ক্যানসার রোগীদের হয়রানি কমাতে নতুন যন্ত্র এল। ছবি: ফ্রিপিক।
শরীরের কোথায় টিউমার হয়েছে,তা ধরা পড়বে। একই সঙ্গে সেই টিউমারকে নষ্ট করতে রেডিয়োথেরাপিও শুরু হয়ে যাবে। তার জন্য আলাদা জায়গায় যাওয়ার দরকার নেই। দুই কাজ একই সঙ্গে করবে একটি যন্ত্র। শুনতে অবাক লাগলেও এমন যন্ত্র সত্যিই তৈরি হয়েছে এ দেশে। এমআরআই (ম্যাগনেটিক রেজ়োন্যান্স ইমেজ়িং) স্ক্যানারের সঙ্গে রেডিয়োথেরাপি মেশিনকে জুড়ে দিয়েছেন গবেষকেরা।
গাজ়িয়াবাদের যশোদা মেডিসিটিতে যন্ত্রটি বসানো হয়েছে। এর নাম ‘ইলেক্টা ইউনিটি এমআর লাইন্যাক’। এমন এক মেশিন, যাতে রিয়্যাল-টাইম এমআরআই স্ক্যানারও রয়েছে আবার রেডিয়েশন মেশিনও রয়েছে। অর্থাৎ এমআরআই করে টিউমার ধরা পড়লে একই সঙ্গে রেডিয়েশন থেরাপি শুরু করে দেওয়া যাবে। তার জন্য রোগীকে নানা জায়গায় দৌড়োদৌড়ি করতে হবে না। এতে হয়রানি কমবে।
ষন্ত্রটির আরও একটি বিশেষত্ব রয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, দেশে প্রথম এমন একটি যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে, যাতে ‘কম্প্রিহেনসিভ মোশন ম্যানেজমেন্ট’ (সিএমএম) রয়েছে। অর্থাৎ, রোগী যতই নড়াচড়া করুন না কেন, স্ক্যানার তার কাজ ঠিকমতোই করবে। রেডিয়েশনও সঠিক দিশায় গিয়ে ক্যানসার কোষকে নষ্ট করবে। যন্ত্রে শোয়ার পরে রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস, নড়াচড়া— সম কিছুরই ডেটা রাখা হবে। রোগীর শ্বাসের হার কত, তা-ও দেখবে যন্ত্রটি। এমআরআই স্ক্যানারে রোগীর শরীরের অভ্যন্তরের স্পষ্ট ছবি দেখতে পাবেন চিকিৎসকেরা। শরীরের কোথায় টিউমার তৈরি হয়েছে, কোন জায়গায় অনিয়মিত কোষের বিভাজন হচ্ছে, তা নিখুঁত ভাবে চিহ্নিত করবে ওই স্ক্যানার।
এই যন্তরের সুবিধা আরও রয়েছে। টিউমার ধরা পড়ার পড়ে যদি চিকিৎসকেরা বোঝেন যে, রেডিয়োথেরাপি করাতে হবে, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে তা শুরু করে দেওয়া হবে। গতানুগতিক রেডিয়েশনের চেয়ে তা কম যন্ত্রণাদায়ক হবে বলেও দাবি করা হয়েছে। সুস্থ কোষগুলির ক্ষতি না করে একেবারে ক্যানসার কোষগুলিকেই নিশানা করা হবে। রেডিয়োথেরাপির সময়ে রোগী যদি নড়াচড়া করেন, তা হলেও ক্ষতি নেই। রেডিয়েশন সঠিক জায়গাতেই গিয়ে পৌঁছবে। এই যন্ত্রে চিকিৎসার খরচ কত হবে, তা এখনও জানা যায়নি। তবে গবেষকেরা জানিয়েছেন, খরচ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।