ্গেই বেড়েছে ছত্রাক ও ব্যাক্টেরিয়াঘটিত নানা সংক্রমণও। ছোটদের তাই সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, শুরুতে ভাইরাল জ্বর হচ্ছে। তার পর হাত ও পায়ে ঘা, ফোস্কার মতো দেখা দিচ্ছে। হাতের আঙুল, পায়ের আঙুলের ফাঁকের চামড়ায় ক্ষত তৈরি হচ্ছে, চামড়া আঁশের মতো শুকিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা অনুমান করছেন, ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ও কয়েক ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণেই এমন রোগ হচ্ছে।
অ্যাথলেট’স ফুট ও দাদের সংক্রমণ বেশি হচ্ছে ছোটদের। এই দুই চর্মরোগের জন্য দায়ী টিনিয়া কর্পোরিস নামে এক ধরনের ছত্রাক। ত্বকের যে অঞ্চল অধিকাংশ সময়ে ঘেমে থাকে, সেই অঞ্চলে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি। কাজেই বাহুমূল, ঘাড়, কুঁচকি ও যৌনাঙ্গে সংক্রমণ বেশি ঘটে। শরীরের বিভিন্ন অংশে জমে থাকা ঘাম এবং ধুলোবালিও এর কারণ হতে পারে।
ছত্রাকের সংক্রমণ হয় পায়েও। ভিজে মোজা বা জুতো দীর্ঘ সময় পরে থাকলে, অথবা পায়ে ধুলোময়লা পরিষ্কার না করলে সেখানে র্যাশ বেরোতে দেখা যায়। খালি পায়ে রাস্তায় হাঁটলে, অথবা অন্যের জুতো, মোজা বা তোয়ালে ব্যবহার করলে, তা থেকেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। পায়ের পাতা ফুলে যায়, তাতে লালচে র্যাশ হয়। পায়ের চামড়া শুষ্ক হয়ে গিয়ে মৃত কোষ উঠতে শুরু করে দেয়। একে বলা হয় অ্যাথলেট’স ফুট। ছোটদের মধ্যে এই ধরনের সংক্রমণ বেশি হচ্ছে।
বাবা-মায়েরা কী ভাবে সতর্ক থাকবেন?
১) বাইরে থেকে ফেরার পরে পায়ের পাতা ভাল করে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
২) ভেজা পায়ে দীর্ঘ সময় থাকা চলবে না, শিশুর পা সব সময়েই শুকনো করে মুছিয়ে দিন।
৩) মোজা নিয়মিত কাচতে হবে।
৪) র্যাশের জায়গায় টি ট্রি অয়েল নারকেল তেলে মিশিয়ে মাখাতে পারেন। অ্যাপল সাইডার ভিনিগারেও সমস্যার সমাধান হতে পারে।
৫) বর্ষার সময়ে বিছানার চাদর, বালিশের ঢাকা নিয়মিত পাল্টাতে হবে। বাড়িতে কারও দাদ বা ত্বকের সংক্রমণ হলে, শিশুকে কাছে যেতে দেওয়া চলবে না।
৬) ছোটদের জামাকাপড়, ব্যবহারের জিনিসপত্র, বালিশের কভার, বিছানার চাদর নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।