CPR technique

রাতবিরেতে বাড়ির কারও হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক, সিপিআর দিয়ে বাঁচাতে পারেন, ধাপে ধাপে শিখুন পদ্ধতি

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়া ১০ জনের মধ্যে ন’জনই মারা যান। কিন্তু সময়মতো সিপিআর দেওয়া গেলে রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সিপিআর কী ভাবে দিলে রোগীর প্রাণ বাঁচবে, তা জেনে রাখা জরুরি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫ ১৩:০৫
Share:

সিপিআর কী ভাবে দিলে প্রাণ বাঁচবে, শিখে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।

হার্ট অ্যাটাক কথাটা শুনলেই মনে জন্ম নেয় আতঙ্ক। হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে ভয় কাটিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। তবে রাতবিরেতে বাড়ির কারও আচমকা হার্ট অ্যাটাক হলে আতঙ্ক তো হবেই। কাছেপিঠে হাসপাতাল না থাকলে অথবা অ্যাম্বুল্যান্স আসতে দেরি হলে কী করতে হবে, তা জেনে রাখা খুবই জরুরি। চিকিৎসকেরা বলেন, হঠাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে সময়মতো সিপিআর বা ‘কার্ডিয়াক পালমোনারি রিসাসিটেশন’ দেওয়া গেলে তা জীবনদায়ী হয়ে উঠতে পারে। সেন্টার্স ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) রিপোর্ট অনুযায়ী হাসপাতালের বাইরে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়া ১০ জনের মধ্যে ন’জনই মারা যান। কিন্তু সময়মতো সিপিআর দেওয়া গেলে রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

Advertisement

সিপিআর কী ভাবে দিতে হবে তার নিয়ম আছে। এই বিষয়ে হার্টের চিকিৎসক দিলীপ কুমার জানিয়েছেন, হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ আগে বুঝতে হবে। যদি দেখেন শ্বাস নিয়ে খুব কষ্ট হচ্ছে, হঠাৎই দরদর করে ঘামছেন রোগী, বুকের কষ্ট ক্রমশ হাত, কাঁধ ও চোয়ালে ছড়িয়ে পড়ছে অথবা জ্ঞান হারিয়েছেন, তা হলে দেরি না করে আগে অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ দিন। তার পর রোগীর পাল্‌স দেখে সিপিআর দিতে পারলে ভাল হয়। সিপিআরের প্রশিক্ষণ থাকলে ভাল, না হলে কী ভাবে দিতে হবে জেনে নিন।

সিপিআর দেওয়ার পদ্ধতি

Advertisement

১) প্রথমে কোনও সমতল জায়গায় রোগীকে শোয়াতে হবে।

২) এর পরে পরীক্ষা করতে হবে ক্যারোটিড পাল্‌স। গলার মাঝে যে শক্ত হাড় বা ‘অ্যাডাম্‌স অ্যাপেল’ রয়েছে সেই অংশে এই পাল্‌স থাকে। সেখানে দু’টি আঙুল রেখে অন্যটি নীচের দিকে নামাতে হবে। আঙুল যে জায়গায় পৌঁছোবে, সেখানেই থাকে ক্যারোটিড পাল্‌স। সেখানে কোনও স্পন্দন না পেলে সিপিআর দেওয়া শুরু করতে হবে।

৩) রোগীকে চিত করে শুইয়ে তার বুকের ঠিক মাঝখানে বিশেষ স্পন্দনে চাপ দিতে হবে। এমন চাপ দিতে হবে যাতে সেই চাপ হৃদ্‌যন্ত্রকে আবার সচল হতে পারে। একে বলা হয় ‘চেস্ট কমপ্রেশন’।

৪) ডানহাতি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডান হাতের তালুর নীচের অংশটি রাখতে হবে বুকে, সেই হাতের উপরে রাখতে হবে অন্য হাত। কনুই ভাঁজ না করে, হাত সোজা রেখে রোগীর বুকে চাপ দিতে হবে।

৫) বুকে চাপ এমন ভাবে দিতে হবে যাতে ৫-৬ সেন্টিমিটার নিচু হয় বুকের খাঁচা। আবার হাত ছাড়তে হবে, যাতে খাঁচা আগের অবস্থায় ফিরে আসে।

৬) বুকে চাপ দেওয়ার পদ্ধতি এতটাই দ্রুত গতিতে করতে হবে, যাতে এক মিনিটে ১০০-১২০ বার একই পদ্ধতিতে পাম্প করা যায়। টানা ২-৫ মিনিট পাম্প করে যেতে হবে।

৭) তাতেও যদি রোগীর হৃৎস্পন্দন না ফেরে, তাহলে মোট ২০ মিনিট ধরে এই সিপিআর দেওয়া যেতে পারে।

৮) যদি ছোটদের সিপিআর দিতে হয়, তা হলে বুকে অত চাপ দেওয়া যাবে না। বয়স ৮ বছরের কম হলে, সিপিআর মোট ৩০ বার দিতে পারলে ভাল হয়। তাতেও স্পন্দন না ফিরলে এক হাতে শিশুর নাক চেপে অন্য হাতে থুতনি উপরে তুলে ধরে মুখে মুখ লাগিয়ে জোরে জোরে হাওয়া দিতে হবে। এতে অক্সিজেন ঠেলে ফুসফুসে ঢুকবে। সঙ্কটজনক মুহূর্তে এই ধরনের সিপিআর দীর্ঘ সময় রোগীর শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ বজায় রাখতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement