Healthy Mother

সন্তানকে বড় করে তুলতে মায়েদের সুস্থ থাকা কতটা জরুরি? কী ভাবে নিজের যত্ন নেবেন মেয়েরা?

শিশুর দায়িত্ব সমান ভাবে বাবার হলেও সন্তানকে বুকে জড়িয়ে আগলে রাখেন মায়েরাই। তাই সন্তানের বড় হওয়ার পথে মাকে সুস্থ থাকতেই হবে। কিন্তু সব দায়িত্ব সামলে কী ভাবে তা সম্ভব?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৩ ১৯:১৫
Share:

সন্তানকে বুকে জড়িয়ে আগলে রাখেন মায়েরাই। প্রতীকী ছবি।

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নিজের শরীরের প্রতি মায়েরা যতটা যত্নশীল থাকেন, সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখানোর পর অনেক ক্ষেত্রেই সেই যত্ন দায়িত্ব আর ব্যস্ততার আড়ালে চাপা পড়ে যায়। মা হওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই জীবনের নতুন একটি অধ্যায় শুরু হয়। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। একরত্তি সন্তানের দেখভালে দিনের অনেকটা সময় কেটে যায়। ফলে নিজের দিকে তাকানোর সুযোগ মায়েরা কমই পান। অথচ সন্তানের সুস্থ ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য মায়ের ভাল থাকা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, শিশুর দায়িত্ব সমান ভাবে বাবার হলেও সন্তানকে বুকে জড়িয়ে আগলে রাখেন মায়েরাই। খাওয়া থেকে শুরু করে ঘুম— সন্তানও যেন মায়ের ছত্রচ্ছায়ায় থাকতেই বেশি পছন্দ করে।

Advertisement

সদ্যোজাত বলে নয়, কৈশোরে পা দেওয়া সন্তানকে বড় করে তুলতেও শারীরিক ভাবে মায়ের সুস্থ থাকাটা প্রয়োজন। এখন বেশির ভাগ মায়েরাই বাড়ি এবং অফিস দুই-ই একা হাতে সামলান। সেই সঙ্গে সন্তানকে মনের মতো করে বড় করে তোলার দায়িত্ব তো আছেই। অফিসে বেরোনোর আগে একপ্রস্ত দায়িত্ব সামলে যেতে হয়। অফিসে গিয়েও ফোনে নির্দেশ দিতে থাকে। অফিস সামলে বাড়ি ফিরে কোমরে আঁচলে গুঁজে ফের নেমে পড়তে হয় যুদ্ধে। অনেকেই এই পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত। এমনই হয়ে থাকে প্রতি দিন।

সন্তানের সুস্থ ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য মায়ের ভাল থাকা অত্যন্ত জরুরি। ছবি: প্রতীকী।

মায়েদের ব্যস্ততা আর দায়িত্ব শেষ হওয়ার নয়। সন্তান বড় হয়ে গেলেও মায়েদের ভূমিকায় কোনও বদল আসে না। সেই কারণে মায়েদের শরীরের অযত্ন একেবারেই কাম্য নয়। ব্যস্ততার মাঝেও নিজের সুস্থ থাকার পথটি খুঁজে নিতে হবে। পাশাপাশি, এটাও ঠিক যে, কর্মরতা মায়েদের সব কিছু সামলে নিজের যত্ন নেওয়া সহজ নয়। সুযোগও সব সময়‌ে যে পাওয়া যায়, তা নয়। অনেকেই আবার বুঝতে পারেন না হাজার দায়িত্বের ভিড়ে কী ভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব? এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক সাত্যকি হালদার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘প্রথমে এটা বুঝতে হবে যে, মা ফিট না থাকলে সন্তানকে সুস্থ রাখতে পারবেন না। মায়ের সুস্থ থাকা অবশ্যই জরুরি। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কিংবা সন্তান জন্ম দেওয়ার কিছু দিন শুধু যত্নে থাকলে চলবে না। নিজের খেয়াল রাখতে হবে বারো মাস। যে মায়েরা কর্মরতা, তাঁদের উচিত একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা। সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া। অফিসে কাজের চাপ থাকলেও ঘড়ি ধরে খাওয়াদাওয়া করা জরুরি। মরসুমি ফল, শাকসব্জি বেশি করে খেতে হবে। বাইরের চেয়ে বাড়ির খাবার বেশি করে খেতে হবে। পরিমাণ মতো জল খেতে হবে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম। তবে সুস্থ থাকা সম্ভব। শুধু শরীর সুস্থ থাকলেই তো হল না, মনেরও যত্ন নিতে হবে। মা শারীরিক এবং মানসিক ভাবে কতটা ফিট, তার উপর শিশুর বেড়ে ওঠা নির্ভর করে।’’

Advertisement

মায়েরা সবচেয়ে অনিয়ম করেন খাওয়াদাওয়ায়। অথচ সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া উচিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার উপরে। অথচ সুস্থ থাকতে গেলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং সঠিক পরিমাণে খাওয়াদাওয়া করতেই হবে। একই কথা বললেন যাপন সহায়ক এবং পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক। তাঁর কথায়, ‘‘সারা দিনে চারটি মিল সময় মতো খেতে হবে। সকাল, দুপুর, বিকেল এবং রাত্রি, এই চার বেলা পরিমাণে অল্প হলেও সময়ে খাওয়া জরুরি। বাইরের খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভাল। সারা দিনের ব্যস্ততার ফাঁকেও অন্তত নিজের জন্য সময় বার করা জরুরি। ছাদে হাঁটতে যেতে পারেন। কিছু ভাবতে পারেন। কিন্তু নিজের সঙ্গে সময় কাটানো জরুরি। সেই সঙ্গে ঘুম খুব জরুরি। দিনে ৮ ঘণ্টা ঘুমোতে পারলে ভাল। তবে শিশুর পরীক্ষা কিংবা অন্য কারণে অনেক সময়ে ঠিক করে ঘুম হয় না। সে ক্ষেত্রে ফাঁকা সময়ে কিছু ক্ষণ ঘুমিয়ে নেওয়া যেতে পারে। আর মাঝেমাঝে শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। যেটা অনেকেই করেন না। আমি বলব সুস্থ থাকতে চাইলে শরীরে মেডিক্যাল চেকআপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন