নিরামিষ খাবার খেলে কি প্রোটিনের ঘাটতি হতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।
শরীর সুস্থ থাকার চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে ব্যালান্স ডায়েটে, এমনটাই বলেন পুষ্টিবিদেরা। আর তার মধ্যে অন্যতম জরুরি উপাদানটি হল প্রোটিন। ওজন কমাতে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রোটিনের ভূমিকা অনবদ্য।
মানবদেহের প্রতিটি কোষেই থাকে প্রোটিন। কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার পুনরুজ্জীবনের জন্য প্রোটিন দরকার হয়। পেশি গঠন, শরীর মজবুত রাখতেও প্রোটিন অপরিহার্য। নানা রকম হরমোনের আলাদা আলাদা কাজ থাকে শরীরে। হরমোনের সক্রিয়তা বজায় রাখার জন্যও দরকার পড়ে প্রোটিনেরই। ওজম কমানো থেকে শরীর সুস্থ রাখতে গেলে প্রোটিন চাই-ই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ভেঙে পড়তে পারে যথাযথ প্রোটিনের অভাবে।
কোন খাবারে প্রোটিন বেশি মেলে, প্রশ্ন উঠলে প্রথমেই আসে প্রাণিজ উৎসের কথা। প্রোটিনের চাহিদা পূরণে মাছ, মুরগির মাংস, ডিম— খুব ভাল উপায় বলে মনে করেন পুষ্টিবিদেরা। কিন্তু নিরামিষাভোজীরা তা হলে কী খাবেন? কী ভাবে তাঁদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে?
পুষ্টিবিদ কণিকা মলহোত্র জানাচ্ছেন, নিরামিষ খেলে প্রোটিনের ঘাটতি হয়, এই ধারণাটাই ভুল। বরং সঠিক ডায়েটে নিরামিষ খাবারেও যথেষ্ট প্রোটিন পাওয়া যায়। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের রকমারি উৎস রয়েছে, তা থেকেই শরীর প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড পেতে পারে। সেই সূত্রগুলি জানানোর পাশাপাশি পুষ্টিবিদের সতর্কবাণী, প্রোটিন শরীরের জন্য উপকারী হলেও তার মাত্রা থাকা প্রয়োজন। সাধারণত কোনও ব্যক্তির যত ওজন, কেজি প্রতি তাঁর ০.৮ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া জরুরি। তবে প্রোটিনের চাহিদা নির্ভর করে কোনও ব্যক্তি কতটা কায়িক পরিশ্রম করেন তার উপর। যিনি দিনভর খাটাখাটনি করছেন তাঁর জন্য, কেজি প্রতি ১ গ্রাম প্রোটিন জাতীয় খাবারের প্রয়োজন হয়।
প্রোটিনের উদ্ভিজ্জ উৎস
• ডাল, কাবলি ছোলা, কড়াইশুঁটি, বিন্স হল প্রোটিনের অন্যতম উৎস। দৈনন্দিন ডায়েটে এই খাবারগুলি থাকলে শরীর প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড পাবে।
• সয়াবিন প্রোটিনের উৎস। সয়াবিনের দুধ থেকে তৈরি টোফু, ফারমেন্টেড সয়াবিন থেকে তৈরি টেম্পেও খাদ্যতালিকায় রাখা যায়।
• দুগ্ধজাত পণ্য থেকেও প্রোটিন মেলে। টকদই, ইয়োগার্ট, দুধ, চিজ়-এ ভাল মানের প্রোটিন পাওয়া যায়।
• রকমারি বাদাম, যেমন চিনে বাদাম, আখরোট, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, কুমড়োর বীজ, চিয়া বীজ,তিসির বীজও প্রোটিনের অন্যতম উৎস। স্ন্যাক্স হিসাবে এগুলি খাওয়া যায়।
• কিনোয়া, অমরনাথ-সহ একাধিক দানাশস্য থেকেও শরীর প্রোটিন পেতে পারে। পূরণ হতে পারে অ্যামাইনো অ্যাসিডের চাহিদা।